রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নতুন ভোটাররা পাল্টাতে পারে হিসাব-নিকাশ

রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া)

পীরগাছা (রংপুর) থেকে সরকার রবিউল আলম বিপ্লব | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) সংসদীয় আসনে এবার নতুন ভোটার বেড়েছে ৮৫ হাজার ৫৮৮ জন। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটাররা জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ছিল ১০ হাজার ও ১৫ হাজার। নতুন ভোটারের মধ্যে ৯০ ভাগ তরুণ-তরুণী। আর যারা এর আগে ভোটার হতে পারেননি বা পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার বাইরে ছিলেন, তাদের ভোট যোগ হয়েছে ১০ ভাগ।

নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে মোট ভোটার চার লাখ ১২ হাজার ৯৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ১১ হাজার ৭০৮ জন ও মহিলা ভোটার দুই লাখ ১১ হাজার ২৫১ জন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল তিন লাখ ৬৯ হাজার ৮৯ জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৭০ জন। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মোট ভোটার ছিল তিন লাখ ২৭ হাজার ৩৭১ জন। ২০০৮ সালের পরে এই আসনে নতুন ভোটার বেড়েছে ৮৫ হাজার ৫৮৮ জন।

বিগত পাঁচটি নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক কম ছিল। এর মধ্যে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী ১৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। নিকটতম ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আবার ২০০১ সালে ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হন। নিকটতম ছিলেন বিএনপির প্রার্থী।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী টিপু মুন্সি এক লাখ ১৩ হাজার ৮২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। পাঁচ হাজার ৯৮৬ ভোট পেয়ে তার নিকটতম ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী করিম উদ্দিন ভরসা। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী টিপু মুন্সি এক লাখ ১৮ হাজার ৮০৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী জাতীয় পার্টির করিম উদ্দিন ভরসা পেয়েছিলেন এক লাখ তিন হাজার ৬৪৩ ভোট। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির করিম উদ্দিন ভরসা ৯৩ হাজার ৬৩১ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী তার বড় ভাই ও বিএনপির প্রার্থী রহিম উদ্দিন ভরসা পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৮২৫ ভোট। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির করিম উদ্দিন ভরসা লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৮৪ হাজার ৩৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নিকটতম আ.লীগের প্রার্থী মহসিন আলী বেঙ্গল নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৪০ হাজার ৭৬ ভোট। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৬ হাজার ২৫৩ ভোট পেয়ে জাতীয় পার্টির শাহ আলম নির্বাচিত হয়েছিলেন। নিকটতম আ.লীগের প্রার্থী শাহ আব্দুর রাজ্জাক ৩৯ হাজার ৩২৫ ভোট পেয়েছিলেন।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, রংপুর-৪ আসনে জয়-পরাজয়ের অন্যতম ভ‚মিকা রাখবেন নতুন ভোটাররা। তারাই ভোটের ফলে বড় নিয়ামক হিসেবে দেখা দিতে পারে। অন্য দিকে, নতুন ভোটাররা বলছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণদের সুযোগ দান ও সার্বিক উন্নয়নের দিক বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেবেন তারা।
উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের নতুন ভোটার কলেজছাত্র শাহানত হোসেন বলেন, এলাকার সার্বিক উন্নয়নে যিনি অগ্রণী ভ‚মিকা রাখতে পারবেন, তাকেই বেছে নেবে নতুন ভোটাররা।

পীরগাছা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, তরুণদের ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও স্থানীয় স্কুল-কলেজ সরকারিকরণসহ এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তাদের নিকট এসব চিত্র তুলে ধরা হবে। সেই সাথে আ.লীগের প্রার্থী টিপু মুন্সি একজন সৎ ব্যক্তি হিসেবে তরুণদের কাছে পরিচিত। তাই তিনি তরুণদের ভোট টানতে সক্ষম হবেন।
অন্য দিকে, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ডালেজ বলেন, বর্তমান সরকারের জুলুম ও দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন