শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

প্রশ্ন : আল-কুরআনে বর্ণিত হযরত ইব্রাহীম- ইসমাঈল আ.-এর কথোপকথনে সন্তানের সাথে আচরণের পদ্ধতি কি?

উত্তর দিচ্ছেন : আব্দুল মতিন | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

উত্তর : আল-কুরআন মানবজাতির জন্য কিয়ামত পর্যন্ত পদপ্রদর্শক। মহান আল্লাহ্ তা‘আলা এ মহাগ্রন্থ তাঁর প্রেরিত সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সা.-এর ওপর নাযিলের মাধ্যমে মানুষের জন্য দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। তিনি এ গ্রন্থে সবকিছু বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ করেছেন আমাদের জন্য শিক্ষামূলক এমন সব ঘটনাই । যেমন মহান আল্লাহ্ আমাদের নবী মুহাম্মদ সা.-কে বলেন: “আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট এ কুরআন প্রেরণ করে; যদিও তুমি এর আগে এ ব্যাপারে অবশ্যই অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।” (সূরা ইউসূফ : ৩)।

আল্লাহ্ আমাদের জন্য বিভিন্ন কাহিনী এজন্য বর্ণনা করেছেন যাতে করে আমরা সেগুলোকে নিয়ে গভীর চিন্তা করে তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে পারি যদি আমরা বুদ্ধিমান হয়ে থাকি। যেমন আল্লাহ্ বলেছেন: “তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়। ” (সূরা ইউসূফ : ১১১)।

আল-কুরআনে বর্ণিত অনেক নবীদের কাহিনীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর ছেলে সাথে ইসমাঈল আ.-এর কথোপকথনের ঘটনা যার মাধ্যমে প্রচলিত হয় কুরবানী। যা বর্ণিত হয়েছে সূরা ছফ্ফাত-এর ১০০-১০২ নং আয়াত পর্যন্ত। এ আয়াতগুলোতে আমাদের জন্য ফুঁটে ওঠে পিতা-মাতা আল্লাহর কাছে কেমন সন্তান প্রার্থনা করবে এবং সন্তানদের সাথে তারা কেমন আচার-আচরণ করবে তার অনুপম দৃষ্টান্ত।

আগে আয়াতগুলোকে আমরা দেখে নেই। মহান আল্লাহ্ বলেন: বাংলা অনুবাদ: হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এক সৎকর্মপরায়ন সন্তান দান করুন। সুতরাং আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করলাম। অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বলল : হে আমার আদরে সন্তান! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি; এখন তোমার এ ব্যাপারে অভিমত কী? সে বলল: হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই পালন করুন। আল্লাহ্র ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন। (সূরা ইউসূফ : ৩)। খলীলুল্লাহ্ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং তাঁর পুত্র ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর ঘটনা প্রবাহ থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে সন্তান লালন-পালনের পদ্ধতি। তবে সবার আগে আল্লাহর কাছে সৎ সন্তানের প্রার্থনা করতে হবে। যেমন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সৎ সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছেন। (কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হচ্ছে, অনেকেই সন্তান লাভের আশা হারিয়ে ফেললে পীর-আউলিয়া সহ অন্যের কাছে সন্তান চায়, যা শিরক্ হিসেবে গণ্য হবে।) কারণ সৎ সন্তান দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভের চাবিকাঠি। এবং সৎ সন্তানের কাছ থেকে পিতা-মাতা সহজে নিজের চাহিদা পূরণ করে নিতে পারে।

সন্তানের কাছে কোনো বিষয় উপস্থাপন করতে হবে অত্যন্ত কোমল শব্দে আদরের সাথে। যাতে সেশব্দ ও ভাষাতে প্রকাশ পায় পিতৃত্ব-মাতৃত্বের মর্মার্থ এবং সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার ভালবাসার গভীরতা। তাহলে সন্তান সহজেই সেবিষয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করবে। যেমন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন ‘ইয়া বুনাইয়া’-‘হে আমার কলিজার টুকরা প্রিয় সন্তান’ বলে সম্বোধন করে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। ফলে সন্তান ইসমাঈল আলাইহিস সালাম বিষয়টি মেনে নিয়ে ‘ইয়া আবাতি’- ‘হে আমার সম্মানিত বাবা’ বলে সুন্দরভাবে ন¤্রতার সাথে উত্তর দিয়েছিলেন যে, আপনি আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহ্ যদি চান আমাকে ধৈর্য ধারণকারীদের মধ্যে পাবেন। কেননা, ধৈর্যশীল ব্যক্তি সহজেই আপন কাজে সন্তুষ্ট থাকতে পারে। সন্তানদের লালন-পালন ও উত্তম উপায়ে শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ সকলের জন্য হযরত ইবরাহীম-ইসমাঈল আলাইহিমাস সালামের কথোপকথন উত্তম আদর্শ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোঃ আলতাফ হোসাইন ১৪ জুলাই, ২০২১, ৫:২৯ এএম says : 0
আমার কিছু টাকা প্রয়োজন
Total Reply(0)
মোঃ আলতাফ হোসাইন ১৪ জুলাই, ২০২১, ৫:২৯ এএম says : 0
আমার
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন