শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

খাল নয় যেন ময়লার ভাগাড়

রূপগঞ্জে পানিবদ্ধতার আশঙ্কায় ১৫ গ্রামের মানুষ

খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল (খাল) খনন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। বর্তমানে খনন করা খালের বিভিন্ন স্থানে ফের ময়লা ও বর্জ্য ফেলে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতে করে পানিবদ্ধতা নিরসনে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয় করা পুরোটাই বিফলে যাচ্ছে। আরও প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষ পানিবদ্ধতার আশঙ্কায় রয়েছেন। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও মিলকারখানার বিষাক্তবর্জ্যরে কারনে যে কোন মুহূর্তে এই পানিবদ্ধতা বন্যায় রুপ নিতে পারে। এজন্য বর্ষার আগেই এর সুরাহ চায় স্থানীয় বাসিন্দারা।

উপজেলা পরিষদ সুত্র জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলায় ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় হাজারো মিল-কারখানা রয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা লোকজন জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন শত শত নতুন ঘরবাড়ি। এসব মিল-কারখানার বর্জ্য নিস্কাশনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল (খাল) ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এ খাল ভরাট হয়ে গেলেই পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ক্ষয়ক্ষতি হয় বিভিন্ন ধরনের ফসলেরও। বেশ কয়েক বছর ধরেই খালে ময়লা আবর্জনা ও মিল-কারখানার বর্জ্য ফেলে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ও বৃষ্টির দিনে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

পানিবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে স্থানীয় এমপি পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহজাহান ভূঁইয়া ও তখনকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) (বর্তমানে ঢাকা জেলার এডিসি) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের উদ্যেগে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে খাল খননের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। বানিয়াদি পাম্প হাউস থেকে আউখাব এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার খাল খনন কাজ ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভাগ করে দেয়া হয়। খাল খনন করতে গিয়ে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হয়েছে। নানা বাধা পেরিয়ে খাল খনন কাজ সমাপ্ত করা হয়। খালের পাড় দিয়ে করে দেয়া হয়েছে চলাচলের রাস্তাও। এ জন্য উদ্যেক্তাদের সাধুবাদ জানান উপকারভোগী এলাকাবাসী।

কিন্ত এক শ্রেণির মানুষ খালে ময়লা ফেলছে। ফেলানো হচ্ছে বিভিন্ন মিল-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যও। কচুরিপানায় ভরে যাচ্ছে। কোন প্রকার নিয়মনীতি মানছেনা ওই শ্রেণির মানুষগুলো। এতে করে খাল দিয়ে আবারো পানি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানিবদ্ধার আশঙ্কা রয়েছে বানিয়াদি, কাটাখালী, পেরাব, ভুলতা, মিয়া বাড়ী, পাঁচাইখা, আমলাব, শিংলাবো আউখাবসহ প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাল দেখভাল করার জন্য দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় উপকারভোগী এলাকাবাসী।

এ প্রসঙ্গে রাকিব এন্টারপ্রাইজের মালিক আলহাজ¦ জাকির হোসেন বলেন, আমরা ঠিকাদাররা সঠিক ভাবে খাল খনন কাজ সমাপ্ত করেছি। এখন খালটি রক্ষায় সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আর ওই শ্রেণির মানুষকেও সচেতন হতে হবে। যাতে করে ময়লা আবর্জনা না ফেলে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বলেন, প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি প্রয়োজন। যাতে করে খালটি ভরাট না হয়ে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, যারা ময়লা আবর্জনা ফেলে বা বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে খালের ক্ষতি করছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তাহলেই আর এ ধরনের কাজ করবেনা। এছাড়া প্রতিটি এলাকার মানুষকে সচেতন থেকে খাল রক্ষায় খেয়াল রাখতে হবে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন