নির্বাচন কমিশন গঠনে নতুন সার্চ কমিটির সব লোক হবে আওয়ামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি ব্যখ্যা দিয়ে বলেন, সার্চ কমিটি গঠনে যে আইন সেটি তো পরিচালনা করবেন সরকার এবং তার নির্বাহী বিভাগ। যারা আইন প্রণয়ন করবেন তারা তো সরকারের কথায় করবেন। আওয়ামী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ না হলে আইন প্রনয়ন করা যায় না। আর যে সার্চ কমিটি হবে সেটি হবে আওয়ামী বাকশালী চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ। মুজিব কোর্ট পড়া লোকেরাই সরকারের সার্চ কমিটিতে থাকবেন। এই সার্চ কমিটি হারিকেন দিয়ে খুঁজে খুঁজে মুজিবকোর্ট পড়া লোকদের বের করে আনবে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় তাঁতীদলের উদ্দ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কানায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান পার্লামেন্টকে অবৈধ পার্লামেন্ট আখ্যায়িত করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওটা একটি নিশিরাতের পার্লামেন্ট, শেখ হাসিনার ইচ্ছার পার্লামেন্ট। ওখানে প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে এমন কোনো নেতা নেই। এই পার্লামেন্টে যে আইন হবে সেটাতো মুজিব কোর্ট পড়া আইন হবে। সেখানে মুজিব কোর্ট পড়া সার্চ কমিটি হবে। সেখানে কোনো নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি হবে না। তারা মুজিব কোর্ট পড়া লোক বাছাই করবে। তারা কোনো নিরপেক্ষ লোক বাছাই করবে না। ওই সার্চ কমিটি আরেকজন কে এম হুদাকে খুঁজে বের করবে। আরেকজন রকিবুলকে বের করবেন।
তিনি বলেন, যারা ভোটার ছাড়া নির্বাচন করতে অত্যন্ত পারদর্শী যারা দিনের আলোতে যে ভোট হয় সকাল ৮ টা থেকে ৪ টা সেই ভোটে বিশ্বাস করে না সেই রকম হুদা সাহেবদের বের করে আনবে এই সার্চ কমিটি। কারণ এই নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যে আইনটি করা হচ্ছে এটি একটি অবৈধ আইন এটা সম্পূর্ণ আওয়ামী আইন। এটি একটি বাকশালী আইন।এই সার্চ কমিটির সাথে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন করার কোন সম্পর্ক থাকবে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেন, দেশের মানুষ যারা বিদেশে আছেন প্রবাসী তারা যদি এই সরকারের সমালোচনা করেন তাদের পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে তাদের নাগরিকত্ব থাকবে না। সরকারের সমালোচনা আর রাষ্ট্রদহিতা তো এক জিনিস নয়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে এটার আলোচনা হয়েছে। পাসপোর্ট তো একটা ট্রাভেল ডকুমেন্টস এটা বাতিলের মধ্য দিয়ে আপনারা কি বোঝাতে চাচ্ছেন? তাহলে তো আন্তর্জাতিকভাবেই তাদেরকে নাগরিক শুন্য করে দিলেন। তার কোন রাষ্ট্র থাকলো না। রাষ্ট্রহীন একজন নাগরিক হিসেবে বাতাসে বাতাসে ভেসে বেড়ানো ছাড়া তার আর কোন উপায় থাকবে না।
সরকারের বিরোধীতা করলে দেশে গুম হয়ে যায় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সরকারের সমালোচনা করলে বিচারবর্হিত হত্যার স্বীকার হতে হয়। তাই দেশের বাহিরে বসে যারা সরকারের সমালোচনা করছেন তাদের কোনভাবে ধরতে না পেরে এখন আবার গবেষণায় বসছেন এদের কেউ কিভাবে ধরা যায়। সেজন্য দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেউ বক্তব্য দিচ্ছে তার বোনকে ধরে নিয়ে গিয়ে কারাগারে রাখা হচ্ছে। এত জুলুমবাজ, এত ভয়ঙ্কর অত্যাচারী সরকারের দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আর নেই।
তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল শূন্য বাংলাদেশ চায়, সরকার বিরোধী মত শূন্য বাংলাদেশ চায়। এখন নাগরিক শুন্য রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টায় লিপ্ত এই সরকার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, '৭২ সালের সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন করার নির্দেশনা দেয়া আছে। অনেকেই বলছে আইন নেই, সরকার ভাবলো আমরা এটার একটা সুযোগ নেই। আপনি তো আইন করবেন একটি বাকশালী পার্লামেন্টে। পার্লামেন্টে দু'একজন ছাড়া সবই তো আপনার।
তিনি আরও বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন আজকে যে আইনটি পার্লামেন্টে তোলা হবে সেটি দেখে মনে হচ্ছে এটি সার্চ কমিটি গঠনের খসড়া। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যে আইন সেই আইন এটি না। তাহলে বাকশালী পার্লামেন্টে যে খসড়া আইন তুলছেন সার্চ কমিটি গঠন করার জন্য। এই আইনের মধ্যে জনগণের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। জনগণের কোনো অংশগ্রহণ নেই।
তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপির তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,তাঁতীদলের সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন