পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্যুৎ বিতরন কোম্পানী-ওজোপাডিকো’র সাথে দেনা পাওনার দন্ধে গত দুদিন রাস্তার বাতি বন্ধ থাকায় বরিশাল মহানগরী অন্ধকারে ঢেকে আছে। রাত ৮টায় দোকানপাট বন্ধের পরে গোটা মহানগরীতে এক ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। নগরীর নিরাপত্তা নিয়েও যথেষ্ঠ উদ্বেগ উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নগর ভবন ও ওজোপাডিকো’র তরফ থেকে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধার পরে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তার বাস বাসভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীলদের একগুয়েমীকে দায়ী করেন। বকেয়া থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পরিশোধের পরেও সিটি করপোরেশনের রাস্তার বাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে জনস্বার্থে বিরোধী বলেও দাবী করে অবিলম্বে তা পূণর্বহালের দাবী জানান তিনি। বিষয়টিকে অমানবিক ও জনস্বার্থ বিরোধী বলেও মনে করছেন নগর ভবন ।
সিটি করপোরেশনের স্ট্রিট লাইট শাখার দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে, বকেয়া প্রায় ৫৯ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় অতি সম্প্রতি ৮০ লাখ টাকা পরিষোধের পরেও রাস্তার বাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওজোপাডিকো।
তবে এব্যাপারে ওজোপাডিকো’র তত্ববধায়ক প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানী মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে গত ৮ আগষ্ট বরিশাল সিটি করেপারেশনের কাছে বকেয়া প্রায় ৫৯ কোটি টাকা পরিষোধে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশ প্রাপ্তির পরে নগর ভবন থেকে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা পরিষোধ করা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিতও করা হয়েছে। বকেয়া আদায়ে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনের স্ট্রিট লাইটের প্রায় ৫৮টি সংযোগের মধ্যে মাত্র ১৫টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধা থেকে সিটি করপোরেশন নগরীর সব রাস্তার বাতি বন্ধ রেখেছে বলে দাবী করেন ওজোপাডিকো’র কর্মকর্তাগন। এ বাইরে ৪৮টি পানির পাম্পের সংযোগ ছাড়াও সিটি করপোরেশনের রাস্তার বাতির অন্য কোন সংযোগ এবং অফিস সহ বিভিন্ন স্থাপনার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।
প্রতিমাসে বরিশাল সিটি করপোরেশন রাস্তার বাতি ও পানির পাম্প সহ বিভিন্ন সংযোগের বিপরিতে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে থাকে। তবে গত প্রায় ৫ বছরে নগর ভবন থেকে ওজোপডিকো’র হোল্ডিং ট্যাক্স ও বিভিন্ন দাবী সমন্বয় সহ প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকার মত পরিষোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে বকেয়ার পরিমান প্রতিমাসেই বেড়ে এখন প্রায় ৬০ কোটির কাছে পৌছেছে।
বুধবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোটা বরিশাল মহানগরীর রাস্তাঘাট ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢেকে আছে। ফলে নগরীর নিরাপত্তা নিয়েও নগরবাসীর মধ্যে কিছুটা সংশয় কাজ করছে। মহানগর পুলিশ গোটা নগরীতে নজরদারী ও টহল যোরদার করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন