রামগতিতে মেঘনা নদীর বর্ষা মৌসুমে জরুরি তীর সংরক্ষণ কাজে অনিয়ম এবং যুবলীগ নেতা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, বেপরোয়া লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবল থেকে রামগতি কমলনগরবাসীকে রক্ষার নিমিত্তে প্রায় ১২ শ’ কোটি টাকা ব্যায়ে সরকার মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্প গ্রহণ করে। যার সাড়ে তিন কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। যা বর্তমানে দেশি বিদেশি লাখ লাখ পর্যটকের ভ্রমনের আকর্ষনীয় কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে আলেকজান্ডার ইউনিয়নের আসলপাড়া গ্রামের মেস্তরী বাড়ির দরজায় একটি গ্রামীণ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় পাউবি সেখানে জরুরি ভিত্তিতে পাকা সড়ক ও গ্রামবাসীকে রক্ষায় ১০০ মিটার কাজের জন্য জরুরি বরাদ্দ দেয়। সংস্কার কাজটি করছেন মূলত উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল ও যুগ্ন আহবায়ক রাকিব। তারা বাঁধের কাজে বেপরোয়া লুটপাট করছেন বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ। তারা অভিযোগ করে বলেন নদীর পাড়ের শিকড়-বাকড় ডালপালাসহ মাটি নিয়ে অবৈধ প্লাস্টিকের ব্যাগভর্তি করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে না ফেলে তাদের সুবিধামত স্থান দিয়ে ব্যাগ ডাম্পিং করছেন। যাতে তাদের শ্রমিক খরচ না লাগে। বস্তা দিয়ে সমান করে সেখানে টেক্সটাইল বিছিয়ে জিওব্যাগ দিয়ে বাঁধ দেয়ার কথা। কিন্তু তা না করে এলোমেলোভাবে ফেলা হচ্ছে ব্যাগ। অপরদিকে জিওব্যাগে দেয়া হচ্ছে নিন্মমানের বালি। যেন দেখার কেউ নেই চলছে লুটপাট। পাউবি লক্ষীপুর অফিস যেন দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন পাউবির প্রকৌশলীদের চিহ্নিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ যে স্থানে কাজ করার কথা সেখানে না করে করছেন তাদের সুবিধামত এবং কত মিটারের কাজ কত টাকা বরাদ্দ সবকিছুই রয়েছে অন্ধকারে। শুধুমাত্র লুটের মানষে তারা দায়সারা ভাবে ১ শত মিটারের কাজটি শেষ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্লাস্টিকের বস্তা সিডিউলে না থাকলেও সেখানে নদীর তীর থেকে মাটি নিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ ভরে নদীতে ডাম্পিং করা হচ্ছে টেক্সটাইল না বিছিয়ে। সামান্য কিছু জিও ব্যাগ মানহীন বালি দিয়ে ভরা হচ্ছে লোক দেখানোর জন্য। যেখানে একমাত্র পাকা রাস্তাটি ভেঙে যাচ্ছে সেই জনগুরুত্ব এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানটিতে ব্যাগ না ডাম্পিং করে করছেন তাদের সুবিধামত স্থানে।
মেঘনার ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা। সাংবাদিকরা তথ্য চাইলে তারা অফিসে ডেকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে নানান ধরনের টালবাহানা করেন।
অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে সাব ঠিকাদার ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন সেখানে সকলের প্রতিনিধি আছেন অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ বলেন জরুরি ভিত্তিতে ১০০ মিটার কাজের বিপরীতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে যার কাজ চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষীপুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ইমার্জেন্সি পিরিয়ডের কাজ কোন বাজেট নাই যা কাজ হবে তার বিল দেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষীপুর জেলা প্রকৌশলী মো. মুসা তথ্য দেয়ার কথা বলে অফিসে ডেকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন