দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগ নির্ণয়ে এক্সরে মেশিন সচল থাকলেও স্বল্পখরচে হাড়ভাঙাসহ নানা শারিরীক পরীক্ষার জরুরি এই যন্ত্রটিই দীর্ঘ ৬ বছর ধরে অন্ধকার ঘরে তালাবদ্ধ হয়ে আছে মীরসরাইয়ের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পাশাপাশি এখানে ৩৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ১৭ জন। ফলে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির এক্সরে মেশিন এভাবে বছরের পর বছর অচল পড়ে থাকায় এ উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত। ফলে উপজেলাবাসীকে সরকারি চিকিৎসার প্রধান ঠিকানা এই ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ফেলে পাশের এক বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। সেখানে বাড়তি খরচে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে, এদের অনেকেই দরিদ্র রোগী। জাতীয় মহাসড়কের পাশে হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অনেক রোগীই আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। পরে এক্সরে যন্ত্রটির অবস্থা জেনে ব্যর্থ মনোরথে ফেরত যান।
সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, এক্সরে যন্ত্র রাখা কক্ষটি বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে না খোলায় জং ধরে গেছে দরজার তালায়।
জানা যায়, যন্ত্রটি চালাতে রেডিওলজিস্টের পদও খালি পড়ে আছে প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন এক্সরে স্থাপন ও রেডিওলজিস্টের পদে নিয়োগের জন্য জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. কফিল উদ্দিন ও ডা. সুমন ঘোষ পল্লব জানান, এই হাসপাতালে আইটডোর, ইনডোর ও জরুরি বিভাগে প্রতি মাসে গড়ে ৫-৬ হাজার রোগী সেবা নেন। তাদের মধ্যে এক্সরে করাতে হয় এমন রোগী ২০০-২৫০ জনের মতো। কিন্তু এক্সরে যন্ত্র চালু না থাকায় তারা সেবাটি পান না। তবে এই হাসপাতালটির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দুই দুইটি অত্যাধুনিক এম্বুলেন্স সার্ভিস, সার্বক্ষণিক জেনারেটর সার্ভিস, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকূপ। সংযোজন করা হয়েছে শিশু ওয়ার্ড, স্তন ক্যান্সার পরীক্ষা বিভাগ, মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম (ডিএসএফ) হেলথ এমআইএস আওতায় প্রতি মাসে উপজেলার ৩শ দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের বিনা খরচে নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রকল্প, আছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ২৪ ঘন্টা খোলা জরুরি বিভাগ, প্যাথলজি সেবা, বিনামূল্যে ৯৭ প্রকারের ঔষধ, ইনজেকশন সরবরাহ, যক্ষা রোগের ঔষধ, ম্যালেরিয়া রোগের বিনামূল্যে ঔষধ ও মশারি প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ নুরুল আফছার জানান, এখানে ৩৬ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ১৭ জন। এক্সরে মেশিন নষ্ট থাকায় নতুনভাবে এক্সরে মেশিন বরাদ্ধ পাওয়ার জন্য সিএমএইচডি (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরেজ ডিপার্টমেন্ট)-এর পরিচালক বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন