স্টাফ রিপোর্টার : মন্ত্রিত্ব ফিরে পেতেই হাছান মাহমুদ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ প্রতিনিধি দলের উপর হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ মন্ত্রিত্ব হারানোর পর তা ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এজন্য তিনি বিএনপি প্রতিনিধি দলের উপর হামলা চালিয়েছেন। গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রামের রাঙগুনিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলটির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের উপর হামলার প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)। হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, হাছান মাহমুদ কি হরিদাশ পাল, যে তিনি এই ঘটনাটি ঘটালেন! নিশ্চয় এর পেছনে আরও বড় জায়গা থেকে ইঙ্গিত ছিল। এই ইঙ্গিতটা কেন? বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের মহাসচিবের উপর যদি এভাবে একটি ঘটনা ঘটানো যায়, তাহলে ১৬৮ জন লোক যে নিহত হলো সেটাকে আড়াল করা যায়। নাকি ৫০০ জনের উপর গুম, ১২শ’ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত এটিকে আড়াল করা? হাছান মহমুদকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন কি না এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
রিজভী বলেন, দুইজন পথচারী আঘাত পেয়েছে এরপর জনতা তাদের উপর হামলা করেছে এই কথা পুলিশ বা প্রশাসন কেউ বলেনি অথচ তিনি (হাছান মাহমুদ) সাজিয়ে এই কথাটি বললেন। অতএব এটা (মির্জা ফখরুলদের উপর হামলা) পূর্বপরিকল্পিত, এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইঙ্গিত পাওয়া একটি বিষয়। কারণ তার (হাছান মাহমুদ) মন্ত্রিত্ব নেই, মন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়ার জন্যই এই কাজটা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ করতে হবে, উনারা একটার পর একটা অপকর্ম, অনাচার করবেন আর উটপাখির মতো জনগণ বালির মধ্যে মাথা গুজে বসে আছে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। আইনের আওতায় তাদের বিচার হবে প্রতিটি অনাচার ও উৎপীড়নের।
বাজেটের বিষয়ে রিজভী বলেন, বাজেট নিয়ে জন অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় সরকার প্রধানকে ‘বাঁচাতে’ অর্থমন্ত্রীকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হচ্ছে। ভ্যাট এবং ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা যেমন বাক আক্রমণে বিদ্ধ করছেন মুহিতকে; তেমনি তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন জাতীয় পার্টির সদস্যরা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পার্লামেন্টে সরকারি দল অর্থমন্ত্রীকে ধুইয়ে দিচ্ছে, তিনি নাকি অযোগ্য, মানসিক ভারসাম্যহীন, তিনি সরকারকে ডুবাচ্ছেন। আরে ভাই, বাজেট পাস হয় কেবিনেটে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে। সবই তো প্রধানমন্ত্রী ও সরকার জানে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে স্কেপ করার জন্যেই আজকে পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও তাদের বি টিমকে দিয়ে এসমস্ত কথা বলানো হচ্ছে। আমরা মনে করি, সব কিছু হচ্ছে একটা জায়গা থেকে। শুধু বিভ্রান্তি তৈরি কর, ব্যর্থতাকে আড়াল কর। এই আড়ালের জন্য একটার পর একটার ঘটনা। এই আড়ালের জন্য একটার পর একটা ঘটনা। সেই ঘটনারই একটা অংশ হচ্ছে বিএনপির মহাসচিবের উপর হামলা। এটা ন্যাক্কারজনক, এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
ওই হামলা নিয়ে পুলিশের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওসি বলেছেন, যে রুট দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটা পরিবর্তন করা হয়েছে। অদ্ভুত ব্যাপার! যে রুট দিয়ে গেছেন সেটা কী বেলুচিস্তান না রাজস্থান যে ওই রাস্তাটি পুলিশ প্রশাসনের বাইরে ছিল। এই প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, আমরা তো বলিনি ঠাকুর ঘরে কে? প্রশ্ন না করতেই আমি কলা খাইনি বলে দিলেন হাছান মাহমুদ। দুইজন পথচারীকে আঘাত করেছে, তাই এই ঘটনা ঘটেছে’- এটা পুলিশ প্রশাসন বলেনি, কেউ বলেনি। হাছান মাহমুদ সাজিয়ে বলে দিলেন। প্রধানমন্ত্রী না জানলে হাছান মাহমুদের মতো একটা লোক এই ঘটনা ঘটাতে পারে, তার এত সাহস হতে পারে, আমার মনে হয় না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ (বন্ধ) পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মাদ আবদুল কুদ্দুস, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফের এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বিশিষ্ট কবি আব্দুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন