চারিদিকে যখন সরকারের কুকীর্তি ফাঁস হচ্ছে, দেশে-বিদেশে আলোচিত হচ্ছে তখন এগুলো আড়াল করতে সরকার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কুকীর্তি ফাঁসের পর সরকারের সমালোচনা যখন চারিদিকে তখন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছে। কারণ, বিএনপি এটা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে তাদের কুকীর্তি যেগুলো দেশে-বিদেশে প্রচারিত হচ্ছে- এ বিষয়ে আর কেউ কথা বলবে না।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। নড়াইলের আদালতে বেগম খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, চারদিকে আজ অন্যায়-অবিচার, গুম-খুন বিস্তার লাভ করেছে। এটা চিরদিন চলতে পারে না। এর অবসান হবেই। এই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবেই। এই অপরাধীদেরও বিচার হবেই।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মাফিয়াতন্ত্র তারা এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে, যাই হোক তারা কোনো তোয়াক্কা করে না। আল-জাজিরায় যারা রিপোর্ট করেছে- তারা বাংলাদেশে খায় না পরে? তারা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। একটি দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে গিয়ে কী পরিমাণ অন্যায় করছে- তার একটি রিপোর্ট তারা করেছেন। আপনারা সহ্য করতে পারলেন না। নানাভাবে কথা বলেও যখন এটাকে ধামাচাপা দিতে পারলেন না, তখন আদালতের বিচারকদের দিয়ে সেই কাজটি করালেন। যে আদালত বলছে- ইউটিউব এবং ফেসবুকে আল জাজিরার যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, এটা বন্ধ করে দিতে হবে। শেখ হাসিনা মাঝে মাঝেই বলেন, গণতন্ত্রের কথা। এই হচ্ছে তার গণতন্ত্রের নমুনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সা¤প্রতিক এক বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অত্যন্ত সুরক্ষিত গৃহ থেকে বলছেন- বিএনপির মরা গাঙ্গে আর জোয়ার আসবে না। মরা গাং তো আপনারাই তৈরি করেছেন। যাদের সঙ্গে আপনাদের রক্তের সম্পর্ক- তারাই বাংলাদেশের নদী-নালার পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি ঠিকই বলেছেন। মরা গাঙ্গে এখন রক্তের স্রোত। বিরোধী দলকে গুম-খুন করে যে রক্ত ঝরিয়েছেন, সেই রক্তের স্রোত এখন শুকনা নদীতে প্রবাহিত হয়।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ হলো ধান ভাঙানোর কলের মতো। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা যদি আওয়ামী লীগ করে, তাহলে তারা বৈধ হয়ে যাবে। কোনো রাজাকার যদি আওয়ামী লীগ করে, তারা বৈধ হয়ে যায়। নুরু রাজাকারকে মন্ত্রী বানিয়েছে এই আওয়ামী লীগ।
সংগঠনের সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা জেলার ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রফিক, ঢাকা মহানগর উত্তরের এবিএমএ রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আমান উল্লাহ আমান, রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন