একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট চুরি, আগের রাতে ভোট প্রদান, ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা প্রদানসহ অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করবে বিএনপি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের বেশ কিছু আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এই নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির প্রার্থীরা এই মামলা করবেন। গতকাল (শনিবার) দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০টি জেলার প্রার্থীদের সাথে স্কাইপিতে বৈঠকে অংশ নিয়ে মামলা করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০টি জেলার ধানের শীষের প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি লন্ডন থেকে স্কাইপিতে তাদের সাথে যুক্ত হন। বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার সিল মেরে রাখা, ভোট চুরি, জালিয়াতি, ভোটারদের ভোট প্রদানের বাধা প্রদানসহ অন্যান্য অনিয়মের জন্য মামলা করা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে অংশ নেয়া প্রার্থীদের দু’একজন মামলার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও অধিকাংশ প্রার্থীই নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার করার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে একমত হন। প্রার্থীদের পরামর্শেই তারেক রহমান আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা ভিত্তিক একটি করে মামলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির এক প্রার্থী জানান, আমাদেরকে ডাকা হয়েছিল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার বিষয়ে আলোচনার জন্য। সেখানে অধিকাংশ প্রার্থীই মামলা করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দু’একজন এর বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধিকাংশ প্রার্থীর মতামত শুনে মামলার করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া অন্য কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই প্রার্থী বলেন, একটিই এজেন্ডা ছিল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা। এছাড়া অন্য কোন বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা পরামর্শ দিয়েছি কমপক্ষে প্রতিটি জেলায় একটি করে হলেও মামলা করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মামলা করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে মামলা করব।
মামলার সিদ্ধান্ত কেন জানতে চাইলে পাবনা-৪ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা এই প্রার্থী বলেন, এটা কোন নির্বাচনই হয়নি। ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স সিল মেরে ভর্তি করে রাখা হয়েছে। এতো বড় অনিয়মের পরও তারা (সরকার) এটাকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলতে চাইছে। নির্বাচন যে, সুষ্ঠু হয়নি তার প্রমাণসহ আমরা মামলা করবো। বিএনপি নেতা বলেন, আদালত হয়তো মামলা খারিজ করে দেবে, তারপরও আমরা মামলা করতে চাই। অনিয়ম যে হয়েছে তা আবারও সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই।
বৈঠকে বিএনপির প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, শরিফুল আলম, শামা ওবায়েদ, আজিজুল বারী হেলাল, জি কে গউছ, লুৎফর রহমান কাজল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি, হাজী মুজিব, রফিকুল আলম মজনু, মাইনুল ইসলাম খান শান্ত প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন