মো. আলা উদ্দিন
রোজা কলস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কলস্টেরল মানব শরীরের একটি প্রয়োজনীয় লিপিড। এটি দেহ কোষের পাতলা আবরণ গঠন ও হজমের পিত্তরসে ব্যবহৃত হয়। এটি ¯œায়ু কোষকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে উচ্চ রক্ত চাপ ও হৃদ রোগ প্রভৃতি সৃষ্টি হয়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, কলস্টেরলের মাত্রা সীমিত রাখতে, সেটা করতে রোজা ও রোজার মাসে পরিমিত খাদ্যগ্রহণ যথেষ্ট সহায়ক।
ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে: রোজা মানুষকে ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহয্য করে। মানব দেহের অগ্নাশয়ে উৎপন্ন ইনসুলিন নামক হরমোন রক্তে মিশে রক্তের শর্করাকে জীবকোষে প্রবেশ ও কার্যকর করতে সাহয্য করে। ইনসুলিনের অভাব হলে শরীরে শর্করা কাজে লাগতে পারে না। ফলে ডায়াবেটিস রোগী দুর্বল ও ক্লান্ত হয় এবং বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। বিজ্ঞান বলছে, রমজানের এক মাস সিয়াম পালনে এবং অন্যান্য রোজা ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ।
ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান হ্রাস করে: মানুষের শরীরে ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদানের জন্ম হয়। যার অধিকাংশ খাদ্য ও পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। বিশেষত যন্ত্র চালিত যানবাহনের কারণে পরিবেশ দূষিত হয়। ফলে মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। যেমন ক্যান্সার, বøাড-প্রেসার, ফুসফুস, হার্ট ও ব্রেনটিউমার ইত্যাদি। চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ স্বীকার করেছেন, সিয়াম সাধনা শরীর ও মন উভয়ের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
উচ্চ রক্তচাপজনিত ব্যাধি সমূহ দূর করে: খাদ্যের বিষাক্ত অংশ শরীরে মধ্যে জমা হয়ে মানুষকে ধীরে ধীরে রোগী বানিয়ে দেয় এবং তার ওজন বাড়িয়ে দেয়। ফলে তার কাজের আগ্রহ, উদ্দিপনা লোপ পায়। এতে মানুষটি যদি রোজা রাখে তাহলে এ সমস্ত বিষাক্ত উপাদান থেকে মুক্ত হয়ে সে শক্তি ও উদ্দিপনা অনুভব করে। বিজ্ঞানীদের মতে, রোজা সমস্ত রক্ত প্রবাহকে পরিশোধন করে এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত ব্যাধিসমূহ দূর করতে সাহয্য করে।
রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ডা: জুয়েল, ডা: এলেক্স হিউ প্রমূখ প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী স্বীকার করেন যে, রোজা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে দেহেরে জীবানুবর্ধক অস্ত্রগুলো ধ্বংস হয়, ইউরিক এসিড বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। রোজা চর্মরোগ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চরক্ত চাপ, গ্যাস্ট্রিক, আলসার ইত্যাদির জন্য অত্যন্ত উপকারি হিসেবে বিবেচিত। মেদ ও কলস্টেরল কমানোয় রোজার কোন জুড়ি নেই।
লেখক : উপাধ্যক্ষ, খোয়াজের ভিটি ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা
চাটখিল, নোয়াখালী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন