ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং বাংলাদেশ ও ভারতের উজানে টানা বৃষ্টির কারণে ব্রহ্মপুত্র নদে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের করালগ্রাসে হাতিয়া গ্রাম, নীলকন্ঠ, কামাতি পাড়া ও পালের ভিটা গ্রামের অর্ধশতাধিক বাড়িঘরসহ চলতি মাসেই গৃহহীন হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার। বার বার নদী ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলো এখন আশ্রয় হারিয়ে অন্যের ভিটায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর দাবি স্থায়ী তীর রক্ষার।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে ১২শ’ মিটারব্যাপী উন্মুক্ত এলাকায় নদীভাঙনে শতশত বাড়িঘর বিলিন হয়েছে। চলতি মাসেই দেড় শতাধিক বাড়িঘর ছাড়াও গত এক বছরে গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৪শ’ পরিবার। ভাঙনে দেড় হাজার একর আবাদি জমির পাকা ধান, গম, ভুট্টাসহ হাজার হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা বিলিন হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে নদনদীতে পানিবৃদ্ধি ও টানা বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হওয়ায় ভাঙনের গতি তীব্রতর হয়েছে। বসতভিটা ও জমি হারিয়ে বিপাকে পড়েছে ভাঙন কবলিত মানুষ। মাথা গোজার জায়গা না পেয়ে তাদের নিরব হাহাকারে ভারী হয়ে আসছে আকাশ-বাতাস। ভাঙন কবলিত স্থানে দ্রুত স্থায়ী তীররক্ষা কাজের দাবি এলাকাবাসির।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন জানান, ব্রহ্মপূত্র ডানতীর রক্ষা প্রকল্প পন্ড হয়ে যেতে পারে মাঝখানে উন্মুক্ত হাতিয়া অঞ্চলে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে। হাতিয়ায় উন্মুক্ত এলাকায় দ্রুত কাজ বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে ইতিমধ্যে অনুমোদিত প্রকল্প থেকে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারব্যাপী স্থায়ী নদী সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ১৭৫০ মিটার আমাদের গ্যাপ রয়েছে। এটাও আমরা অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এটা অনুমোদন পেলে দ্রুত স্থায়ী নদী সংরক্ষণ কাজ শুরু করা যাবে। ইতিমধ্যে যেহেতু ভাঙন শুরু হয়েছে, উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের অনুমোদন নিয়ে ভাঙন কবলিত হাতিয়া এলাকায় ১ হাজার মিটারে জরুরি অস্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন