নিষেধাজ্ঞা শেষে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ না মিললেও প্রমান সাইজের পাঙ্গাস পেয়ে জেলেদের মুখে হাসি ফিরছে ।বরিশালের হিজলা সংলগ্ন মেঘনা ছাড়াও ভোলা ও বরিশালের মধ্যের তেতুলিয়া এবং কালাবদর সহ সংলগ্ন কয়েকটি নদীতে বিপুল পাঙ্গাস ধরা পড়ছে গত তিনদিন ধরে । গত দুদিনে শুধু বরিশালের মাছের মোকামে এক হাজার টনেরও বেশী পাঙ্গাস মাছ নিয়ে এসছে জেলেরা। প্রতিটি জালে ১৫ থেকে ২০টি করে পাঙ্গাস ধরা পড়েছে গত দুদিন । এসব মাছ ৫ কেজি থেকে ২৫ কেজি ওজনের।
সংখ্যায় কম হলেও একইসাথে মাঝারী থেকে বড় সাইজের ইলিশও ধরা পড়ছে। আর বেশীরভাগ জেলে অপেক্ষাকৃত ছোট ফাঁসের জাল ফেলায় ইলিশ পোনা- জাটকাও ধরা পড়ছে । ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পযর্ন্ত সারা দেশে জাটকা আহরন,পরিবহন ও বিপনন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আহরকৃত পাঙ্গাস পাইকারী মোকামে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গত দুদিন ২ কেজি সাইজের ইলিশের মণ ৮০ হাজার টাকা, ১২শ গ্রাম সইজের ৫০ হাজার, ১ কেজি সাইজের ৪৬ হাজার, রফতানিযোগ্য এলসি সাইজ ৩৮ হাজার এবং ৫শ গ্রাম থেকে সাড়ে ৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশ আহরনের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীর পোর্ট রোডে ইলিশ মোকাম যথেষ্ঠ প্রাণচাঞ্চল হয়ে ওঠে। এর আগের ২২দিন ইলিশ আহরন বন্ধ থাকায় মোকামের শ্রমিকদের অলস সময় কাটাতে হয়েছে। সেসময় পার করে ইলিশের সাইজ নির্ধারণ, ট্রলার থেকে মাছ নামানো এবং পরিমাপ দিয়ে তা বরফজাত সহ নানা কাজে কোলাহল মুখর মাছের মোকামগুলো। এরই মধ্যে মোকামে মাঝারী থেকে বড় সাইজের পাঙ্গাস নিয়ে জেলে, মৎস্য শ্রমিক ও মৎস্যজীবীদের মাঝে এনে দিয়েছে বাড়তি আনন্দ।
হিজলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে জাল ফেলে পোর্ট রোডে ট্রলার নিয়ে আসা জেলে মোজাম্মেল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় পর পরই ট্রলার নিয়ে নদীতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারা নদীতে জাল ফেলেন। তিন ঘন্টা পর জাল যখন উঠানো শুরু করেন, তখন তাদের কাছে মনে হয়েছে জাল ভর্তি ইলিশ । আনন্দে জাল উপরে আনার পর দেখেন বড় সাইজের পাঙ্গাস। এতে তারা আরো খুশি। মহান অল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জানিয়ে জেলে মোজাম্মেল বলেন, সবই তার দান। মোজাম্মেল জানায়, প্রথমবার তাদের এক জালে ছোট-বড় ২২টি পাঙ্গাস উঠেছে। এর সাথে বড় ও ছোট সাইজের ইলিশও ছিলো। তবে ইলিশের আশানুরূপ দেখা মেলেনি বলেও জানান তিনি।২০ কেজি ওজনের পাঙ্গাস পাবার কথাও জানান মোজাম্মেল।তিনবার জাল ফেলে ৫৩টি পাঙ্গাস তুলেছেন। শীত মৌসুমে পাঙ্গাস ধরা পড়ার বিষয়টি চীরাচরিত এবার কিছুটা আগেই পাঙ্গাস উঠবে তা তারা আশা করেননি।
ভোলার তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশ শিকার শেষে পোর্ট রোডে আসা জেলে কাঞ্চন ঘরামী বলেন, ‘২৫ বছরের ধারণা থেকে বলতে পারি, এতো পাঙ্গাস আর কখনও ইলিশের জালে ওঠেনি। গত রাতে আমাদের আশা ছিল জাল ভরে বড় সাইজের ইলিশ উঠবে। ২২ দিন জাল না ফেলায় প্রচুর ইলিশ থাকার কথা নদীতে। কিন্তু আমাদের জালে ইলিশ ওঠেনি, উঠেছে পাঙ্গাস । ইলিশের দুঃখ পাঙ্গাসে ভুলে গিয়েছি’।
বরিশালের পোর্ট রোডের আড়তদার জহির সিকদার সাংবাদিকদের জানান, প্রতিটি ট্রলার থেকে ইলিশের তুলনায় মাঝারী থেকে বড় সাইজের পাঙ্গাস এসছে বেশী। যারমধ্যে ৫ কেজি থেকে ২৫ কেজি ওজনের পাঙ্গাসও রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন