নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে প্রেসিডেন্ট সংলাপের উদ্যোগকে ভেল্কিবাজি বাইস্কোপ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই সরকারের প্রেসিডেন্ট সংলাপ ডেকেছেন, সুতরাং সরকারের কথার বাইরে তো এক ধাপও তিনি এগুতে পারবেন না। আজ সোমবার রাজধানীর শেরে-ই বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
খুলনা জেলা মহানগর নবগঠিত আংশিক কমিটির নেতাদের সাথে নিয়ে রিজভী জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যান। এ সময় তার সাথে দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় নেতা রবিউল ইসলাম রবি,খুলনা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, যুগ্ম-আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহির ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন এবং জেলার আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু ও সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন,‘আপনারা জানেন রাষ্ট্রপতি আজ সংলাপ করছেন। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে এ সংলাপ। আমি বলতে চাই, রাষ্ট্রপতি তো দেশের অবিভাবক। তিনি যদি অভিভাবক হন, তাহলে সারা জাতি কি চান, তাদের কন্ঠ থেকে কি শব্দ বের হচ্ছে - এটা তো একজন অভিভাবকের বোঝার কথা। একটি পরিবারে যিনি অবিভাবক যেমন পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা সন্তানের অভাব অভিযোগ শোনেন। এবং সেই অনুযায়ি ব্যবস্থাও নেন। রাষ্ট্রের অভিভাবকের তো সেটাই করার কথা।
তিনি আরো বলেন, আজ নির্বাচন কমিশন গঠনে যে আইন করার কথা, সে আইন তো করা হয়নি। এছাড়া দেশে সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা করা দরকার সেটাও করা হয়নি। তাহলে রাষ্ট্রপতি কিসের সংলাপ করছেন ? আবার কি একটা হুদা মার্কা নির্বাচন হবে? আবার কি আরেকটি রকিব মার্কা নির্বাচন হবে? হুদা মার্কা নির্বাচনে দেখেছি নিশিরাতের নির্বাচন, দিনে নির্বাচন হয় না; রাতে হয়। রকিব মার্কা নির্বাচনে দেখেছি চতুষ্পদ জন্তু ঘুরে বেড়ায়, সেখান ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যায় না। এই হচ্ছে পরিস্থিতি। সংলাপের নামে যে ভেলকিবাজি, বাইস্কোপ করা হচ্ছে এর জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবৈধ এই সরকারের পক্ষ হয়ে রাষ্ট্রপতি যে সংলাপ করছেন এটা জনগণ ও ভোটাদের প্রতি এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা করা। আজকে ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাস। এই জাতি নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ভৌগলিক স্বাধিনতা আমরা পেয়েছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে যে স্বাধীনতা তা আমরা পাইনি। কারণ, আজকে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন, তখনই তারা গণতন্ত্রকে কষাইয়ের মতো হত্যা করেছেন। গণতন্ত্রের মধ্যে যে বিষয়গুলো হলো নাগরিক স্বাধীনতা, প্রত্যেক নাগরিকের চলা চলের যে নাগরিক স্বাধীনতা, তাদের সমাবেশ করার স্বাধীনতা, বিরোধী দলের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা করেছে যারা ক্ষমতাসীন আছেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও করেছেন, এখনো করছেন। স্বাধীনতার যে মূল বার্তা, মূল চেতনাই তো ছিল গণতন্ত্র যেটা তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিরা দিতে চাননি বলেই যুদ্ধে রূপ নিল। ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হল, দুই লক্ষ মা-বোন ইজ্জত দিল তার বিনিময়ে স্বাধীনতা পেলাম। আজকে আওয়ামী লীগ সেই পাকিস্তানিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দি করছে। গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার যে মৌলিক অধিকার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সেটাও সরকার দিচ্ছে না। সরকার একটা অমানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। এ সময় গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিও জানান রিজভী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন