মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরে অবস্থিত খাদ্য গোদামে পানি প্রবেশ করায় টিসিবির মজুত রাখা ডাল, চিনি ও তেল অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কিছু এলাকায় পানি কমছে আবার কিছু বন্যার পানি বৃদ্ধি অভ্যাহত রয়েছে। উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা ও মনু নদীর পানি কিছুটা কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে বানবাসী মানুষের। অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নিচতলায় টিউবওয়েল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা থাকায় তা পানিতে তলিয়ে গেছে। গৃহপালিত পশুগুলো নিয়েও চরম বিপাকে রয়েছে বানবাসী মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখনও বানবাসীরা শুকনো খাবার ছাড়া কিছুই পাননি। ত্রাণ হিসেবে চাল দেয়া হলেও রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই।
মৌলভীবাজার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জ্যোতি বিকাশ ত্রিপুরা জানান, শেরপুরে তাদের দুটি খাদ্য গুদাম রয়েছে সে গুলো টিসিবি ব্যবহার করছে। এবিষয়ে টিসিবির আঞ্চলিক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল মজুমদারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, গুদামে ৫৬৬ টন ডাল, ৩২০ টন চিনি ও ৬৫ হাজার লিটার তেল মজুত ছিল। দুই দিন থেকে গুদাম থেকে এসব পণ্য বেরকরে কুমিল্লা, চট্রগ্রাম ও ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। বন্যার পানি উঠায় গুদামে রাখা ডাল ও চিনির সব নীচের একটি স্থর ক্ষতি হয়েছে। তবে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষনিক জানাতে পারেননি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার হামরকোনা এলাকায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচিয়ে বন্যার পানি এখনও প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করছে। কুশিয়ারা, ফানাই, কন্টিনালা ও জুড়ী নদী দিয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যা কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও রাজনগর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় জেলায় ৪২টি ইউনিয়নের ৫’শত গ্রামের ৩ লক্ষ মানুষ পানিবন্ধি রয়েছেন।
জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায় বন্যার কারণে এপর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলার ১১৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক,উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে ৪৫টি। সবমিলিয়ে ১৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে ২৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের জন্য জেলায় ২০ লক্ষ বরাদ্দকৃত টাকা বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। ২১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকা ২ হাজার ৫শত প্যাকেট শুকনো পাঠানো হয়েছে। ৭টি উপজেলায় বন্যার্তদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক খোঁজ খবর নিতে ও সহযোগিতা দিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য আরও বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন