মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

নির্বাচনের হাওয়া : রাজনীতি এবং নির্বাচনকালীন সরকারের খবর কি

| প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুনশী আবদুল মাননান
একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের এখনো অনেক দিন বাকী। এর মধ্যেই দেশব্যাপী নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে এবং দিন যত যাচ্ছে নির্বাচনী হাওয়া ততই জোরদার হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো যত দ্রæত সম্ভব সেরে নিচ্ছে। অনেকেরই জানা আছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বছর খানেক আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি ও আগাম প্রচার চালিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশের যেখানেই যে উপলক্ষে ভাষণ বা বক্তৃতা দিয়েছেন সেখানেই অনিবার্যভাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। জনগণের ভোট চাওয়ার পাশাপাশি কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ফের ক্ষমতায় আনতে হবে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতাও প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে ভোট চাইছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনমুখী করার চেষ্টা করছেন। ওবায়দুল কাদের তো একটা থিওরীই উপহার দিয়েছেন। বলেছেন, উন্নয়নের স্বার্থে একটি দলের পরপর চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা উচিৎ। তিনি এখানে উন্নয়ন ও ক্ষমতায় থাকার কথাই বলেছেন। গণতন্ত্রের কথা বলেননি। ক্ষমতায় থাকা না থাকা যে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচন ও গণরায়ের ওপর নির্ভরশীল সে কথা আমলে আনেননি। বুঝাই যায়, বিচার-শালিস যাই হোক, তালগাছটা কিন্তু আমার চাই-ই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রশ্নবিদ্ধ কোনো নির্বাচন দেখতে চান না। তার এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলা যায়, অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়েছে। ওই রকম নির্বাচন হওয়া উচিৎ নয়। তিনি উল্লেখ না করলেও বুঝতে অসুবিধা হয় না, বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের কথাটি মাথায় রেখেই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। সাংবিধানিকভাবে ওই নির্বাচন যত সিদ্ধই হোক না কেন, গণতান্ত্রিক রীতি-প্রথা ও নৈতিক অবস্থান থেকে জানুয়ারির নির্বাচনকে নির্বাচন বলা যায় না। নির্বাচনটি দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর হয়তো উপলদ্ধিতে এসেছে, একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচনই কেবল ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দুর্নাম ঘোচাতে পারে। কিছুদিন আগে তিনি বলেছেন, বিগত নির্বাচনে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন, আগামী নির্বাচনে সে দায়িত্ব নেবেন না। এ কথার প্রকৃতার্থও বুঝা যায়। সম্ভবত তিনি বলতে চেয়েছেন, নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদেরই জিতে আসার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদের জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নেবেন না। গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মÐলীর সকল সদস্য অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতাদের আগামী নির্বাচনে কি কি করণীয়, সে সম্পর্ক বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই সভা থেকে দলের আগামী নির্বাচনের অগ্রযাত্রা শুরু বলে ঘোষণা দেন। বুঝা যায়, আগামীতে দলের তরফে সারাদেশে যত সভা-সমাবেশ ও ও কর্মসূচী পরিচালিত হবে তার প্রধান ইস্যু বা উপলক্ষ্যই হবে নির্বাচন। দলের দিক থেকে সেভাবেই সবকিছু সাজানো-গোছানো হচ্ছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ১০ মে ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেছে। জাতীয় জীবনের এমন কোনো দিক-বিভাগ নেই যা ভিশন ২০৩০-এ নেই। পর্যবেক্ষক মহল একে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক রূপরেখা বা কর্মপরিকল্পনা হিসাবে অভিহিত করেছেন। অনেকের মতে, এটি নির্বাচনী ইশতেহার না হলেও বিএনপি এ ভিশন তৈরি ও উপস্থাপনের সময় নির্বাচনের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখেছে। এর ভিত্তিতে নির্বাচনী ইশতেহার খুব সহজেই তৈরি করা যাবে। সরকারী মহল থেকে ভিশন ২০৩০ সম্পর্কে যত কুতর্কের অবতারনাই করা হোক না কেন, সেটা বিশ্লেষক মহলে কোনো গ্রাহ্যতা পায়নি। ভিশন ২০৩০-এর কোনো গঠনমূলক সমালোচনা সরকারী মহল করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং একে স্বাগত জানিয়েছেন। ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করে বিএনপি দেশী-বিদেশী সব মহলে তার রাজনীতির লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী সম্পর্কে একটি প্রকৃষ্ট ধারণা তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসাবে তার অনিবার্য ভূমিকাকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে স্পষ্টভাবে পেশ করে প্রশংসাভাজন হয়েছে। ভিশন ২০৩০ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিএনপি যে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তাও জানান দিয়েছে। কারণ, ভিশন বাস্তবায়ন করতে হলে ক্ষমতায় যাওয়ার বিকল্প নেই। আর ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি নির্বাচনপন্থী দল বটে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুুতিও তার আছে এবং এ নিয়ে দলটি কাজ করে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ কোনো দলের থাকবে না। এটা ক্ষমতাসীন দল যেমন বোঝে, তেমনি বিএনপিরও না বোঝার কথা নয়। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দলের নীতি-নির্ধারক মহল দলকে সুসংগঠিত করার দিকে অধিক মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দলের মধ্যকার কোন্দল নিরসন ও তৃণমূলে উপযুক্ত নেতৃত্বের বলয় সৃষ্টির জন্য ৫১টি টিম গঠিত হয়েছে, যারা মাঠ পর্যায়ে সভা-সম্মেলন করে দলকে সংহত করতে তৎপর রয়েছে। এই প্রয়াস ও কর্মসূচী সফল হলে, অনেকেই মনে করছেন, নির্বাচনে দলটি একটি লড়াকু দলে পরিণত হবে। দলে নেতাকর্মীর অভাব কিংবা তাদের মধ্যে দ্ব›দ্ব- কোন্দল থাকলেও এটা কারো অজানা নেই, দলটির বিপুল সংখ্যক সমর্থক রয়েছে। সমর্থকদের সংগঠিত করে ভোটের মাঠে নামতে পারলে তার বিজয় প্রায় অবধারিত। তবে শর্ত এই যে, ভোট অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। দলের অভ্যন্তরে দ্ব›দ্ব-কোন্দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেও আছে এবং সবচেয়ে বেশী করে আছে। আওয়ামী লীগ বা বিএনপির এটি একটি বড় সমস্যা। আদর্শ বা আদর্শের বাস্তবায়ন নয়, ক্ষমতার সুখভোগ যখন প্রধান হয়ে ওঠে তখন যে কোনো দল এ সমস্যায় পড়তে বাধ্য।
সরকারের শরীক ও সংসদে গৃহপালিত বিরোধীদল হিসাবে পরিচিত জাতীয় পার্টি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে আরো আগে। জনগণের আস্থাহীনতার ভয়াবহ শিকার দলটি কখন যে কি করে তা অনেক সময় দলের নেতাকর্মীরাই বুঝতে পারেন না। এ কারণে তার সমর্থক সংখ্যাও একটা প্রান্তিক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারের সঙ্গে আছে, আবার বিরোধী দলের তকমাটাও রাখতে চায়, এমন দলের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারাচ্ছন্ন, তা কারো না বোঝার কথা নয়। দলটি সাম্প্রতিককালে বেশ তৎপর বলে মনে হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে দলটি নাম সর্বস্ব ৫৮টি দলের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করেছে যার নাম দিয়েছে সম্মিলিত জাতীয় জোট। জনগণের মধ্যে এর কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, বিএনপি যদি কোনো কারণে নির্বাচনে অংশ না নেয় তবে জাতীয় পার্টি ও তার তথাকথিত জোট বিরোধী জোট হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। নিয়ে নির্বাচনকে অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করবে। আর যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়, তবে দল ও জোটটি ফিরে যাবে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র আওয়ামী লীগের কাছে। হয়তো বা হবে আর একটি মহাজোট। এটা আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির একটি খেলা। এ খেলা দেশের মানুষ আগেও দেখেছে।
যেভাবেই দেখা বা বিচার করা হোক, দেশে নির্বাচনের হাওয়া আগামীতে আরো বাড়বে। এই প্রেক্ষপটে অনেকের মতেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন হতে পারে? আওয়ামী লীগের তরফে অবশ্য আগের মতোই জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আগাম নির্বাচন নয়, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। ওদিকে নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তার খসড়া রোডম্যাপ ঘোষণার মধ্যদিয়ে। সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার পরিকল্পনা ইসি করলেও আগাম নির্বাচনেরও প্রস্তুুতি আছে তার। ইসির একটি সূত্র মতে, ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় থাকলেও ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনটি করতে চায় ইসি। ইসির রোডম্যাপে সাতটি বিষয় রয়েছে। আওয়ামী লীগ এ রোডম্যাপকে ইতিবাচক বলেছে। বিএনপি নেতিবাচক কোনো মন্তব্যে বা বক্তব্য প্রদান করেনি। রোডম্যাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ। চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই সংলাপ হওয়ায় কথা। বলা বাহুল্য, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য স্টেকহোন্ডারদের সঙ্গে সংলাপ, মতবিনিময় ও সমঝোতা অপরিহার্য। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোই প্রধান স্টেকহোন্ডার। তাদের সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা উৎসাহজনক। তবে নাম ওয়াস্তে সংলাপ সুফল দেবে না। নির্বাচন কমিশন কোনো কারণে তার নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে গেলে সংলাপ নিস্ফল ও অপকার্যকর পদক্ষেপ হিসাবেই সাব্যস্ত হবে।
গণতন্ত্রে উন্মুক্ত রাজনীতি এবং রাজনীতির দায়িত্বশীল ও অবাধ চর্চা অপরিহার্য পূর্বশর্ত হিসাবে বিবেচিত। প্রশ্ন উঠতে পারে, দেশের রাজনীতিতে কি এই অবস্থাটি বিরাজ করছে? এক কথায় এর উত্তর হতে পারে, করছে না। এখনো বিএনপি বা সরকারের না পছন্দ রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ, এমনকি মানববন্ধন করারও কোনো সুযোগ বা অধিকার নেই। ক’দিন আগে কোনো কথা নেই-বার্তা নেই হঠাৎ বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যলয়ে পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়। তথাকথিত জিডি কিংবা উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে, যার ভিত্তিতেই ওই অভিযান চালানো হোক না কেন, এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হিসাবেই উল্লেখিত হবে। ওই কার্যালয়ে পুলিশ আপত্তিকর কিছুই পায়নি। শূন্য ফলাফলের এ অভিযান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই পরিচিহ্নিত হয়েছে। সঙ্গতকারণেই বিএনপি এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছে, তাৎক্ষনিকভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশ বাধা প্রদান এবং কোনো কোনো স্থানে শক্তিপ্রয়োগ করেছে। বিএনপি একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। সে অনুমতি দেয়া হয়নি। বিএনপি সমাবেশ করতে পারেনি। কোনো রাজনৈতিক দল যদি তার প্রতিক্রিয়া জানাতে, প্রতিবাদ করতে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে না পারে তবে গণতন্ত্র সচল আছে, রাজনীতির নির্বাধ চর্চা আছে, এ দাবী করা যায় না। দেশ কার্যত, গণতন্ত্রহীন, রাজনীতিহীন অবস্থায় রয়েছে এবং এ অবস্থা অনেকদিন ধরে কার্যকর আছে। নির্বাচনের হাওয়া যতই বয়ে যাক, যতই তা প্রবল হয়ে উঠুক, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যদি কথা বলতে না পারে, প্রতিবাদ করতে না পারে, সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচী পালন করতে না পারে, তবে তা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ ও সুফল বয়ে আনবে না। একটি অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি কাম্য হয় তবে রাজনীতিকে উম্মুক্ত বা বাধামুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনের বিষয়ে আরও একটি বড় প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্নটি নতুন নয়। আমাদের রাজনৈতিক কালচার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের মধ্যে বিদ্যামান সংশয়-সন্দেহ ও আস্থাহীনতার প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালে কোন সরকার ক্ষমতা থাকবে, সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রমাণ রয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। সংবিধানে এ কারণেই তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছিল। সেটা এখন নেই। এখন সংবিধান মতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বিএনপি এটা অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করেই গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন: প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছিল। সরকার সে দাবী না মানায় বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এবার বিএনপি তত্ত¡াবধায়ক সরকার নয়, নির্বাচনকালীন একটি সহায়ক সরকারের দাবি তুলেছে। কিছুদিনের মধ্যেই দলের তরফে সেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে। বিএনপির এ দাবি আগের মতোই সরকার গ্রাহ্যে নিচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা, সংবিধানে সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। সুতরাং সংবিধান মতেই বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে এই বিষয়টির ফয়সালা হতে হবে। তার জন্য সরকার বা সরকারী দল ও বিএনরির মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা জরুরি বলেই পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। সেই সংলাপÑসমঝোতা কি হবে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন