মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গৌরনদীতে ডাকাত ও চোর আতঙ্ক রাত জেগে পাহারা বসান গ্রামবাসী

গৌরনদী (বরিশাল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চোর ও ডাকাত আতঙ্কে রাত জেগে গ্রামবাসী পাহারা দিচ্ছেন। গত ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উজিরপুর উপজেলার হারতা বাজারের মৎস্য আড়তে ফিল্মিস্টাইলে গণডাকাতি সংঘটিত হওয়ার পর গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরসহ বিভিন্ন বাজারগুলো ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, হিজলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় একাধিক চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব চুরি ও ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলেও চোর ও ডাকাত আতঙ্ক কাটছে না। ফলে উপায়ান্তর না পেয়ে গ্রামবাসী নিজেদের যানমালের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য নিজেরাই গত এক মাস ধরে রাত জেগে পাহারা বসিয়েছেন। এমনকি এলাকার চিহ্নিত চোর কিংবা ডাকাতদের আটক করে থানা পুলিশের কাছেও সোর্পদ করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক মাস পূর্বে গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিল্বগ্রাম এলাকার পলাশ খানের গৃহে, দক্ষিণ বিল্বগ্রামের কাদের তালুকদারের গৃহে ও গৌরনদী হাইওয়ে থানার ১০ গজ দূরত্বে গৌরনদী সুপার মার্কেটের মা ও মনি জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ চুরি ও ডাকাতি সংঘটিত হয়। এছাড়াও গত ১০ নভেম্বর গৌরনদী মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার পথে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে বিকাশের এসআর শওকত হোসেনের কাছ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর পূর্বে হিজলার মাছবাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। গত পহেলা নভেম্বর আগৈলঝাড়ার ছয়গ্রাম এলাকার সেলিম হাওলাদারের গৃহে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপূর্বে ২৪ অক্টোবর একই গ্রামের আতাউর রহমান হাওলাদারের গৃহে, ৩০ অক্টোবর সেরাল গ্রামের জাকির হোসেনের গৃহে, ৭ অক্টোবর সেরাল গ্রামের আব্দুল হক সন্যামতের গৃহে, গত ২৩ নভেম্বর বাবুগঞ্জের আগরপুরের একটি বেসরকারি অফিসে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাতে সরেজমিনে গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত জঙ্গলপট্টি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চোর ও ডাকাত আতঙ্কে গত একমাস ধরে ওই এলাকার ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। একত্রিতভাবে গ্রামের ২০/২৫ জন যুবক দলবদ্ধভাবে গ্রাম ঘুরে পাহারা দিচ্ছেন। এছাড়াও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ওই ইউনিয়নের সবকটি গ্রামে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আত্মগোপনে থাকা ওই ইউনিয়নের চিহ্নিত চোর শরিফুল ইসলাম ওরফে শহিদুল মৃধা, চিহিত ডাকাত আক্তার খন্দকারকে গ্রামবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। উজিরপুর থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার খন্দকার হারতায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া স্বীকারোক্তিমতে উজিরপুর উপজেলার যুগিরকান্দা গ্রামের সুমন নামের আরো একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সচেতন নাগরিকদের মতে, গ্রেফতারের পর কয়েকদিন কারাভোগ করে চোর ও ডাকাত দলের সদস্যরা জামিনে বেরিয়ে পুনরায় তাদের পেশায় এবং মাদকসেবীরা নেশার টাকা জোগাড় করতেই চুরি ও ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এব্যাপারে গৌরনদী সার্কেলের এএসপি মো. নাইমুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা দেয়াসহ চুরি ও ডাকাতিরোধে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমনকি প্রতিদিন রাতেই প্রত্যেক হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলে থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ টহল দিয়ে আসছে বলে এএসপি নাইমুর জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন