কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক রাতে তিনজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত বুধবার রাতে ও গতকাল কুমিল্লার সদর, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় এই তিনটি ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ বলছে, তিনজনই মাদক ব্যবসায়ী। এ সময় অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও আহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
কুমিল্লা : উপজেলার গোমতী নদীর বেড়িবাঁধসংলগ্ন শ্রীপুর এলাকায় গত বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি রামদা ও সাড়ে পাঁচ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। নিহত রাসেল সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাগবের গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশের ভাষ্যমতে, গোমতী নদীর বেড়িবাঁধসংলগ্ন শ্রীপুর এলাকায় কিছু মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে—এমন সংবাদ পেয়ে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। এ সময় উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে।
একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে দাবি করেন জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন খান। ওসি আরো দাবি করেন, নিহত রাসেল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে থানায় ৮ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে।
চট্টগ্রাম : ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর কোঠবাড়ী সিকদারপাড়া এলাকায় গতকাল ভোরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
তার পরিচয় জানাতে পারেনি র্যাব। র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মাশকুর রহমান দাবি করেন, টহল দল দেখে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় র্যাবও গুলি করে। গোলাগুলি শেষে ঘটনাস্থল থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একে-২২ রাইফেলসহ ৬৩টি গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
গাজীপুর : গাজীপুরের সালনায় গত বুধবার রাত পৌনে ২টায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সুজন মিয়া নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায়।
র্যাব-১-এর সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান দাবি করেন, কয়েকজন অস্ত্র কেনাবেচা করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। র্যাবও পাল্টা গুলি করে। ‘এতে সুজন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন এবং অপর সহযোগীরা পালিয়ে যান। এ সময় গোলাগুলিতে র্যাবের সৈনিক কামরুল ইসলাম আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ সুজন মিয়াকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
র্যাব কর্মকর্তা আরো দাবি করেন, ঘটনাস্থল থেকে দুটি শটগান, দুটি ওয়ান শুটারগান, নয়টি কার্তুজ ও এক হাজার ২০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১১টি মাদক, একটি অস্ত্র ও অপরটি হত্যা মামলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন