রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শেষ সময়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মেলার ২২তম দিনে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে। জমজমাট পদচারণা থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতার পাল্টাপাল্টি অভিযোগও কম নয়। তবে মেলায় পণ্যমূল্যে ছাড় পেয়ে বেড়েছে বেচাকেনা। দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখছেন সবগুলো স্টল। ব্যবসায়ীরাও ছাড় দিতে শুরু করায় দর্শনার্থীরা এখন কেনাকাটা শুরু করেছেন। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিলো ১৩০ টাকার পণ্যের স্টলে। এদিকে মেলার বাইরের পরিবেশ নিয়ে বিব্রত ও হয়রানির কথা জানালেন দর্শনার্থীরা।

২২তম দিনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় শেষ ১০ দিনে ছাড়ের আশায় সরকারি ছুটির দিন ছাড়াও প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। গতকাল রোববার দিনভর মেলায় ছিলো লক্ষাধিক লোকের সমাগম। তবে রাজধানী থেকে আসা অনেক দর্শনার্থী বিআরটিসি বাস ও স্থানীয় সিএনজি, অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন।

মেলার প্রবেশদ্বারে দায়িত্বরত হাসিব মিয়া বলেন, মেলার অভ্যন্তরীণ প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলো ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। শীতের কাপড়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। ফলে বেড়েছে বেচাকেনা ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি। মেলার প্রবেশদ্বার ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন রাজিব বলেন, এবার মেলার শুরুতে বেচাকেনা কম হলেও শেষ মুহূর্তে বেড়েছে। এতে প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।
বরাবরের মতোই ক্রেতা পেয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়োজিত কর্মীরা তাদের স্টল পরিদর্শনের আহŸান জানাচ্ছেন। কেউ কেউ লোকসান কাটাতে ছাড় দেয়া শুরু করেছেন। এ ছাড়ের পরিমাণ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এখনো পণ্যমূল্য নিয়ে রয়েছে অভিযোগ।

মেলায় ঘুরতে আসা মুড়াপাড়ার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, মেলার সবকিছু ভালো লাগলো তবে পণ্যমূল্য গরীবের জন্য নয়। ভেতরে সব পণ্যের দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে। ক্রয় করতে অনেকেই হিমসিম খাচ্ছে।
মেলায় থাকা ফুড বাংলো নামীয় খাবার হোটেল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন ও আয়োজন আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। তবে স্টল পেতে বেশি টাকা খরচ হওয়ায় বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ও খাবারের দাম একটু বাড়তি রাখছেন। যার ফলে কিছু বিষয়ে ক্রেতা ও দর্শনার্থীর অভিযোগ থাকতে পারে।
মেলায় ঘুরতে আসা মধুখালীর এক বাসিন্দা বলেন, পণ্যগুলোর বেশিরভাগ বেশি দাম হাঁকানোর কারণে বিক্রি কম হচ্ছে। আবার বিদেশি পণ্য বললেও বিদেশি মনে হয় না। শেষ মুহূর্তে ছাড় দেয় বেশি। এ ছাড় যদি মেলার শুরুতে দিতো তাহলে বিক্রি বেশি হতো। কারণ মেলার প্রথম দিকে যারা আসেন তারা অনুৎসাহ পাচ্ছেন।

মেলা ঘুরতে আসা হারিন্দার বাসিন্দা এক দর্শনার্থী বলেন, এবার মেলায় আগত দর্শনার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় লোকজন আসছে বেশি। অন্যদিকে বিআরটিসি বাসের ভাড়া আর স্থানীয় পরিবহনের সব ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ায় ভোগান্তিও রয়েছে।

এদিকে মেলার মেয়াদ বাড়ানের দাবি মৌখিক হলেও এখন পর্যন্ত লিখিত আবেদন পাননি মেলার পরিচালক ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, মেলা আগের তুলনায় বেশ জমজমাট হয়েছে। তবে মেলার সময় বাড়ানো নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
মেলায় দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবক টিম লিডার আব্দুল আজিজ বলেন, মেলায় আসা দর্শনার্থীদের তথ্য ও নিরাপত্তা জনিত সহায়তায় ১৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এবারের মেলায় শিশুপার্ক ছিলো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পরিবার পরিজন নিয়ে আসা লোকদের উৎসবের মতো আমেজ করতে দেখা গেছে। ফলে মেলার আয়োজন সফল বলে মনে করি।

মিরপুর থেকে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, মেলায় যেসব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে তার চেয়ে কমদামে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে পাওয়া যায়। ফলে মেলা ঘুরে দেখলাম কিন্তু ক্রয়ের আগ্রহ পেলাম না। এ সময় তিনি আরো বলেন, টিকেট কাটতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কিছুটা হয়রান হতে হয়েছে। তবে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করতে পেরেছি।

আলমপুর এলাকার বাসিন্দা শরীফ মিয়া বলেন, স্থানীয় লোকদের মেলায় প্রবেশের একমাত্র রাস্তা মুশুরী থেকে হাবিন নগর ৪ কিলোমিটার পুরোটাই অচল। এ সড়কে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে দিগুণ তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে যা ভোগান্তির শামিল। এছাড়াও গত বছর যে পণ্যের দাম ৯৯ টাকা ছিলো এবার তা ১৩০ টাকা করেছে। তবে উৎসবে পরিণত হয়েছে পুরো মেলা।
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন, বাণিজ্য মেলার আসর রূপগঞ্জে হওয়াতে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। এবার গতবারের তুলনায় দর্শনার্থী হচ্ছে বহুগুণ বেশি। তিনি আরো বলেন, এতদিন স্কুলে ভর্তি নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় লোকজন কম হলেও এখন জমে উঠেছে মেলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন