পদ্মা নদীতে পানির বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা, জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ও পালের ইউনিয়নের ছয় গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। বিলিন হয়েছে কয়েক শত একর ফসলী জমি।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশণ শেষে দূর্গতদের মাঝে টিন, নগদ অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছেন। এ ছাড়াও নদী ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের পদ্মার ভাঙন এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, প্রতিদিন ভাঙছে নদীর পাড়। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদীপাড়ের মানুষ, গত এক সপ্তাহে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, তীব্র স্রোত থাকায় ধারাবাহিক ভাঙনে বসত ভিটা ও ফসলী জমি হারিয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক পরিবার। নদীতে বিলীন হয়েছে বসত বাড়ি, তিন হাজার একর কৃষি জমি, মসজিদ, কবরস্থান ও ব্রিজ কালভার্ট। হুমকির মুখে রয়েছে একটি বাজারসহ ফসলি জমি, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনরোধের স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি এলাকাবাসী।
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল আমীন দেওয়ান বলেন, আমাদের নেতা পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা অনুযায়ী সহায়তা দিয়েছেন। বাকীদের তালিকা করে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে জমা দিয়েছি।
অপর দিকে জাজিরায় নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে ৩ গ্রামের ৩ শতাধিক পরিবার। পদ্মা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়া গ্রামে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। এদিকে এসব এলাকায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে কমপক্ষে ২ শতাধিক পরিবার।
ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি ক্রমেই বাড়ছে এতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙনের। জাজিরা উপজেলা পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়া গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে কাথুরিয়া গ্রামে কমপক্ষে ২৫টি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কয়েক শত একর ফসলি জমি, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনা। অনেকেই নিজেদের সব হারিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকছেন। এছাড়া ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে এরই মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটিও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
কাথুরিয়া গ্রামের হযরত আলী, রইচউদ্দিন, মামুন, নিপা, সামসুল হক বলেন, কয়েক বছরের ভাঙনে আমাদের ফসলি জমি, গাছপালা ও বসতভিটা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই এক সপ্তাহের তীব্র ভাঙনে শেষ সম্বল বাপ-দাদার ভিটেটুকু হারাতে বসেছি। এক সপ্তাহে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এসময় কমপক্ষে ২৫টি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ২ শতাধিক পরিবার। অচিরেই ভাঙন রোধে দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তারা।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, কাথুরিয়া এলাকায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ ৫০টি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এলাকা পরিদর্শণ করেছেন। বর্তমানে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ায় জাজিরা উপজেলার পালেরচর ও বড়কান্দি ইউনিয়ন পদ্মার তীরবর্তী অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগের ফেলানো জিওব্যাগ ও জিওট্যাব সরে যাচ্ছে। নতুন করে আবার জিওব্যাগ ডাম্পিং করায় ভাঙন নিয়ন্ত্রনে এসেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন