কামরুল হাসান দর্পণ
ভারত বাংলাদেশকে নিয়ে আর কী করতে চায়, এমন একটি প্রশ্ন সচেতন মহলে ঘোরাফেরা করছে। এ প্রশ্ন এসেছে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি চুক্তি হওয়া না হওয়ার বিষয় নিয়ে। চুক্তিটি হচ্ছে, ভারত বাংলাদেশের সাথে একটি ‘সামরিক সহযোগিতার চুক্তি’ করতে চায়। এ চুক্তির অর্থ হলো, ভারত বাংলাদেশে অস্ত্র সরবরাহ থেকে শুরু করে সামরিক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করবে। চুক্তিটি করার জন্য ভারত এক প্রকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। যেন চুক্তিটি করতে না পারলে তার বিপুল ক্ষতি হয়ে যাবে। এ ক্ষতি সে পুষিয়ে উঠতে পারবে না। মূলত ভারতের মাথা খারাপ হয়ে যায়, গত বছর চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের দুটি সাবমেরিন কেনার পর থেকে। সে অনেকটা আঁতকে ওঠে এবং কল্পনাও করতে পারেনি, বাংলাদেশ দুটি সাবমেরিন কিনতে পারে বা কেনার সামর্থ্য রাখে। সে তড়িঘড়ি করে বা অনেকটা উপযাচক হয়েই তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকরকে গত নভেম্বরে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সফরে পাঠায়। সে সময় থেকেই ভারত উঠেপড়ে লাগে বাংলাদেশের সাথে একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি করার জন্য। একের পর এক প্রস্তাব এবং প্রচ্ছন্ন একটা চাপ দিতে থাকে যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর পিছিয়ে যায়। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রধানমন্ত্রী সময় নেন সুষ্ঠুভাবে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য। কারণ এ চুক্তি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং এর সাথে দেশের স্বার্থ ও মানুষের সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে আছে। এ ধরনের চুক্তি দেশের মানুষ যে মানবে না, তিনি তা ভালোভাবেই জানেন। এখন ভারত চেয়ে আছে, আগামী ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দিকে। তার ইচ্ছা, ওই সফরেই কাজটি সেরে ফেলতে। সে এতটাই ক্রেজি হয়ে উঠেছে যে, বাংলাদেশের সাথে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি এড়িয়েই নতুন এই চুক্তি করতে চাচ্ছে। ভাবখানা এমন, যেন সে মহাবিপদে পড়েছে এবং এ বিপদ থেকে আগে তাকে বাঁচাও, তারপর অন্যসব দেখা যাবে। এমন মামার বাড়ির আবদার এখন বিশ্ব রাজনীতিতে দেখা না গেলেও ভারত তা করেই চলেছে। এ থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, সে আমাদের কোন দৃষ্টিতে দেখে। সে মনে করে, তার সব চাওয়া পূরণ করার জন্যই আমাদের জন্ম হয়েছে এবং আমাদের তা পূরণ করতে হবে। আমরা তা করেছিও। এ পর্যন্ত ট্রানজিট চুক্তি না হলেও মানবিক দিক বিবেচনায় তার এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে পণ্য পরিবহনের যত আবদার করেছে, নিজেদের ক্ষতি করেও আমরা তা পূরণ করেছি। তবে আমাদেরও যে ন্যায্য ও ন্যূনতম কিছু চাওয়া আছে, সেগুলো পূরণ করার কথা আসলেই তার নানা বাহানা আর অজুহাতের শেষ থাকে না। এক তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রেই কত অজুহাত যে দেখানো হচ্ছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
দুই.
ভারত এতদিন মনে করেছিল, বাংলাদেশ তার কথার বাইরে যাবে না। সে যেভাবে পরামর্শ বা ফর্মুলা দেবে সেভাবেই সব কিছু মেনে নেবে। তার এ বিশ্বাস জন্মেছে, বিনা প্রশ্নে এ পর্যন্ত তার চাওয়া পূরণ করে দেয়ায়। এটা বাংলাদেশ সরকারের এক ধরনের একতরফা উদারতা। এই উদারতাকেই ভারত দুর্বলতা ভেবে বসে আছে। আমরা যে একটা স্বাধীন দেশ, এটা সে ভুলে থাকতেই পছন্দ করে। তার এ ধারণা যে ভুল, তা ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ। আমাদেরও যে শক্তি সামর্থ্য, আত্মমর্যাদা এবং স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে, এ বিষয়টি ভারতকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে। দেখিয়ে দেয়া হয়েছে, তুমি যেমন আমার বন্ধু তেমনি চীন এবং অন্যান্য দেশও আমার বন্ধু। আমাদের কারো সাথে বৈরিতা নেই। আমরা কারো সাথে দাদাগিরি ফলাতে যাই না। কাজেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং আমাদের প্রয়োজনের কারণেই চীনের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনা হয়েছে। আমরা রাশিয়া থেকে, আমেরিকা থেকে সামরিক সরঞ্জামাদি ক্রয় করছি। ভারত থেকে কি আমরা অস্ত্র ক্রয় করতে পারতাম না? পারতাম, যদি ভারত নিজেই অস্ত্র তৈরিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতো। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের ওপর যদি কখনো হুমকি বা হামলা হয়, তবে তা ভারতই করতে পারে। এ বাস্তবতা সামনে রেখে যদি আমরা ভারতের কাছ থেকে অস্ত্র কিনি, তবে আমাদের অস্ত্র ভাÐারের রকমফের কী এবং তা কতটুকু কার্যকর, তা ভারতের কাছে পরিষ্কার হয়ে থাকবে। অর্থাৎ কখনো যদি মোকাবেলার মতো পরিস্থিতি হয়, তবে ভারতের অস্ত্রসহ মোকাবেলা করতে হবে। এতে ভারতেরই সুবিধা। কারণ সে ভালো করেই জানে, এ অস্ত্রের হামলা কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে। তাই কৌশলগত কারণে ভারতের কাছ থেকে কোনো ধরনের সামরিক সহায়তা নেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় এবং উচিতও নয়। ভারত আবদার করেই যাচ্ছে, আমরা যেন তার কাছ থেকেই সামরিক সহযোগিতা ও অস্ত্র ক্রয় করি। ভারতের এ ধরনের আবদার মেটানো বাংলাদেশের পক্ষে অসম্ভব। ভারত ভালো করেই জানে, বাংলাদেশ এখন সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিতে অনেক দূর এগিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান শক্তি। আর এর তিন দিকে ভারত। স্বাভাবিকভাবে ভারত চাইবেন, তার পাশে আরেকটি দেশ শক্তিশালী এবং তার প্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে উঠুক। তার মনে যদি এ মতলব থাকে নেপাল ও ভুটানের ওপর তার যে প্রভাব, তদ্রæপ বাংলাদেশেও একই প্রভাব বিস্তার করা হবে, তবে এটা তার মস্ত বড় ভুল হবে। কারণ ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনচেতা এবং কোনো ধরনের আগ্রাসী শক্তিকে সহ্য করে না। তারা জান দেবে, তবু কারও কাছে মাথা নোয়াবে না। জনগণের এ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিশ্চয়ই ভারতের জানা। জানা বলেই সে কৌশলে বাংলাদেশের ওপর প্রভাব বিস্তার ও তার কথা শোনার আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তার ওপর নির্ভরশীল একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে। তবে তার এ কৌশল বাংলাদেশের সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনগণ ভালো করেই জানে। আমাদের শক্তি ও সামর্থ্যরে ওপর সকলেরই আস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সামরিক শক্তিতে দক্ষিণ এশিয়ায় চতুর্থ এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ৩৩ দেশের মধ্যে ১৮তম। বিশ্বের ১২৬ দেশের মধ্যে ৫৩। আমাদের সামরিক শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক সম্প্রতি বলেছেন, আমাদের সেনাবাহিনী হবে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ও শক্তিশালী বাহিনী। তার এ কথা বাস্তবসম্মত। কারণ ইতোমধ্যে আমাদের সামরিক বাহিনীর পরিসর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আরও প্রসারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর এই উন্নতি ও অগ্রগতি ভারতের ভালো লাগার কথা নয়। তাই সে সামরিক সহযোগিতা চুক্তির নামে প্রচ্ছন্নভাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে ঢুকতে চাইছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তিন.
বাংলাদেশ যে ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে, তা বিশ্বের বৃহৎ দেশগুলো ওয়াকিবহাল রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে বিশ্ব রাজনীতি, সমরনীতি ও অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে, তাতে বাংলাদেশ এখন অন্যতম ‘কী ফ্যাক্টর’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। ফলে বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। চীনের যে ‘ওয়ান বেল্ট অ্যান্ড ওয়ান রোড’ বা সিল্ক রুট নীতি, তাতে বাংলাদেশ হয়ে আছে ‘পার্ল অব স্ট্রিং’। অর্থাৎ মালার কেন্দ্রবিন্দু ‘লকেট’ হয়ে আছে। এই লকেট বাদ দিয়ে কোনোভাবেই চীনের পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়া কঠিন। আবার চীনের এই প্রভাব বিস্তারকে ভালোভাবে নিতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ চীনের। চীনকে যদি কখনো মোকাবিলা করতে হয়, তবে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা তার জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক এলাকা। অন্যদিকে ভারতের জন্য বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ তিন কারণে। এক. চীনের সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা। দুই. পাল্টা আক্রমণ করা। তিন. তার পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোকে তার মধ্যে ধরে রাখা। উল্লেখ করা প্রয়োজন, বঙ্গোপসাগর-ভারত মহাসাগরের সমুদ্র সীমায় হওয়ায় নিরাপত্তা কৌশলগত দিক থেকে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সমরনীতিতে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর কাছে বাংলাদেশ এখন কাক্সিক্ষত ডেসটিনেশন। ভৌগোলিক এ অবস্থান কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক শক্তি। বাংলাদেশের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে, সমুদ্র পথে এ অঞ্চলে বিভিন্ন দেশের আগমন-নির্গমনের বিষয়টি। এ বিষয়টি ভারতের ভালো লাগার কথা নয়। বাংলাদেশ এতদাঞ্চলে ‘কী পয়েন্ট’ হয়ে উঠবে, এটা সে মানতে পারছে না। তার এই মানতে না পারার প্রকাশ ঘটাচ্ছে নানাভাবে আমাদের সাথে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি করার জন্য উঠেপড়ে লাগার মূল কারণও এটি। তা যদি করতে পারে, তবে আমরা যেমন তার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকব, তেমনি বিশ্ব রাজনীতি ও সমরনীতিতে আমাদের অবস্থানকে সে নিজের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। এ প্রেক্ষিতে ভারতের সাথে কোনো ধরনের সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি করা কোনোভাবেই উচিত হবে না। এতে নিজের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ভারতের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা রয়েছে। ভারত ইতোমধ্যে তার অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সহযোগিতার নামে কী ধরনের আচরণ ও নিয়ন্ত্রণ করছে, তা আমরা সকলেই জানি। কাজেই জেনেশুনে ও বুঝে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হতে পারে এমন কোনো চুক্তি ভারতের সাথে হতে পারে না। মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী যথার্থই বলেছেন, ভারত নিজেই বিদেশ থেকে অস্ত্র কিনছে। তাদের থেকে আমরা কেন অস্ত্র কিনব আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করি, তাতে অনেক আধুনিক অস্ত্র কেনার সক্ষমতা রাখি। এ ধরনের চুক্তি হলে বাংলাদেশ তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, ভারতের সাথে যে ২৫ বছরের চুক্তি হয়েছিল তা প্রকাশের পর জাতি স্তম্ভিত হয়েছিল। এবার যেন এ ধরনের দেশবিরোধী চুক্তিতে যাওয়া না হয়। আমার বিশ্বাস, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক দূরদর্শী, তিনি ভারতের চুক্তির ফাঁদে পা দেবেন না। দেশের প্রধান বিরোধী দলও এ চুক্তির বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আমরা এমন একটি ভূ-অবস্থানে রয়েছি যার তিন দিকে একটি পরম বন্ধুরাষ্ট্র। যে দেশের তিন দিকে বন্ধু রাষ্ট্র আছে, সেখানে প্রতিরক্ষার প্রশ্নটি উঠবে কেন? সেই প্রতিরক্ষা দেয়ার জন্য বন্ধুরাষ্ট্র কেন এত উৎসুক হয়ে উঠেছে? বন্ধুরাষ্ট্র হলে তো প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রশ্ন আসে না। স্বাধীন স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে আমাদের নিরাপত্তা কেন ভারতের ওপর নির্ভরশীল হবে? তিনি বলেন, এ ধরনের নানা প্রক্রিয়া ও তামাশার মধ্য দিয়ে সিকিম ভারতের অঙ্গীভূত হয়ে গেছে। ভুটান অঙ্গীভূত না হলেও ভারতের করদমিত্র রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ভারতের কারেন্সি সেখানে চলে, ভারতের সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান করে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অনেক শক্তিশালী, আমাদের সেনাবাহিনী আছে, বিমান বাহিনী আছে, নৌবাহিনী আছে। এখানে কিসের নির্ভরশীলতা, কার জন্য নির্ভরশীলতা, কিসের চুক্তি? দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা যদি ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়, ভারতের কথা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা নীতি যদি গ্রহণ করতে হয়, তাহলে এদেশের স্বাধীনতা থাকবে না। এ ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী চুক্তি হলে এদেশের জনগণ মানবে না, নিরাপত্তা বাহিনী মানবে না, কেউ মানবে না। তারা প্রতিরোধে এগিয়ে যাবে।
চার.
ভারত যে সামরিক সহযোগিতা চুক্তির জন্য অধীর হয়ে আছে, তা বাংলাদেশের সচেতন মানুষ কোনোভাবেই সমর্থন করছে না। কেন সমর্থন করছে না, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও আছে । অনেকের মধ্যে এমন মনোভাবও গড়ে উঠেছে, তিস্তা চুক্তি না হলেও কিছু যাবে আসবে না। তবু সামরিক সহযোগিতা চুক্তির মতো সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ কোনো চুক্তি করা যাবে না। দেশের স্বাধীন অস্তিত্বই যদি না থাকে, তবে নদীর পানি থাকা না থাকা একই কথা। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের মানুষের এই সেন্টিমেন্ট নিশ্চয়ই সরকার বোঝে। ইতোমধ্যে ভারতের প্রতি অতি বন্ধুত্বের প্রকাশ স্বরূপ তার মর্জি মতো অনেক কিছুই দেয়া হয়েছে। তার কোনো আবদারই প্রত্যাখ্যান করা হয়নি। দেশের মানুষ এগুলো মুখ বুজে সহ্য করেছে। এখন যদি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হতে পারে এমন চুক্তি করা হয়, তবে তা কেউই মানবে না। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে এ ধরনের চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী হবেন না। নিশ্চয়ই তিনি দেশের কল্যাণের কথা চিন্তা করে ক্ষতিকারক কোনো চুক্তিতে সম্মত হবেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন