টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে গ্রুপ-২ এ নিজেদের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে হারল আফগানিস্তান। আফগানদের হারিয়ে আসরের সেমিফাইনালে খেলার ক্ষীণ আশা বাঁচিয়ে রাখলো স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। গতকাল অ্যাডিলেডে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে অজিরা মাত্র ৪ রানে হারায় আফগানিস্তানকে। ম্যাচের শেষ ওভারে খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৮ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে জয়ের জন্য ১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৭ উইকেটে ১৬৪ রান তুলতে নির্ধারিত ওভার শেষ করে আফগানিস্তান। হাঁফ ছেড়ে বাঁচা এই জয়ে পাঁচ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের সমান ৭ পয়েন্ট পেয়ে রানরেটে পিছিয়ে থেকে তালিকার দ্বিতীয়স্থানে অস্ট্রেলিয়া। এই গ্রুপে সেমির দৌড়ে নিউজিল্যান্ডে সঙ্গে আছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। এদিন একই ভেন্যুতে দিনের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ৩৫ রানে হারিয়ে সবার আগে শেষ চার নিশ্চিত করেছে কিউইরা। এখন ঝুলে আছে গ্রুপের দ্বিতীয় দলের ভাগ্য। এই গ্রুপ থেকে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিতীয় দল হিসেবে কে যাবে সেমিফাইনালে, তা নির্ধারণ হবে আজ। এদিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচ। এ ম্যাচে জিতলে ইংল্যান্ডও পাবে ৭ পয়েন্ট। এ ক্ষেত্রে রানরেটের হিসাব হবে। আর ইংলিশরা হারলে শেষ চারে যাবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তবে অজিদের কাছে আফগানদের এই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার।
অ্যাডিলেডে কাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাটে ভালো শুরু পায় আফগানিস্তান। পাওয়ার প্লে-তে দুই উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান তোলে তারা। ২.৩ ওভারে দলীয় ১৫ রানে ওপেনার উসমান গণি মাত্র ২ রান করে ফিরলে গুরবাজকে ভালো সঙ্গই দেন ইব্রাহিম জাদরান। ৫.৩ ওভারে দলীয় ৪০ রানে গুরবাজ আউট হলে ইব্রাহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন গুলবাদিন নাইব। গুরবাজ ফেরার আগে ১৭ বলে দু’টি করে চার ও ছয়ের মারে করেন ৩০ রান। ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানদের রান তাড়ার আশা অনেকটা সময় বাঁচিয়ে রেখেছিলেন গুলবাদিন নাইবই। তার ব্যাটে চড়েই ১৩ ওভারে ২ উইকেটে ৯৯ রান তুলেছিল আফগানরা। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার করা ১৪তম ওভারে ঘুরে যায় ম্যাচ। নাইব ২৩ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৯ করে ম্যাক্সওয়েলের থ্রোতে রানআউট হন। অ্যাডাম জাম্পা ওই ওভারে ইব্রাহিম জাদরান (৩৩ বলে ২৬) ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের (২ বলে ০) উইকেট তুলে নেন। এতে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৯৯ থেকে ৬ উইকেটে ১০৩ রানে পরিণত হয়। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলে শেষ দিকে এসে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন রশিদ খান। চার আর ছয়ের মারে স্টেডিয়ামের গ্যালারি গরম করে ফেলেছিলেন এই অলরাউন্ডার। রশিদের মারমুখী ব্যাটিংয়ের পরও জয়ের জন্য শেষ ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। স্টয়নিসের ওই ওভারে রশিদ দুই চার এবং এক ছক্কা হাঁকালেও দলকে জেতাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২৩ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রানের ঝড় তুলে অপরাজিত থাকেন রশিদ খান। চার ওভারে জাম্পা ২২ রানে এবং জস হ্যাজেলুড ৩৩ রানে পান ২টি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে টপঅর্ডারে ঝড় তুলেন মিচেল মার্শ। শেষটা করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু এই দুজন ভালো খেললেও অস্ট্রেলিয়ার পুঁজিটা প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি। শেষ ৫ ওভারে মাত্র ৩৫ রান তোলে অজিরা, হারায় ৪ উইকেট। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করে স্বাগতিক দল। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ১৮ বলে পাঁচ চারের মারে করেন ২৫। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৫২ রান উঠলেও ৩ উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। দারুণ খেলছিলেন মিচেল মার্শ। কিন্তু ৩০ বলে তিন চার ও দুই ছয়ে ৪৫ করার পর তিনিও আউট হয়ে যান। ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে অজিরা। সেখান থেকে স্টয়নিস আর ম্যাক্সওয়েল যোগ করেন ২৯ বলে ৫৩ রান। ২১ বলে দুই ছক্কায় ২৫ করে স্টয়নিস রশিদ খানের শিকার হলে ভাঙে জুটি। তবে ম্যাক্সওয়েল ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলেন। ৩২ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
নাভিন-উল হক চার ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। চার ওভারে ২৯ রান খরচায় ২ উইকেট পান ফজলহক ফারুকি। হার না মানা ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
আজকের খেলা
ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা, দুপুর ২টা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন