শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

‘সঙ্ঘাতহীন ভোট কেন্দ্রের প্রত্যাশা’

মাগুরা-১ (সদর-শ্রীপুর) আসন

মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

নির্বাচন কড়া নাড়ছে ভোটারদের দরজায়। প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু হলেও ভোটারদের মধ্যে আমেজ বা উৎসব এখনো দেখা যাচ্ছে না। তবে চায়ের দোকানে চলছে জমজমাট আলোচনা। কোন প্রার্থীকে ভোট দিলে মানুষের জন্য কাজ করতে পারবে তার চুল চেরা বিশ্লেষণ চলছে। তবে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, ভোটাররা কি শেষ পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন, প্রয়োগ করতে পারবেন তাদের ভোট? মাগুরা জেলায় দুটি সংসদীয় আসন। মাগুরা সদর উপজেলার ৯টি এবং শ্রীপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন নিয়ে মাগুরা-১ আসন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৪৯ হাজার ৫৭৯। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৮ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭৫ হাজার ৬০১। মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৪টি। 

এ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন অ্যাড. সাইফুজ্জামান শিখর। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন খান, জাতীয় পার্টির মাগুরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হাসান সিরাজ সুজা লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মাওলানা মো. নাজিরুল ইসলাম, জাসদের (রব) এম এ আওয়াল তারা প্রতীক, এনপিপির কাজী তৌহিদুল হক আম প্রতীক, বিএনএফের কে এম মুতাসিম বিল্লাহ টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে মাগুরা-১ আসনে নৌকা এবং ধানের শীষের প্রচারনা চলছে। বিএনপিধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মনোয়ার হোসেন খান একটি মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। ফলে তিনি জেলে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তার অনুসারীরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। প্রার্থীরা নিজের পক্ষে ভোট নিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘ দিন ভোট দিতে পারেনি। এবার তাদের ভোট দেয়ার সুযোগ হলে ভোট দেবেন- তাদের ইচ্ছামতো এমন মন-মানুষিকতায় ভোট দেয়ার জন্য ভোটাররা উদগ্রিব হয়ে রয়েছেন।
পথ চলতে শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের বাস ড্রাইভার খান বলেন, ভোট প্রয়োগের পরিবেশ থাকলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভোট প্রয়োগ করব। মাগুরা বারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনজীবী বলেন, নির্বাচন হবে কি-না এখনো তিনি সন্দিহান। গত কয়েক বারের নির্বাচন মানুষকে হতাশ করেছে। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা, উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসন চান ভোটাররা। এ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা সরকার গঠন করবেন তাদের কাছে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকরণসহ কার্যকর সংসদ এবং জনগনের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনই সবার কাম্য। কলেজছাত্রী পারভীন বলেন, ভোট উৎসব শুরু হয়ে গেছে মাগুরার সর্বস্থরের মানুষ এই উৎসবের অংশীদার। আমরা তরুণ ভোটার আমার ভোট আমি দেবো যাকে, খুশি তাকে দেবো সে পরিবেশ চাই। গতবার ভোট দিতে পারিনি এবার সুযোগ পেলে কোনো অত্যাচারী, জুলুমবাজ, ক্ষমতালোভীকে নয়, শান্তিপ্রিয় জনদরদী প্রার্থীকে ভোট দেবো। কলেজছাত্রীর কথার সাথে একমত পোষণ করে মাগুরা পুরাতন বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, ভোটকেন্দ্রে যদি যাওয়ার পরিবেশ থাকে, তা হলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভোট দেবো। আর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারলে কেন্দ্রেই যাব না। তরুণ ভোটার রাসেল হাসান বলেন, মাগুরা-১ আসনে ৩২ হাজার ৩৯৫ তরুণ ভোটারের সংখ্যা গত ২০০৮ সালে এ আসনে বিএনপির সাথে ভোটের ব্যবধান হয়েছিল ২৫ হাজার ৭৬১ ভোট। এ তরুণ ভোট যেদিকে গড়াবে, সে দল বিজয়ী হবে। তিনি বলেন, আমরা তরুণরা দেখেশোনে ভোট দেবো। মাগুরা সদর উপজেলার ধরলা গ্রামের তরুন ভোটার বাস ড্রাইভার বলেন, এবারই প্রথম ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছি। দেখেশোনে ভোট দেবো। মাগুরা পৌরসভার বাসিন্দা পরিবহন চেকার কবির জানান, আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো এ সুযোগ চাই।
এ দিকে মাগুরা শহরের মোটরগ্যারেজ মিস্ত্রী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এর আগে ২০০৮ সালে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি। আর ২০১৪ সালে ভোটের জন্য ভোটারের প্রয়োজন হয়নি, আমরা আশা করি ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব। কলেজ শিক্ষক সামছুজ্জামান বলেন, মানুষ চায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠিত হোক। মানুষের ভাবনা যাই হোক নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হলে সঠিক ফলাফল ওঠে আসবে। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ দেখতে চান মাগুরার ভোটাররা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন