আগেরবার সার্চ কমিটি যেমন একজন হুদাকে (কেএম নূরুল হুদা) বের করেছে, এবারের সার্চ কমিটি আরও বড় কোন হুদাকে খুঁজে বের করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই সার্চ কমিটি হুদা (কেএম নূরুল হুদা) কমিশনের চাইতেও বড় কোনো বেহুদা কমিশন বানানোর জন্য সর্বান্তকরণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রস্তাব হিসেবে পাওয়া সোয়া তিনশ নামের যে তালিকা সার্চ কমিটি প্রকাশ করেছে, তা দেখে দেশের গণতন্ত্র, ভোট আর নির্বাচনের ভবিষ্যৎ কী হবে তা আমরা সকলেই বুঝতে পারি।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম’৭১ নামের একটি সংগঠনের উদ্যাগে ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের নাটক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনে যারা যাবেন, তারা অত্যন্ত যোগ্য ও দক্ষ লোক হবেন। আমাদের দেশে আগে দেখেছি যে, অ্যাপ্রোচ করে তাদেরকে বলা হয়, তারপরে তারা রাজি হন। আর এখন সব একেবারে মিছিল করে যাচ্ছেন সার্চ কমিটির কাছে নির্বাচন কমিশনে সদস্য হওয়ার জন্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য! এ যে আবেগীপনা!! এরা যদি নির্বাচন কমিশনে আসে, তাহলে দেশের গণতন্ত্রের যে কী পরিণতি হবে, ভোটের কী পরিণতি হবে, নির্বাচনের কী পরিণতি হবে- এটা আমরা সকলেই বুঝতে পারি।
তিনি বলেন, গতবার সার্চ কমিটি একজন হুদাকে (কে এম নূরুল হুদা) বের করেছে। সেই হুদাকে দিয়ে আগে ভোট ডাকাতির নির্বাচন, কেন্দ্র দখলের নির্বাচন, প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন নির্বাচন, গরু-বাছুরের নির্বাচন, তারপরে দেখলাম লেটেস্ট নিশিরাতে নির্বাচন। এবার ভোর রাতের নির্বাচন হবে? সন্ধ্যা ৭টার নির্বাচন হবে? নাকি আগাম রাতে ১০টা না ১১টায় নির্বাচন হবে? বলা খুব মুশকিল।
দলের অবস্থান তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই অবৈধ সার্চ কমিটি এবং তাদের প্রস্তাবিত যে নির্বাচন কমিশন হবে, তাকে আমরা আগেই প্রত্যাখান করছি। অবৈধ সরকারের সকল কর্মকান্ড অবৈধ। এর সাথে জনগণের, এর সাথে স্বচ্ছতার কোনো সম্পর্ক নেই।
বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে গণতন্ত্র আশা করা যায় না। এরা নূরুল হুদা সাহেবদেরও খুঁজে খুঁজে নিয়ে এসেছিল এ কারণে যে, গণতন্ত্রের একটা মোড়ক থাকবে, আবরণ থাকবে, কিন্তু তারা কাজ করবে। সেই কাজটি নূরুল হুদা সাহেব অত্যন্ত সার্থকতার সাথে করেছেন।
আন্দোলনের ডাক আসছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আন্দোলনের ডাক আসছে। প্রতিদিন শত শত হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে আদালতের চৌহদ্দির মধ্যে বন্দি করে রাখা হয়, তাদের প্রতিদিন হাজিরা দিতে হয়, ৩৫ লাখ মামলা তাদের বিরুদ্ধে ঝুলছে। এই যে প্রত্যক্ষ নির্যাতন তাদের ওপর চলছে, এখান থেকে মুক্ত হতে হলে একেবারে ঝাঁক বেঁধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। কে আমাদের দেখল, কে দেখল না, সেটা বিচার করলে হবে না। আমাদের বিচার হচ্ছে একবার নেমে এই সরকারকে ধাক্কা মেরে এর পতন নিশ্চিত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে একটা সুষ্ঠু স্বচ্ছ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান বক্তব্য দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন