দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা ইটভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ দিন দিন হুমকির কবলে পড়ছে। ব্যঙের ছাতার মত গড়ে ওঠেছে ইটভাটা।
কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকার ইটভাটা স্থাপনে আইন করে জায়গায় সীমাবদ্ধ ইট পোড়ানো সংখ্যা এবং নির্দিষ্ট বিধি তোয়াক্কা না করে গ্রাম গঞ্জের লোকালয়ে গড়ে ওঠেছে ইটভাটা।
ভাটার নির্গত ধোয়ায় ও ধুলাবালিতে এলাকাবাসী মারাত্মক শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ইটভাটা থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও সালফার-ডাই অক্সাইডসহ বিভিন্ন ধরনের ধোঁয়া বাতাসে মিশে যেমনি পরিবেশ মারাত্মক হচ্ছে তেমনি নবাগত শিশুসহ সবধরনের মানুষের নানান ধরনের শরীরে ঝুঁকি বহন করতে হবে বলে মনে করেন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ইনচার্জ ডা. মোহাম্মদ হানিফ। তথ্য অনুসন্ধান মতে লোহাগড়ায় শুধু ৯টি ইউনিয়ন এর মধ্যে ভাটার সংখ্যা ৪৯টি। এখানে চরম্বা ইউপিতে ২০টি। তাতেই সন্নিহিত পর্বত্য পাহাড়ি অঞ্চল, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, জ্বালানি কাঠ ও মাটি নাগালেই সুবিধায় ভাটা বৃদ্ধি করছে সূত্রে প্রকাশ।
দেখা গেছে বিগত মৌসুমে মজুতকৃত ইট বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে গ্রামীণ সড়ক বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে চরম্বা মূল সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ছে। প্রতিটি ইটভাটায় বিপুল পরিমাণ পাহাড়ি কাঠ ও মাটি মজুত রয়েছে। আবার অধিকাংশ ইটভাটায় সংশ্লিষ্ট কোন অনুমতি ও ছাড়পত্র নাই। প্রভাবশলী মহল দলীয় ক্ষমতার এবং বিভিন্ন প্রশাসনের সহযোগীতার প্রভাবে অবৈধভাবে এই ব্যবসা করে যাচ্ছে। অনেকে কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়াচ্ছে। ফলে বনাঞ্চল ধবংস হচ্ছে। এব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহসান হাবীব জিতু ও উপজেলা সহকারী (ভ‚মি)নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, আইন আছে সরকারিভাবে কোন ইটভাটায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ইট পোড়ানোর অনুমোদন থাকলেও এখানকার ইটভাটার মালিকরা ২০-৪০ লাখ ইট পোড়ানো হয় বলে জানা গেছে। ফলে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতি মৌসুমে নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত ৬ মাসে একটি ইটভাটায় ৩০ লাখ ইট পোড়ানোর জন্য দেড় হাজার টন কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়।
স্থানীয় অনেকে জানান প্রশাসন এবং উপরের মহলের সহযোগিতায় প্রতি বছর বছর এই অবৈধ ইটভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছে কূচক্রীমহল। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বছর এসব অবৈধ ইটভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছে যা দেশ ও জনগণের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এলাকাবাসীরা মারাত্মক পরিবেশ দূষণ রোধ ও কৃষি জমি রক্ষার্তে এই ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন