ঘুর্নিঝড় বুলবুলের প্রভাবে মংলা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। শনিবার সকাল থেকে মংলা বন্দর শহরসহ সুন্দরবন উপকূল এলাকায় থেমে থেমে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বাতাসের তীব্রতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বন্দরের অবস্থানরত ১৪টি বাণিজ্যিক জাহাজের পন্য খালাস-বোঝাই কাজ বন্ধ রয়েছে। ১০ নম্বর বিপদ সংকেত হওয়ায় পশুর নদী ও মংলা নদীতে সকল নৌযান নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে বন্দরে নিজস্ব বিশেষ সতর্কতা ‘এলাট-৪’ এখনও বলবত আছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সকাল থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় যাওয়ার জন্য পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করে কিন্তু বিকেল পর্যন্ত লোকজন সাইক্লোন শেল্টারে যাবার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাননি।তবে শিশু ও নারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে। পৌরসভাসহ সকল ইউনিয়নের ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে রাখা হয়েছে এবং সকল এলাকায় পাকা স্থাপনা ও স্কুল,কলেজ, মাদ্রসার ভবনগুলো মানুষের আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রখেছে উপজেলা প্রসাশন। বাজারের শুকনা খাবার চিড়া-মুড়ি,গুড়,মোমবাতী ও বিশুদ্ধ পানী ব্যাবসায়ীদের মজুদ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাহী কর্মকর্তা।
মংলা বনিক সমিতির আহবায়ক এইচ এম দুলাল তাদের ব্যবসায়ীদের নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
মংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার জানান, শনি ও রোববার এলাকার লোকদের আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্য বলা হয়েছে এবং এই ২দিন তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করা হবে । জনগনের জনমাল ও তাদের নিরাপত্তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থাগ্রহন করা হয়েছে ।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শনিবার ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত জারীর পর বন্দরের নিজস্ব সতর্কতা ‘এলার্ট-৪’ জারী করা হয়েছে। বন্দরের সব ধরনের অপারেশন কাজ বন্ধ রয়েছে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাহাত মান্নান বলেন, শনিবার দিনে তিনি নিজেসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাইক্লোন শেল্টারগুলো পরিদর্শন করেছেন। সেখানে আশ্রিতদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। তাদের কোন সমস্য হবেনা ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুজ্জামান জানান, পৌরসভায় ২৯টি ও ইউনিয়ন পরিষদে ৫৫টি মিলে এ উপজেলার মোট ৮৪টি সাইক্লোন শেল্টার দুর্গতদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪০ হাজার দুর্গত মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারবে।
‘দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপে’র সভাপতি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, বুলবুল’র প্রভাবে সাগরের সুন্দরবন উপকূলসহ সংলগ্ন নদ নদীগুলো খুবই উত্তাল রয়েছে। প্রচন্ড ঢেউয়ের কারণে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলো টিকতে না পেরে তীরে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন