শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পানিবদ্ধ মাদারীপুরের পৌর এলাকা আড়িয়াল খাঁর অব্যাহত পানি বৃদ্ধি ও প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা

টানা দিনভর প্রবল বর্ষণও আড়িয়াল খাঁ নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে মাদারীপুরের নিম্নাঞ্চল এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি প্রবল বর্ষণে মাদারীপুর পৌর এলাকার অনেক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা যথাযথভাবে গড়ে না ওঠায় পৌরসভার অনেক এলাকায় পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পৌর এলাকায় মাটি খনন করে ড্রেন নির্মাণের কাজ বৃষ্টির পানিতে জলমগ্ন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে। খোদ পৌর এলাকায় ড্রেনের জন্য স্তূপ করা রাস্তার মাঝখানে খননকৃত মাটি বৃষ্টির পানিতে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর ছিলারচর চরনাচনা কালিকাপুর মাদ্রা শ্রীনদী ধুরাইল এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ করে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর শহর রক্ষা বাঁধ ও লঞ্চঘাট এলাকা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। মাদারীপুর ১নং পুলিশ ফাঁড়ি, মাদারীপুর জেলা জজ কোর্টের সাবেক বিশেষ পিপি এডভোকেট আহসানুল হক খান ও সাংবাদিক আলী আকবর খোকার বাসভবনসহ আশপাশের অনেক বাড়ি দোকানপাট এখন নদীভাঙনের হুমকির মুখে। এছাড়া প্রবল বর্ষণের কারণে শহরের থানতলী, পানিছত্র, খাগদী পাগদী, পুরানবাজার চরমুগরিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সড়কের রাস্তার পাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গরমের স্বস্তি মিললেও নিচু এলাকার মানুষ কিছুটা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরের ভূইয়া বাড়ী, কুলপদ্দি, উপ-শহর চরমুগুরিয়া এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে বড় বড় খানাখন্দক সৃষ্টি হওয়ায় ওই সব সড়কের বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পথচারী জনসাধারণের যাতায়াতে অবর্ননীয় ভোগান্তি শিকার হতে হচ্ছে। অথচ কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই সেদিকে। এদিকে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম নদীর পানি বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, গত ১২ ঘণ্টায় আড়িয়াল খাঁ নদীর পানির কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, মাদারীপুর শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় ইতিমধ্যে যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল তা মেরামত করা হয়েছে। শহর রক্ষা বাঁধ যাতে কোন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় স্লাব মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো ফেলা হবে। এদিকে প্রবল বর্ষনে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের মিল্কভিটা সড়কের পাশে বৃষ্টিতে হাঁটু পানি হয়েছে। এতে খুচরা ব্যবসারীরা বেশ দুর্ভোগে পড়েছে। এ ব্যাপারে টেকেরহাটের ব্যবসায়ী নাজমূল হক বাসু বলেন, এটা টেকেরহাটের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। চক্ষু হাসপাতাল, কিন্ডারগার্টেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, বেশ কয়েকটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকশ’ লোকের আবাসস্থল এই সড়কেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। শীঘ্রই আমরা এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চাই। এদিকে মাদারীপুর পৌর এলাকা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি গোলাম আজম ইরাদ বলেন, বর্তমানে পৌর মেয়র পৌর এলাকায় সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে যে উন্নয়ন কর্মকা- করছেন তা বর্ষা মৌসুমের পূর্বে করা উচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকলেও বর্ষার পানিতে তা ব্যাহত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে মাদারীপুর পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্যে বেশ কিছু ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু নির্মাণ হয়েছে বাকিগুলোও নির্মাণের চেষ্টা করা হবে। আশা করি, শীঘ্রই মাদারীপুর শহর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন