ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে খুলনা জেলায় ৮২ হাজারটি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আর ঝড়ের তান্ডবে প্রায় ৪ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলার ৯ উপজেলার উপকূলীয় ৬৮ ইউনিয়নের মানুষ আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ জেলায় ক্ষতির পরিমানে এগিয়ে আছে ক্রমান্বয়ে কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলা। অন্য চারটি উপজেলায় ক্ষতির পরিমান খুবই কম।
এছাড়া, দমকা বাতাসের প্রভাবে কোনো কোনো স্থানে গাছপালাও উপড়ে পড়েছে। তবে মাঠে থাকা বেশিরভাগ ধান আগাম কেটে ফেলায় এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ণয় করতে। সে অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ারদার বলেন, খুলনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কয়রা উপজেলার মানুষ। সেখানে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ও স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় আমফানের আঘাত ও জোয়ারের পানির তোড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ছোটো আংটিহারা বাকেরগাজীর বাড়ির পাশে শাকবাড়িয়া নদীর প্রায় ১২০ গজ বেড়িবাঁধ, আংটিহারা মজিদ গাজীর পাশে ৩০০ গজ বেড়িবাঁধ, জোড়শিং বাজারের পাশে ৫০০ গজ বেড়িবাঁধ, কপোতাক্ষ নদের চোরামোখা খেয়াঘাটের কাছে ৫০০ গজ বেড়িবাঁধ ও গোলখালী তসলিম মোল্লার বাড়ির পাশে ৫০০ গজ বেড়িবাঁধ, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাজীপাড়া গ্রামের মাথায় কপোতাক্ষ নদের ৬০০ গজ বেড়িবাঁধ, কাটকাটা বাজারের শাকবাড়ীয়া নদীর ৩০০ গজ বেড়িবাঁধ, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামে কপোতাক্ষ নদের ৭০০ গজ বেড়িবাঁধ এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা ও গোবরা ঘাটাখালি গ্রামে কপোতাক্ষ নদের আধা কিলোমিটার এলাকাসহ ১০টি জায়গার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কয়রা নদীর পানি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ উপচে লবণ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। সেখানে স্থানীয় অধিবাসিরা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিনতাপাত করছে।
ঝড়ে কয়রা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের ছোটবড়ো ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন অফিসের টিন উড়ে গেছে। ডুবে গেছে উপজেলা পরিষদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন