স্টাফ রিপোর্টার : নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমরা ভারতের সাথে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু নিজেদের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে নয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের সময় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীকে এ আহ্বন জানিয়েছেন।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যের পরিচালক ডা. জাফরুল্লা চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মহাসচিব আবদুল মালেক রতন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জোনায়েদ সাকি, কমরেড সাইফুল হক প্রমুখ।
ডা. জাফরুল্লা চৌধুরী বলেন, সুজাতা সিং ও সুষমা স্বরাজরা মিলে ভারত শেখ হাসিনাকে ক্ষমায় এনেছিলেন। বর্তমানে তার ক্ষমতা কতটুকু আছে সেটা নিশ্চিত হতে চায় ভারত। তাই প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই গত ৩০ মার্চ এসেছিলেন ভারতের সেনাপ্রধান। ‘র’ এ দেশে বর্তমানে ভালোভাবেই অবস্থান নিয়েছেন সেটা প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। তার সত্যতা কতটুকু সেটা সরেজমিন স্বচক্ষে দেখতে সেনাপ্রধান এসেছেন। তিনি এসে দেখলেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সত্যিই খুব ক্ষমতাবান।
গণস্বাস্থ্যের পরিচালক বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ আদালত রাজশাহী, সিলেট ও হবিগঞ্জের নির্বাচিত তিনজন মেয়রকে কাজে যোগ দিতে বলেছিলেন। কাউকে যোগদানের আধা ঘণ্টার মধ্যে আবার কাউকে যোগদানই করতে দেয়া হয়নি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সরকার তাদের আবার বরখাস্ত করে দেন। তার মেসেসটা হলো তোমাকে আমি যা দেবো তা রক্ষা করতে পারব। এতে জনগণ বা হাইকোর্ট কারো কোনো কথা চলবে না।
তিনি বলেন, ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে তিনি সাক্ষাতের সময় বলেছেন, আমার দেশের মাটিতে তোমার দেশের কোনো স্বাধীনতাকামীর (বিচ্ছিন্নতাবাদীর) স্থান হবে না। আজকে আমরা সবাই জানি, কাশ্মিরে যে অবস্থা চলছে তা ১৯৭১ সালে আমাদের দেশ (পূর্ব পাকিস্তানের) যে অবস্থা ছিল ঠিক একই অবস্থা এখন সেখানে চলছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে অনেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের সহযোগিতার জন্য তাদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার কথা স্মরণ করে দিয়েছে। আমিও সাত মাস ভারতীয় জনগণের আতিথেয়তা নিয়েছিলাম। তাই আমি তাদের সেই সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ। আমাদের সরকারও সবসময় স্মরণ রাখে। খুব ভালোভাবেই স্মরণ রাখে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের নয় মাসে আমাদের মারা গেছে কয়েক লাখ লোক। সরাসরি যুদ্ধে মারা গেছে লাখখানেক। আর ভারতের মাটিতে আমাদের ক্যাম্পগুলোতে যথাযথ ব্যবস্থাপনা দিতে না পারায় খাদ্য ও পুষ্টিহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে অন্তত ছয় লাখ বাংলাদেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত ভারত সেই তালিকাটা আমাদের হস্তান্তর করেনি। এ তালিকা হস্তান্তর না করার ফলে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা ঝগড়া লেগে আছে।
ঐ সময় যাদের মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার বয়স ছিল, যৌবন ছিল অথচ যুদ্ধে যায়নি সেই মুনতাসির মামুনের কথা বলছি, তিনিসহ তার পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধে যায়নি। তাারা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার শহীদদের সংখ্যা নিরুপণ করছেন। তারা বলছেন সংখ্যাটা ৩০ লাখের চেয়েও একটু বেশি হবে। আমরা ভারতের মৃতের সংখ্যাটা ভুলে গিয়েছিলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন