লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা সড়কটিই যেন মরণফাঁদ। এলজিইডি’র আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি সংস্কারের অভাবে এখন ভুক্তভোগীদের অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার-লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়ক এখন চলাচলকারীদের মধ্যে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলার লক্ষ্মীপুর, সুরমা, বগুলা ও বাংলাবাজার (আংশিক) ওই চার ইউনিয়নের ৮০ গ্রামের মানুষদের কয়েক বছর ধরে বেহাল পুরোসড়কটিই এখন চলাচলের অনুপযোগী। সড়কে চলাচলকারীরা জানান, যান চলাচল করাতো দূরের কথা, পায়ে চলাচল করাই ঝুঁকিপূর্ণ। পুরো সড়কজুড়ে গর্ত, খানাখন্দ, কাদা আর জলাবদ্ধতা মাড়িয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। চিকিৎসাসেবা গ্রহীতা গর্ভবতী মহিলা ও বয়োবৃদ্ধরা ওই সড়কের নাম শুনলেই ভয় পান।
সরেজমিনে দোয়ারাবাজার-লক্ষ্মীপুর সড়ক ঘুরে দেখা গেছে পুরো সড়কটিই যেন মরণফাঁদ! সড়কের সুরমা ইউনিয়নের শরীফপুর, শান্তিপুর, গিরিশনগর, মহব্বতপুর, রাবার ড্যাম পর্যন্ত পুরোটাই গর্ত-খানাখন্দ ও কাদায় ভরা। বিপজ্জনক অবস্থায় বেরিয়ে আছে রড, ইট-পাথর। যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ওই সড়কের নোয়াপাড়া, লক্ষীপুর, লেয়াকতগঞ্জ, পশ্চিম বাংলাবাজার পর্যন্ত পুরো সড়ক কাদাজলে ভরা।
বক্তারপুর গ্রামের লিয়াকত আলী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বছরের পর বছর এই সড়কে যাতায়াতে আমাদের দুর্ভোগের সীমা নেই। আমরা যেন ছিটমহলের বাসিন্দা। টেংরাটিলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। আমাদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সড়কটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিতে আমি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। দুর্গম এলাকার যোগাযোগক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওই সড়কটি দ্রুত পুনর্র্নিমাণ করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল হক বলেন, পুরো সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। এলজিইডি অফিসে বারবার ধর্না দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ডিও লেটার দিয়ে বারবার তাগিদ দেওয়া কোনো উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি। জনস্বার্থে সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই। দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী দেবতোষ পাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দোয়ারাবাজার টু লক্ষীপুর পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার সড়ক এলজিইডির আওতাভুক্ত। ওই সড়কের ভাঙা অংশের সাড়ে ৪ কিলোমিটারের একটা স্লিপ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগির প্রকল্পটি পাস হবে বলে আশাবাদী। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেরি হচ্ছে। তবে প্রকল্পটি পাস হলেই সড়কের মেরামত কাজ শুরু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন