ঈদ উল আযহা অর্থাৎ ত্যাগের উৎসব। ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের দ্বিতীয়টি। চলতি কথনে এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। ইসলামি চান্দ্র পঞ্জিকায় ঈদুল আযহা জ্বিলহজ্জের ১০ তারিখে পড়ে। এ উৎসবে মুসলমানরা স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ও উট আল্লাহর নামে কোরবানি করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর পালিত হয়ে আসছে কোরবানীর ঈদ। এবছর আগামী ২১ জুলাই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বসেছে পশুর হাট। খামারী ছাড়াও প্রন্তিক অনেক কৃষক ও কৃষাণী পরিবার গরু মোটাতাজা করে থাকেন। তেমনি একজন গাজীপুর সিটি করপোরেনের সালনা বিপ্রবর্থা এলাকার মাজহারুল ইসলাম। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজাবাবু নাম দিয়ে হলেস্টান ফ্রিজিয়ান ষাড়গরু গরু ছোট থেকে লালনপালন করে বড় করে তুলেছেন। যার বর্তমান ওজন প্রায় ৪০ মণ (১৬শ কেজি)। এবারের ঈদে গরুটি বিক্রি জন্য ক্রেতা দেখানো হচ্ছে। ক্রেতাদের কাছে হলেস্টান ফ্রিজিয়ান ষাড়গরু “রাজাবাবুর” দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা দেখতে আসছেন রাজাবাবুকে। কেউ কেউ সাধ্যমত দাম করলেও অনেকেই বলছেন এটা তাদের সাধ্যের বাইরে।
গরুটির মালিক কৃষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, গরুটি দেশীয় খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বড় করেছেন। তিন বছর বয়সের গরুর বাচ্চা তারা দুই বছর আগে এক লাখ ৭০ হাজার টাকায় কিনে লালন পালন শুরু করেন। এখন এর বয়স ৫ বছর। বর্তমানে গরুটি বর্তমানে সাড়ে ৯ ফুট লম্বা ও প্রায় ৬ ফুট উচ্চতা। হাটে নিয়ে বিক্রি না করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ বাড়িতেই বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। তার আশা বিশাল আকারের এই গরুটি ২০ লাখ টাকার বেশী দামে বিক্রি হবে। গরুটির খবর পেয়ে এরইমধ্যে মোবাইল ফোনে মাধ্যমে দাম উঠেছে ১৮ লাখ টাকা। সন্তানের মত লালন-পালন করা গরুটি এখন উপযুক্ত দাম পেলেই তিনি খুশি।
কৃষক মাজহারুল ইসলাম ছেলে মাহবুব বলেন, পরিচর্যা, দেখাশুনা, খাবার দেওয়া, গোসল করানো, খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সব কাজই করেন পরিবারের লোকজন মিলে। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার গুড়, ভূষি, ঘাস, ধানের কুড়া, ভুট্টার গুড়া, গমের ভূষি, তিলের খৈল, ঘাস খাওয়ানো হয় রাজা বাবুকে। কিন্তু করোনার কারনে ক্রেতা কম থাকায় বিশালাকৃতির রাজাবাবুকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। ক্রেতারা চাইলে ০১৭১৫১৮৫৭৮৯ মোবাইল নাম্বারে যোযোগ করতে পারেন।
গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: এস.এম উকিল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের গরু খুবই কম হয়। কোরনাবনীর পশুর হাটে নিয়ে গেলে অনেক ক্রেতা পাওয়া যায়। তবে যারা হাঁটে পশু নিয়ে যেতে যাচ্ছেন না তারা স্ব স্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রাণিসম্পদ জেলার ওয়েব পেইচে ছবি আপলোড করে অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
গাজীপুর সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, রাজা বাবুর মালিকসহ নগরের সকল খামারিদের এবং গ্রামীণ অর্থনীতির দুশ্চিন্তার কথা বিবেচনা করে ঈদের আগে নগরে অস্থায়ী পশুর হাট বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনে বেঁচা-কেনার সুযোগ করে দিয়েছেন। কোরবানির হাটগুলোতে থাকবে স্বাস্থ্য বিধি মানার পাশাপাশি জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন