ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রড-সিমেন্টের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না করেই চলে গেছে। শতচেষ্টা করেও ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো যাচ্ছে না এমনি বললেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন। তবে কবে নাগাদ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এমনই প্রশ্ন এলাকাবাসীর। দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল এ সেতুর। ধামরাই উপজেলার শেষপ্রান্তে রাজাপুর-কহেলা-আতুল্লারচর বংশী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় তিন উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নবাসী এখনো চরম দুভোর্গ পোহাচ্ছে।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বছর খানেক কাজ করার পরই ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেতু নির্মাণ। এতে ধামরাই উপজেলার চৌহাট, বালিয়া, আমতা ও পাশ্ববর্তী নাগরপুর এবং মির্জাপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখন এলাকাবাসীর একটিই প্রশ্ন, সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে কবে?
ধামরাই উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধামরাইয়ের রাজাপুর-কহেলা-আতুল্লারচর বংশী নদীর ওপর ৭৫ মিটার দীর্ঘ এ সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে তিন কোটি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২২ টাকা ব্যয় ধরা হয়। ফাহিম কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু বছর খানেকের মধ্যে সেতুর ছয়টি পাইল নির্মাণের পরই রড সিমেন্টের মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদার। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেতু নির্মাণ।
বংশী নদীর ওপর সেতু না হওয়ায় রাজাপুর বেগম আনোয়ারা গালর্স কলেজ, বাহরাম মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়, নিকলি জেই হক উচ্চ বিদ্যালয়সহ সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ও বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় চৌহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি বলেন, রাজাপুর কহেলা-আতুল্লারচর বংশী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ধামরাই উপজেলার চৌহাট, বালিয়া, আমতা ও পাশ্ববর্তী নাগরপুর এবং মির্জাপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষকে ধামরাই সদর ও ঢাকায় যাতায়াতের জন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এ সেতুর জন্য এসব এলাকার মানুষকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রাজাপুর বেগম আনোয়ারা গালর্স কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলীম খান সেলিম বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে তিন উপজেলাবাসীই উপকৃত হবে। আমাদের একটিই প্রশ্ন এ সেতুর নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে? এব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাহিম কনষ্ট্রাকশনের ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ করার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রড-সিমেন্টের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ করে চলে গেছে। এখন নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে আবার কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন