ঢাকা মহানগরীতে সাড়ে পাঁচ হাজার ভবন অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, এসব ভবন কোনো না কোনোভাবে গড়ে উঠেছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চাইলেই এখন সেই ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন আধুনিক শহর করা সম্ভব নয়। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কলাবাগানে স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কলার্স ইন ইয়াকুব সাউথ সেন্টারে ‘অগ্নিকান্ড: কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা এ সাড়ে ৫ হাজার ভবন রাজউক চাইলেই ভাঙতে পারবে না। এ ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রাজউকের সেই জনবলও নেই। তাছাড়া ওইসব ভবন ভাঙার পর যে রাবিশ হবে সেগুলো রাখার মত জায়গাও তো নেই।
তিনি বলেন, আর সাধারণ নাগরিকরাও বিশ্বাস করে না এই অবৈধ ভবন ভেঙ্গে রাজউক নতুন শহর উপহার দিতে পারবে। কিন্তু রাজউক একটা কাজ করতেই পারে যে, প্রতীকী অর্থে প্রমাণ করে দিক একজন সর্বোচ্চ প্রভাবশালীর দ্বারা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভবনটি ভেঙ্গে ফেলুক। তাহলেই বুঝবো রাজউকের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা রয়েছে। অগ্নিকান্ডের ক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডের পর সবাইকে সচেতন হবার অনুরোধ জানানো হয়। সবাই আগ্রহীও হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কেমিক্যাল সরাতে বলা হয়। এরপর কিন্তু আরও একটি আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রস্তুতি থাকায় বড় ধরনের কিছু ঘটেনি। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র খোকন বলেন, অধিকতর সেবা ও সেবার মান বৃদ্ধি এবং সেবা সর্বস্তরে পৌঁছে দিতেই ২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত করা হয়। গত ৪ বছরে আমি চেষ্টা করেও ৬০ শতাংশ জনবলের অভাব পূরণ করতে পারিনি। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এখন ২০১৯ সাল চলছে, আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আমাদের সে জনবলের বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে।
মেয়র বলেন, চুড়িহাট্টায় আগুনের পর বলা হলো, সিটি কর্পোরেশন কেন মামলা করবে না। যৌক্তিক কথা। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতায় সেটা নেই। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা ও দোকান করার কারণে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারে সিটি কর্পোরেশন, মামলা করতে পারে না।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স) মেজর শাকিল নেওয়াজ, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ড. নাসরিন হোসাইন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইয়াসির আরাফাত খান, বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. কামরুজ্জামান মজুমদার, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান হাবিব সানা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন