করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষার্থীরাও চলে গেছেন নিজ নিজ পরিবারের কাছে। তবে মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। ২ মাসের বেশি সময় ধরে না থেকেও ভাড়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাড়া মওকুফের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে শিক্ষার্থীরা মেস বা বাসা থেকে নিজ নিজ এলাকায় চলে যান। অপ্রতুল আবাসন ব্যবস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীই এসব এলাকায় মেস বা ভাড়া বাসায় থাকেন। যাদের অনেকেই টিউশনি করিয়ে বাসা ভাড়াসহ নিজেদের খরচ চালান। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে তাদের ভাড়া দেয়া মতো অবস্থাও নেই। অনেক শিক্ষার্থীর পারিবারিক আয় বন্ধ থাকায়ও বিপাকে পড়েছেন তারা। এদিকে বাড়িওয়ালারাও ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
বর্তমানে এ বিদ্যাপীঠে অধ্যয়নরত সাত হাজার শিক্ষার্থী জন্য রয়েছে তিনটি ছেলেদের হল যাতে থাকেন প্রায় সাড়ে সাত শত শিক্ষার্থী আর একটি মেয়েদের হলে থাকেন প্রায় সাড়ে তিনশত শিক্ষর্থী। হলে থাকছের মোট শিক্ষার্র্থী ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে ক্যাম্পাসের সংল্গন এলাকায় আছেন প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী আর বাকীরা কোটবাড়ি ,কুমিল্লা শহর, ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া,পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সহ অন্যান্য এলাকায় অবস্থান করতেন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিনিয়ত দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রামণের হার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার লকডাউনের সময় বৃদ্ধি ও করাকরি করার নিদের্শ দেন তার মধ্যে মাসের ২৫ না পেরোতেই প্রায় ৫ হাজারের ও অধিক শিক্ষার্থীদের কাছে মেস মালিকদের কল চলে আসে মোবাইল ফোনে। গত ১৮ মার্চ ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার কারণে মার্চ মসের ভাড়া দিয়েছেন প্রায় সকলেই। কিন্তু গত এপ্রিল মাসে মেসে থাকেননি কোন শিক্ষার্থী তারপর ও ভাড়া দিতে হয়েছে মেসর মোবাইল ব্যাংক এর মাধ্যমে। কেউ মেস ভাড়া দিতে অসি¦কৃতি জানালে শিক্ষার্থীদের অনেক বাজে ভাষা কথা বলা, বার বার মোবাইলে কল দেয়া, অভিবাবকের সাথে কথা বলে চাপ সৃষ্টি করে এমনকি হুমকি দেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে মেসে মালিকদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া মওকুফ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্থক্ষেপ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চলতি মাসের ১৭ তারিখে ভিসি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীরর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের স্বাক্ষরিত “করোনার সময়ে কমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের প্রসঙ্গে” এই শিরনামে কুমিল্লা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য আ. ক. ম বাহাউদ্দিন বাহার, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিনের নিকট এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে এখনো কোন ঘোষণা বা আশ^াস পায়নি মেসে থেকে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রায় ৫ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী।
মস ভাড়া মওকুফের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগ ও ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বলেন “আজকে মেসে না থেকেও মেস ভাড়া মওকুফের জন্য বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে এখানে ওখানে চিঠি দিয়ে আহ্বান জানাতে হচ্ছে স্থানীয় সরকারে নেতা কর্মী, সরকারী আমলাদের এমনকি স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে কিন্তু বিশ^বিদ্যালয় যে কোন নিয়োগ,টেনডার(দরপত্র),ওয়াকশনের সময় কাউকে চিঠি দিতে হয় না। ২০০ এককর জায়গা এই ক্যাম্পানের পাশে নেয়নি বলে এলাকাবাসির মায়া কান্না দেখেছি আর দেখেছি কত স্থানীয় আমলাদের আনাগোনা । আজকে ওঁনারা কাই!”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের করোনার সময়ে কমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের প্রসঙ্গের চিঠির বিষয়ে চানতে চাইলে ইনকিলাবকে বলেন “ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাস থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। মেসর ঠিকানা,মালিকের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করছি ও স্থানীয় সরকারের লোকজনের সাথে কথা বলে একটি সুষ্ঠ সমাধান করব ”
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন