শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

উন্নয়ন খোঁড়াখুঁড়ির ভোগান্তিতে নগরবাসী

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়িতে ধুলোয় মিশে যাচ্ছে ঢাকার দুই মেয়রের ক্লিন ও গ্রিন ঢাকা। একই সঙ্গে নগরবাসীর ভোগান্তিও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। উন্নয়নের নামে পুরো রাজধানীতেই ধীরগতিতে চলছে রাস্তা, ফুটপাথ, ড্রেন ও আইল্যান্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীতে একই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংখ্যাক রাস্তা, ফুটপাথ, ড্রেন ও আইল্যান্ড ভেঙে নতুন করে নির্মাণের কাজ চলছে। গত অর্থ বছরের নির্মাণ ও সংস্কার করা রাস্তা, ফুটপাথ, আইল্যান্ড, ড্রেন এবং গলিপথগুলো আবার উন্নয়নের নামে ভেঙেচুরে একাকার করে ফেলা হয়েছে। আবার কখনো বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের নামে রাস্তা এবং গলিপথ খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ঢাকা ওয়াসার জলদিয়া প্রকল্পের পানির লাইন টানার পাশাপাশি ড্রেনের পুরনো পাইপ সরানো এবং নতুন পাইপ প্রতিস্থাপনের কাজটিও চলছে একই সঙ্গে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর গুলশানে পাকিস্তান হাইকমিশনের সমনে থেকে গুলশান-১ পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশের ফুটপাথ ভেঙে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় আইল্যান্ড শক্ত করার নামে আইল্যান্ডে রড ঢালাই দিয়ে ভাঙা অবস্থাই টানা ছয় মাস ফেলে রাখা হয়। একইচিত্র দেখা যায়, শ্যামলি থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবন, গনভবনের পাশের রাস্তাতেও। সেখানেও ফুটপাথ ও ড্রেন নির্মাণের কাজটিও চলছে ধীরগতিতে। নগরীর অন্যান্য এলাকার রাস্তাগুলোরও এরকম বেহাল অবস্থা।
জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনই উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে অনেক এলাকায় বেশ কিছু ভালো রাস্তা, ফুটপাথ ও গলিপথ কেটে ও ভেঙে বেহাল করে রেখেছে। এতে ওইসব এলাকায় ধুলোবালি আর যানবাহনের কালো ধোয়া মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ভয়াবহ যানজট। এ অবস্থায় নগরবাসী বাধ্যহয়ে এ অসহনীয় ও দূষিত পরিবেশে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়েই চলা ফেরা করতে হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটির গুলশান, বনানী, বারিধারা, কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, রায়েরবাজার, মোহাম্মদপুর, আদাবর, পীরেরবাগ, পাইকপাড়া, গাবতলী, মিরপুর, মনিপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর ১০, ১১, ১২ এবং পল্লবী প্রভৃতি এলাকায় কম বেশি খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
এছাড়াও মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ করতে গিয়ে পুরো এলাকা এখন ধূলির নগরীতে পরিণত হয়েছে।
বাংলামটর, মগবাজার, মালিবাগ, কাওরানবাজার এফডিসির সামনের রাস্তা, তেজগাঁও সাতরাস্তা, রামপুরা, চৌধুরীপাড়া, শান্তিনগর, কাকরাইল প্রভৃতি এলাকা নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের ধুলোবালি এবং যানবাহনের বিষাক্ত কালো ধুলায় একাকার। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতেও একসঙ্গে তিন শতাধিক রাস্তা, ফুটপাথ, ড্রেন ও গলিপথের সংস্কার ও নির্মাণের নামে চলছে ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি। এসব কাজ আর শেষ হতে চায় না। টিকাটুলি, জুরাইন, খিলগাঁও, বাসাবো, ধোপখোলা, আজিমপুর, লালবাগ, শ্যামবাজার, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ওয়ারী, নারিন্দা, স্বামীবাগ, গোলাপবাগ প্রভৃতি এলাকায় চলছে এসব উন্নয়নমূলক কাজ।
ঢাকার দুই মেয়রই রাজধানীতে সেবাদানকারী সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিক সভা করেছেন। তারা সমন্বয় বজায় রেখে শুকনো মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করার বিষয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ওই সিদ্ধান্তকে সামনে রেখেই এবার ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার আহ্বান এবং কার্যাদেশ দেয়া হয়।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কুদরাতউলাহ বলেন, নগরীর উন্নয়নমূলক ৩২টি কাজের চলতি অর্থবছরে ই-টেন্ডার আহ্বান করা হয়। দুই মাস আগে ২৭টি কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। মিরপুর এলাকায় উন্নয়ন কাজের পাঁচটির বিষয়ে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি টেকনিক্যাল কারণে। তবে এবিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি তিনি।
খোঁড়াখুঁড়িতে ধীরগতিতে নগরবাসীর দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্ষাকাল শুরুর আগেই কাজগুলো শেষ করতে গিয়ে এবার একত্রে এতো খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে। উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে কিছু রাস্তা কাটতে হচ্ছে। এ কারণে নগরবাসীকে ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন