শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আমার রোজা যেন না হয় পাপে কলুষিত

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৬ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ১ মে, ২০২০

রোজাদারের কর্তব্য হলো সত্য কথা বলা এবং কোনো অবস্থাতেই মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ না করা। কোনো দিকের ভীতি প্রদর্শন অথবা প্রলোভন প্রদর্শনের সময়ও সত্যের ওপর অবিচল থাকা। প্রকৃত মুসলমানের লক্ষণ এর মাধ্যমেই বিকশিত। সততা ও সত্যবাদিতার রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করার জন্য মহান রব্বুল আলামীন ঈমানদার বান্দাগণের প্রতি আহŸান জানিয়ে ইরশাদ করেছেন: ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও।’ (সূরা আত্ তাওবাহ: আয়াত ১১৯)।

বস্তুত: সততা ও সত্যবাদিতা ব্যক্তি জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন ও আন্তর্জাতিক জীবনের অঙ্গনে সম্মান ও মর্যাদালাভের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই গুণের পরিচয় আল্লাহ জাল্লা শানুহু এভাবে প্রদান করেছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে: প্রকৃত তারাই মুমিন যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি ঈমান এনেছে এবং এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ পোষণ করেনি এবং নিজেদের জান মাল দিয়ে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করেছে। তারাই সত্যবাদী। (সূরা আল হুজরাত: আয়াত ১৫)।

যার মাঝে এ গুণের সমাহার থাকবে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষই তাকে ভক্তি ও শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখবে এবং পরকালেও সে মহান আল্লাহ পাকের নিকট হতে উত্তম প্রতিদান পাবে। সততা ও সত্যবাদিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন: সত্যবাদিতা পুণ্যের কাজ। আর পুণ্য জান্নাতে পৌঁছিয়ে দেয়। অপর দিকে মিথ্যাকে সকল পাপের উৎস হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে, প্রকৃতই মিথ্যা সকল পাপের জননী। সমাজ জীবনে যারা মিথ্যাবাদী ও মিথ্যাচারী তার সকলের নিকট মিথ্যাবাদী ও ঘৃণিত ব্যক্তি বলে পরিচিতি লাভ করে। সকল মানুষই তাদের ঘৃণার চোখে দেখে এবং তাদের সংস্পর্শ ও সংশ্রব থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলে। অপর দিকে যারা সত্যবাদী ও সত্যাশ্রয়ী তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে এবং তাদের সান্নিধ্যের জন্য ব্যকুল হয়ে উঠে।

বস্তুত: যাবতীয় পানাহার ও কামাচার পরিত্যাগ করার নামই হচ্ছে সিয়াম সাধনা। এই সাধনা শুধুমাত্র এতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এই সাধনা করতে হবে আল্লাহর জন্য, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক পূর্ণাঙ্গ জীবন অতিবাহিত করার স্থির সংকল্প সহকারে। কেউ যদি এই ভাবধারাকে অক্ষুণœ রেখে সিয়াম পালন করে, তাহলে তাকে অবশ্যই মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যাচারীতা পরিত্যাগ করতে হবে। সিয়াম সাধনা যে আল্লাহর জন্য নিবেদিত সেই আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ বিধান পালন করে জীবনের সকল অঙ্গনে পূর্ণ মাত্রায় সংহতি ও সুসামঞ্জস্য সংস্থাপন করতে হবে। সিয়াম পালন করা ও সেই সঙ্গে মিথ্যা কথা বলা, মিথ্যা ও অশ্লিল কাজ কর্ম করা সম্পূর্ণরূপে পরস্পরবিরোধী কাজ।

ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিধানের উদ্দেশ্যই হলো মানব জীবনের সকল দিকের সাথে সামঞ্জস্য স্থাপন করা। কিন্তু যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা কথা বলে ও মিথ্যা কাজ করে সে মূলত: সিয়াম সাধনাকে অপমান করে এবং মানুষের সামনে সিয়াম সাধনাকে উপহাসের বস্তুতে পরিগণিত করে। পিয়ারা নবী মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহ সা. এ জন্যই সুস্পষ্টভাবে এই শ্রেণির আমলের অসারতা ঘোষণা করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও মিথ্যার আমল পরিত্যাগ করল না, তার খাদ্য ও পানীয় পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোনোই প্রয়োজন নেই। (সহীহ বুখারী)। এতে প্রতীয়মান হয় যে, এই শ্রেণির লোকদের রোজা ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং এর দ্বারা কোনো পূণ্য অর্জিত হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Bilal Muhammed Bilal ১ মে, ২০২০, ১:০২ এএম says : 1
একজন রোজাদার মিথ্যা কথা বলা ও অন্যান্য পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার রোজা রেখে শুধু পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ –সহিহ বোখারি: ৬০৫৭
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১ মে, ২০২০, ১:০২ এএম says : 1
পুণ্য অর্জনের মাস রমজান। এ মাসে রোজা-নামাজ ইত্যাদির পাশাপাশি দান-সদকার মাধ্যমেও ফজিলত অর্জন করতে হবে। বেশি বেশি দান-সদকা করার চেষ্টা করতে হবে।
Total Reply(0)
তরুন সাকা চৌধুরী ১ মে, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 1
অনেকে রমজান মাসে ইফতার বা সাহরিতে এমন খরচ করেন যার প্রয়োজন নেই। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে বনী আদম! তোমরা প্রতি নামাজে তোমাদের সাজসজ্জা পরিধান কর এবং খাও, পান কর ও অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ -সূরা আরাফ: ৩১
Total Reply(0)
জোহেব শাহরিয়ার ১ মে, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 1
শুধু খতম দেওয়া বা পড়া শেষ করার জন্য তাড়াহুড়ো করে কোরআন পড়লে কোরআনের হক আদায় হয় না। বিশেষ করে খতমে তারাবিতে খতম শেষ করা বা ২০ রাকাত তারাবি শেষ করার জন্য তাড়াহুড়ো করে কোরআন পড়া।
Total Reply(0)
হৃদয়ের ভালোবাসা ১ মে, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 1
অনেকে ফরজ নামাজ আদায়ে উদাসীন থাকেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী।’ -সূরা মাউন: ৪-৫
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ১ মে, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 1
ইবাদতের মাস রমজানে বেশি বেশি আমলের কথা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই ব্যস্ত থাকি দুনিয়াবি কাজে। এটা কাম্য নয়। এ মাসে বেশি বেশি দোয়া-ইস্তেগফার করা উচিত।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ১ মে, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 1
খানা পিনা থেকে পেটকে বিরত রাখা পাশাপাশি মন্দ দেখা থেকে চোখকে, মন্দ শোনা থেকে কানকে, মন্দ চিন্তা থেকে মাথাকে এভাবে প্রতিটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে শুধু রমজান মাসে নয়, সারা বছরঅবধি মুমিনকে মন্দ থেকে বিরত রাখার আমরণ সাধনা করে যেতে হবে। তাহলেই মাহে রমজানের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য উপলব্ধি বা এর মধ্যে থাকা ধনভান্ডার উদ্ধার করতে পারবে।
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ১ মে, ২০২০, ১:০৫ এএম says : 1
রমজানের হক আদায় করব আমাদেরই স্বার্থে। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন। আমীন।
Total Reply(0)
শিহাব আহমদ ১ মে, ২০২০, ৫:২৭ এএম says : 1
রোজা ঢাল স্বরূপ। সংযম ও ধৈর্যের সাথে রোজা পালন করলে দেহ ও মন পবিত্র হয় এবং তাক্বওয়া অর্জন করা যায়।
Total Reply(0)
শিহাব আহমদ ১ মে, ২০২০, ৫:২৮ এএম says : 1
রোজা ঢাল স্বরূপ। সংযম ও ধৈর্যের সাথে রোজা পালন করলে দেহ ও মন পবিত্র হয় এবং তাক্বওয়া অর্জন করা যায়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন