সুপার সাইক্লোন আমফান ভারতের পশ্চিবঙ্গের দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়েছে। তীব্র গতিতে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগের ভিতরে প্রবেশ করছে। কলকাতাতেও শুরু হয়েছে আমফানের তাণ্ডব। ঝড়ো বাতাস উপড়ে ফেলছে শহরের বিভিন্ন এলাকার গাছপালা। পুরো পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় তুমুল বৃষ্টি ও প্রবল বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে। বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলে আমফানের অগ্রভাগ প্রবেশ করেছে। বইছে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া, ঝরছে মুষলধারে বৃষ্টি। সাগর হয়ে ওঠেছে উত্তাল। প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল।
বুধবার (২০ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আমফান পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়তে শুরু করে। বিকেল ৫টায় ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ খবরে বলা হয়, এ মুহূর্তে দিঘা থেকে আর মাত্র ৬৫ কিমি দূরে রয়েছে আমফান । সাগর থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র । উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে শুরু হয়েছে জলোচ্ছাস। ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছে, ১৬০ কিমি বেগে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে এটি দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যাওড়াখালিতে ঢোকার কথা আমফানের । পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টি ৪ থেকে ৬ ঘন্টা তান্ডব চালাতে পারে বরে জানিয়েছেনন তারা।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ভারতীয় উপকূলের দিকে এই ঝড় অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রবল ঝড়ো বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিও বইতে শুরু করে। কলকাতায় আমফানের দাপটে রেড রোড, নিউ আলিপুর, খিদিরপুরে আম্ফানের তান্ডবে গাছ উপড়ে পড়েছে। ভারি বৃষ্টি হচ্ছে কলকাতার নিউটাউনে। তুমুল ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলির বিভিন্ন জায়গায়। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এরই মধ্যে সুপার সাইক্লোন আঘাত হানতে শুরু করেছে উপক‚লীয় জেলাগুলো। এটি সুন্দরবন উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করছে। ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রমের সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। এটি বিকাল ছয়টা থেকে রাত আটটার মধ্যে সাতক্ষীরা ও খুলনা অঞ্চল অতিক্রম করবে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদফতরের সারাদেশের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আম্পানের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারো থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এর আগে আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান বঙ্গোপসাগরে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি আজ বুধবার দুপুর চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার, কক্সবাজার উপকূল থেকে ৪৭০ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯০ ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এ কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকাকে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন