রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মূল্য ছাড়ের আশায় শেষ মুহূর্তে ভিড়

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় হকার ও ক্রেতাবেশে সক্রিয় পকেটমার চক্র

মো. খলিল সিকদার , রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মেলার ভেতর বাইরে হকার আর দর্শনার্থীবেশে সক্রিয় রয়েছে পকেটমার চক্র। তাদের হাতে নগদ টাকাসহ ক্রয় করা মালামাল খুইয়েছেন গত ২৮ দিনে শতাধিক ক্রেতা ও দর্শনার্থী। আর এমন অভিযোগ পেয়ে এ পর্যন্ত ৫০ জনের অধিক পকেটমার নারী ও পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে শেষ মুহূর্তে মেলার পণ্যমূল্যে ছাড়ের আশায় আর মেলার শেষ সময়ের সরকারি ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বেচা বিক্রি হয়েছে হরদম। তাই দর্শনার্থীদের মতে জমে ওঠেছে বাণিজ্যমেলার আসর। তবে মেলার প্রবেশ পথে উচ্চ শব্দে বাজানো বক্সের বিজ্ঞাপনে বিব্রত পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন দর্শনার্থীরা।
গতকাল শনিবার মেলা ঘুরে দেখা যায়, উপচে পড়া ভিড়ের চিত্র। তবে মেলার অভ্যন্তরে হকার উৎপাতে বিরক্ত হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। আবার অনেকের পকেট থেকে টাকা চুরির অভিযোগ ছিল। এসব নানা কারণে মেলার পরিবেশ বিনষ্টের অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, বাণিজ্যমেলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় ছদ্মবেশি প্রতারক ও পকেটমারদের ধরতে সক্ষম হয়েছি। কিছু নারী ও শিশু এমন পকেটমার চক্রের সদস্য। তারা মেলায় দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ছলে বলে সুযোগ বুঝে পকেট বা ভ্যানিটি ব্যাগ কেটে টাকা নিয়ে যেত। মেলায় দায়িত্বরত পুলিশ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্লার দেয়া তথ্যে, এ পর্যন্ত মেলা থেকে ৪০ জনের অধিক অপরাধীকে নানা অভিযোগে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দেয়া হয়েছে। গত দু’দিনে ১২ জন নারীসহ পকেটমারকে আটক করা হয়েছে। চক্রটি যেদিন ভিড় বেশি থাকে, সেদিনই প্রকৃত ক্রেতাদের কাছ থেকে পকেট কেটে টাকা নিয়ে নেয়।
এদিকে মেলায় প্রায় শেষ সময়ে নিত্য পণ্যে ছাড় ঘোষণা করায় শেষ মুহূর্তে জমে ওঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। তবে মেলার প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্পটে ব্যবসায়ী ও আয়োজকদের বসানো বক্সের উচ্চ শব্দে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ছিলেন দর্শনার্থীরা। তাই আন্তর্জাতিক মেলায় আন্তর্জাতিক মানের যথেষ্ট অভাব থাকার অভিযোগ করেন অনেকে। মেলার বাইরে ও ভেতরে হকারদের উৎপাত, পথ শিশুদের ভিক্ষার চিত্র আর উচ্চ শব্দে বক্সের তীব্রতা কোনটাই আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে না। কর্তৃপক্ষের এসব ভাবা দরকার বলে মনে করেন মেলায় আসা দর্শনার্থী জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন।
মেলায় ঘুরতে আসা গুতিয়াবোর বাসিন্দা নারগিস আক্তার বলেন, মেলার শেষ সময় ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যে ছাড় ঘোষণা করায় বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতা। মেলার শুরুতে যেসব পণ্যের দাম হাঁকা হতো ৫শ’ টাকা, শেষ ১০ দিনে একই পণ্যের দাম ধরা হয়েছে ৩শ’ টাকা। তবুও দাম যেন একটু বেশি।
মেলায় ঘুরতে আসা কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আমেনা আক্তার লিপি বলেন, মেলার শুরুতে ছাড় দিয়ে জমানো উচিত। সবাই জেনে গেছে যে শেষ মুহূর্তে ছাড় দেয়া হয়। আর তাই শেষবেলায় ভিড় থাকে বেশি। ফলে যারা দূর জেলা থেকে প্রথমদিকে মেলায় আসেন। তারা বিরক্ত নিয়ে ফিরে যান। মেলার প্রবেশদ্বার ইজারাদার কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ভ‚ঁইয়া বলেন, এবার মেলা জমজমাট হয়েছে। প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন হয়েছে। তবে অধিক লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে মাইক ও বক্সের ব্যবহার স্বাভাবিক। আর পথশিশুদের মানবিক বিবেচনায় মেলার একপ্রান্তে স্থান দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এবার মেলায় সাধারণ, প্রিমিয়াম, সংরক্ষিত, ফুড স্টল ও রেস্তোরসহ ১৩ ক্যাটাগরিতে স্টল রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এবার দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৩৩টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি। দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ১০টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১৭টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। এছাড়া গতবার শিশুপার্ক ছিল না, এবার মিনি শিশুপার্ক রয়েছে। যদিও এটি বেসরকারি উদ্যোগে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন