শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার কি আমরা চিবিয়ে খাবো? - রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:১৪ পিএম | আপডেট : ৬:৫৩ পিএম, ৯ জানুয়ারি, ২০২২

সরকারের তৃতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, লাজ লজ্জা যদি একেবারেই হারিয়ে যায় তাকে কিছু বলার থাকে না। যাদের সামান্য হারায় তাদেরকে কিছু বললে তারা আরও লজ্জিত হয়। আর যাদের মোটেও লাজ লজ্জা থাকে না তাদের ‍বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে তাদের কিছু যায় আসে না। লজ্জার সমস্ত আবরণ এই সরকার হারিয়ে ফেলেছে। গত পরশু দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২২সাল হবে উন্নয়নের মাইল ফলক। রিজভী বলেন, এই উন্নয়নের ধারায় দেশ ও জনগণ আরও কত প্রতারিত হবে? আর কত নিঃস্ব হবে। মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার কি আমরা চিবিয়ে খাবো?

রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় জাতীয়তাবাদী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উদ্যোগে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মরহুম এমএম ওবায়দুর রহমান, কামারুল হাসান শাহীন, তনিমা সোমা, শান্ত ইসলাম জুম্মনসহ অন্যদের স্মরণে এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যখন ডানে বামে সব সময় তাকাতে হয় কেউ আমাকে অনুসরণ করছে কিনা। এক প্রচন্ড ভয় এবং শঙ্কার মধ্যে আমাদের দিন রাত যখন অতিবাহিত হয় তখন এই তরুণরা ফ্যাসিবাদ, নাৎসীবাদ, পৃথিবীর সমস্ত আইনকে কড়ায়ত্ব করে জনগণের ওপর যারা ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এই অনলাইন এক্টিভিস্টরা গোটা জাতিকে প্রেরণা দেয় এবং আমরাও অনুপ্রাণিত হই।

তিনি বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ২০২২ সালকে বলেছেন উন্নয়নের মাইলফলক। আর গণতন্ত্রের কী হবে, কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে? এই যে অনলাইন এক্টিভিস্ট যারা সত্য কথা বলতে গিয়ে, সত্য মন্তব্য করতে গিয়ে যাদেরকে নিরুদ্দেশ করেছন, যাদেরকে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছেন, যাদেরকে গুম করেছেন, তাদের কী হবে, গণতন্ত্রের কী হবে? সেই কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে?

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি জানেন আজকে যে সন্তানটি জন্মলাভ করছে ৯৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সে জন্মলাভ করছে। আর আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। এটা যে ঋণের মাইলফলক হবে, বন্দুক যুদ্ধের মাইলফলক হবে, গুমের মাইলফলক হবে, এটা অনলাইন এক্টিভিস্টদের কতজন গুমের শিকার হবে তা বলা মুসকিল। আগেই বলেছি যদি লজ্জা শরম না থাকে তাদের বলেও কোনো লাভ নেই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণ নাকি তার ওপর আস্থা রেখে ভোট দিয়েছে। বাহ প্রধানমন্ত্রী। আপনি সকল কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, ভয় দেখিয়ে আপনি যা খুশি তা বলতে পারেন। কিন্তু জনগণ কী বলে, তরুণরা কী বলে, একবার পড়ে দেখেছেন? আপনি দিনের ভোট রাতে করেন, আপনার ওপর আস্থা রেখেছে, তো আপনি জনগণের ওপর আস্থা রাখলেন না কেন?

দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই রকম প্রয়োগ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রিজভী বলেন, এই আইনে বিরোধী মতের লোক যদি মামলা করে, দেখবেন যে, সকালে মামলা নেবে বিকালে বলবে যে খারিজ করে দিয়েছে কোর্ট। আর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যদি মামলা করেন, দেখবেন সেই মামলার প্রথম থেকে সুন্দর প্রক্রিয়া চলবে। বিএনপির সেই লোকটিকে আদালতে হাজির করতে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে, কারাগারে পাঠাবে; তারপরে জামিনের জন্য বারবার আবেদন করবে তার আইনজীবী, জামিন দেবে না। অনেক দিন ছয় মাস এক বছর, দেড় বছর পর হয়ত সে মুক্তি পাবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলা আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু আবেদনে গ্রহণযোগ্য ‘উপাদান না পাওয়ার’ কারণ দেখিয়ে সেসব মামলা নেয়নি আদালত।

কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপেলো, আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, হায়দার আলী লেলিন, কাজী রফিক, ওবায়দুর রহমান টিপু বক্তৃতা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন