জনগণের নয়, মন্ত্রী-এমপিদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে তো হাছান মাহমুদের, ওবায়দুল কাদেরের। বেড়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে টিসিবির ট্রাকের পেছনে এত বড় লাইন হতো না। ‘জনগণের ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে’ ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী এমপিদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, মন্ত্রীরা জনগণের ক্ষুধা নিয়েও তাদের সঙ্গে রসিকতা করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার মহিলা দলের উদ্যোগে রাজধানীর শাহবাগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনে লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে নিয়ে অনেক ছবক দিচ্ছেন। কেনো উনি ক্ষমতা ছাড়ছেন না? কেনো উনি গদি ছাড়ছেন না? কারণ উনি ক্ষমতা থেকে সরে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ দলটির সিনিয়র নেতারা দখল করবেন।
তিনি বলেন, জনগণকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যের মধ্যে ফেলে দিয়ে সরকার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি দেখা দিয়েছে। জনগণ খেয়ে পরে বাঁচলো কি না এটা তাগিদ দেয়ার কোনো কিছু মনে করে না সরকার। দেশে আজ নির্বাচিত সরকার থাকলে, তাদের জবাবদিহিতা থাকতো এবং যেভাবেই হোক এটা নিয়ন্ত্রণ করতো।
রিজভী গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, খবরে বেরিয়েছে মানুষ দুপুর বেলা ভাতের বদলে পাউরুটি ও কলা খেয়ে থাকছে। একেবারে দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ‘জনগণকে ক্ষুধা-অনিদ্রায় রেখে শুধু নিজের ও নিজের লোকদের ভালো করছেন। নিজের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার, ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করছেন। আর দেশের মানুষ কোনোমতে কলা-রুটি খেয়ে বেঁচে থাকে, তাও আবার সরকারি চাকরিজীবী ও মধ্যম আয়ের মানুষ। আগে যারা মেসে থাকতেন তার একটা ডিম ভেজে ভাত খেতেন। সেই ডিম ভেজে খাওয়ার মতো সামর্থ এখন মধ্যম আয়ের মানুষের নাই। নি¤œ আয়ের মানুষের কথা বাদই দিলাম।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, এরা দুর্ভিক্ষের বিলাসবহুল দেখতে চায়। নিজেরা ভালো থেকে দুর্ভিক্ষের বিলাসবহুল রূপান্তর করতে চায়। তাদেরতো খাবারের অভাব নাই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে রাস্তা, ফুটপাত, ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলে মানুষ খেয়েছে। এখন সেই পরিণতি আমরা আবার দেখছি।
‘বিএনপির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে’- মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিদিন হামলা-মামলার শিকার হচ্ছে। সিন্ডিকেট আর গোটা মাফিয়া চক্র সব তারাই। ক্যাসিনো, জুয়া সমস্ত সিন্ডিকেটের মালিক তারা। এই তারা কারা তাদের নামও তো আপনাদের গণমাধ্যমে এসেছে। সুতরাং এগুলো তারা বিভ্রান্ত করার জন্য বলেন। কিন্তু মানুষ বিভ্রান্ত হয় না, তারা আরো হাসির পাত্র হন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা যখন কথা বলেন তখন তারা হাসির পাত্র হন।
লিফলেট বিতরণকালে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা দলের রুমা আক্তার, শাহীনুর নার্গিস, নাসিমা আক্তার কেয়া, দোহার উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা রাহিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, খন্দকার এনামুল হক এনাম, রবিউল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের খালিদ হোসেন জ্যাকি সহ কয়েকশ নেতাকর্মী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন