বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল (২৮ জানুয়ারি)। এই নির্বাচন গত কয়েকদিন ধরে সরব ছিলো সোশ্যাল মিডিয়া। ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ীদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি কিছু বিষয় নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
এবারের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচনে প্রথমবারের মত সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রে একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। সাধারণ সম্পাদক পদে টানা তৃতীয় বারের মতো জয়ী হয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। দুটি প্যানেলের মধ্যে মিশা-জায়েদ পরিষদ থেকে সম্পাদকসহ ১১ জন, কাঞ্চন-নিপুন পরিষদ থেকে সভাপতিসহ ১০ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচিতদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী সঙ্গীতশিল্পী ও সাংবাদিক তানভির তারেক লিখেছেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন - জায়েদ খান বিজয়ী। ১৩ ভোট বেশি পেয়ে জায়েদ খান নির্বাচিত। রিয়াজ পরাজিত… ডিপজল ও রুবেল নির্বাচিত স্ব স্ব অবস্থানে। অভিনন্দন। এখন মূল কাজ হলো মিলে মিশে থাকা, দেখা যাক সেটা কতটুকু হয়; যা সবচে জরুরী।’
চিত্রনায়িকা শাকিবা বিনতে আলী লিখেছেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়া, তৃতীয় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত বন্ধু জায়েদ খানসহ সকল নবগঠিত কমিটিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও দোয়া এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এদের দ্বারা সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের উদ্যোগের আশাবাদী। অনেক অনেক শুভ কামনা ও অন্তরের অন্তঃস্হল থেকে দোয়া আপনাদের জন্য, আশা করি এখন আরো ভালো ভালো কাজ হবে ইনশাআল্লাহ।’
চিত্রনায়িকা মিস্টি জান্নাত লিখেছেন, ‘সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। বাকি কৃতকার্য-অকৃতকার্য, সবার জন্য শুভকামনা। সবাই সবাইকে নিয়ে কাজ করবো, চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
হামিদ জসিম লিখেছেন, ‘অবশেষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি ও জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত। বিজয়ের অভিনন্দন ও বিজিতদের সমবেদনা। সবাইকে শুভেচ্ছা। নিরন্তর শুভ কামনা।’
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে স্বল্প ব্যাবধানে পরাজিত নিপুনের পরাজয় নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ বিভিন্ন পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে বলছেন আপিল করলে হয়তো জয়ী হবেন নিপুন।
এ প্রসঙ্গে তাহসিম বিল্লাহ রুবেল লিখেছেন, ‘সবাই একটু মিলিয়ে দেখবেন হিসেবটা ঠিক আছে কি না। জায়েদ খান পেয়েছে-১৭৬ ভোট, নিপুন পেয়েছে-১৬৩ ভোট। দুজনে মিলে পেয়েছে-৩৩৯ ভোট। নির্বাচন কমিশনারের ব্রিফিং অনুযায়ী ভোট কাস্ট হয়েছে-৩৬৫ টি ও ভোট বাতিল হয়েছে-১০ টি, অর্থাৎ কার্যকরী ভোট-৩৫৫ টি। তাহলে এখন আসি মূল কথায়- নিপুন এবং জায়েদ খান মিলে মোট-৩৩৯ ভোট পেলে সঠিক ভোট ৩৫৫ হাতে বাকি ১৬ টি ভোট কোথায়? অবশ্যই এই ১৬ টি ভোট নিপুণ পেয়েছে, আর তাহলে তার ভোট হবে-১৬৩+১৬=১৭৯ আর জায়েদ খান- ১৭৬। অর্থাৎ পরিকল্পিতভাবে নিপুনের ১৬ টি ভোট নষ্ট বলে গণ্য করে তাকে হারানো হয়েছে এটা (প্রমাণিত)। আর যারা ইলিয়াস কাঞ্চনকে ভোট দিয়েছে তারা তো নিপুন কেও দিয়েছে তাহলে ইলিয়াস কাঞ্চন ১৯১ আর নিপুন ১৬৩ ভোট, বাকি ২৮ ভোট কোথায়?’
এমডি শাকিব লিখেছেন, ‘মেনে নিতে পারলাম না নিপুনের এভাবে পরাজিত হওয়াটা। মেয়েটা এতকিছু করার পরেও এভাবে হেরে যাবে কল্পনাও করতে পারিনি। আসলেই শিল্পীরা নিজেরাই তাদের ভালো চায় বলে মনে হয়না। জায়েদ খান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হবার পর থেকেই একের পর এক ঝামেলা সৃষ্টি শুরু হয়েছে শিল্পীদের মাঝে। এসবের সামনাসামনি প্রতিবাদ করা এক শিল্পীর নাম নিপুন। তারপরেও তাকে হারতে হলো! আগামী দিনের জন্য শুভ কামনা নিপুন আক্তার।’
অন্যদিকে ফলাফল ঘোষণার আগেই নির্বাচন বর্জন করেছেন সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অভিনেতা ডি এ তায়েব। সেটা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন-ফলাফল নিয়ে চলমান আলোচনা-সমালোচনার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক আহমেদ বায়েজীদ ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘শিল্পের খবর নাই, সমিতি নিয়ে ব্যস্ত পুরো জাতি। কতটা অকম্মা হলে একটা জাতি এমন একটা সমিতির নির্বাচন নিয়ে মেতে উঠতে পারে! এই জাতির অধঃপতন হবে না তো হবে কি উগান্ডার?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন