শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৬

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

রাজধানীসহ ৩ জেলায় র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ জন নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত এ ঘটনাগুলো ঘটে। নিহতের মধ্যে কক্সবাজারে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গাসহ চারজন, রাজধানীতে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ এক সন্ত্রাসী ও গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক ছিনতাইকারী রয়েছেন। কক্সবাজারে নিহতরা নৌদস্যু ও মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেন র‌্যাব। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, নিহতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন : 

ঢাকা : রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শফিকুর রহমান বাবু (৪২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। র‌্যাবের দাবি, নিহত ব্যক্তি নরসিংদীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ শফিকের দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। আটক সহযোগীদের নাম- ফারুক ও প্রদীপ। এ ঘটনায় নুর আলম নামে র‌্যাবের এক সদস্যও আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন বলেন, র‌্যাবের একটি দল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে মিরপুরের ভাষানটেকের মাটিকাটা এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালায়। পাঁচতলা ওই বাড়িতে শফিকের লুকিয়ে থাকার তথ্য ছিল। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শফিক ও তার সহযোগীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে শফিক গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে শফিকের সহযোগীদের কাছ থেকে দুটি বিদেশী পিস্তল, একটি শর্টগান ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার : গতকাল কক্সবাজারের টেকনাফ ও পেকুয়ায় পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ২ রোহিঙ্গা ইয়াবা কারবারি ও ২ নৌদস্যুসহ চারজন। গতকাল বুধবার ভোররাতে বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এ সময় এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা ও আটিটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। টেকনাফে নিহতরা হলেন, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াস ও বালুখালী ক্যাম্পের মো. ইদ্রিসের ছেলে মো. ফারুক মিয়া। তাদের গলায় রোহিঙ্গা কার্ড শোভা পাচ্ছিল বলে জানায় পুলিশ।
বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, বুধবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ঝিমংখালীর খারাংখালী নাফনদী সীমান্ত পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছে। এ সময় দুই ব্যক্তিকে নদী পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেখতে পায়। বিজিবির সদস্যরা তাদের বাঁধা দিতে গেলে ওই দুই ব্যক্তি গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর গুলির আওয়াজ থেমে গেলে ঘটনাস্থলে দুজনের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখে। তাদের সঙ্গে থাকা পোটলা তল্লাশি করে এক লাখ নব্বই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি তদন্ত এসএম দোহা জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে, কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ঘাট এলাকায় র‌্যাব-৭ এর টহল দলের সঙ্গে নৌদস্যুদের কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে এ গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
মেজর মেহেদী হাসান জানান, মগনাঘাট এলাকায় একদল নৌদস্যু জড়ো হয়েছে জানতে পেরে র‌্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দস্যুরা গুলি করে। ঘটনাস্থল থেকে দুজনের গুলিবিদ্ধ লাশ ও ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
টঙ্গী সংবাদদাতা : গতকাল বুধবার ভোর রাতে টঙ্গীর গাজীপুরা বাঁশপট্টি এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গ্রীল কাউছার (২৫) নামে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ২ পুলিশ সদস্য। ঘটনা স্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীদের ফেলে রাখা একটি পিস্তল, তিনটি ছোরা ও তিন রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, আগেরদিন বিকাল তিনটায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দত্তপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৫নম্বর বøকে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাত পৌনে ৩টায় কাউসারকে নিয়ে পুলিশ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের ধরতে টঙ্গীর গাজীপুরা বাঁশপট্টি এলাকায় যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কাউসারের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছুড়ে। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুইটি গুলি কাউছারের বাম পা ও কোমরে বিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কাউছারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত ককটেল ও ইটের আঘাতে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই জহুরুল হক ও কনস্টেবল বদরুল আলম আহত হন। কাউছার দত্তপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের মিন্টু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কাউছারের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও চাঁদাবাজিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকানিদের কাছ থেকে সে নিয়মিত চাঁদা আদায় করত। ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঁশপট্টি এলাকায় সে তার সন্ত্রাসী গ্রূপ নিয়ে গাড়িতে ছিনতাই করত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন