দেশে নারী ও শিশু থেকে শুরু করে বিরোধী মতের মানুষ কারো কোন জীবনের নিরাপত্তা নেই দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নারী-শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যা করছে। গত প্রায় ১১ বছরে দেশে কোন আইনের শাসন নেই। যেটা আছে তা হচ্ছে দলীয় শাসন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা অপরাধ করলেও বিচার হয় না। ফলে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি চলছে। এভাবে কোন দেশ চলতে পারে না। মা, বোনসহ দেশবাসীকে বলবো, যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। তা না হলে আমি আপনি কেউই রক্ষা পাবো না।
গত ২৬ অক্টোবর শনিবার ভোলায় এক সন্তানের মা’কে ছাত্রলীগ নেতার ধর্ষণের ঘটনায় সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরী এসব কথা বলেন। তারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ধর্ষণকারী ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
বেগম সেলিমা রহমান ও নিপুন রায় চৌধুরী বলেন, ধর্ষণের শিকার এক সন্তানের মা মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং স্পীড বোটের মালিক নজরুল ইসলাম, মোঃ বেলাল পাটোয়ারী, মোঃ রাশেদ পালোয়ান, মোঃ শাহীন খান ও মোঃ কিরণের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ধর্ষণে সহায়তায় মামলার আসামী করা হয়েছে স্পীড বোটের চালক মোঃ রিয়াজকে। যখন ঐ মা’কে নরপশুরা ধর্ষণ করছিলো তখন সঙ্গে থাকা আড়াই বছরের শিশুটির কান্নায় আকাশা বাতাশ ভারী হয়ে উঠলেও ওদের মন গলেনি।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, মামলার এজাহারে বাদী ধর্ষিতা মা জানিয়েছেন, তিনি তার আড়াই বছরের শিশুকে নিয়ে মনপুরা যাওয়ার জন্য চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাটে আসেন। তিনি ঘাটে এসে দেখেন, মনপুরাগামী লঞ্চটি ছেড়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে স্পীড বোটে চড়েন। বোটে আরো দুইজন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। পথে জনতার খালপাড় এলাকা থেকে আরো দুইজন পুরুষ যাত্রী উঠেন। বোটটি মনপুরার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ চলার পর একপর্যায়ে পুরুষ চার যাত্রী মিলে জোরপূর্বক স্পীড বোটটি চরপিয়াল এলাকায় থামান। ঐ মা’কে চরে নামিয়ে বাগানের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি স্পীড বোটের চালক মোঃ রিয়াজ বোটের মালিক নজরুল ইসলামকে জানান। খবর পেয়ে তিনি অন্য একটি স্পীড বোটে চরপিয়ালে নামেন। ঐ সময় ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ধর্ষণ করা চার যাত্রীকে মারধর করে তাদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর নজরুল ঐ মা’কে আবার চরের ভিতরে ধর্ষণ করে। বাদী এজাহারে আরো জানান, নজরুল ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করেন। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য গৃহবধুকে হুমকি দেন। কাউকে কিছু বললে ঐ ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় নজরুল। নেতৃদ্বয় আরো বলেন, এই বাংলাদেশের চিত্র।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন