সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রেফারির ভুলে জয়বঞ্চিত বার্সা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াই। স্পেনের গণমাধ্যম এজন্য ম্যাচটাকে আখ্যায়িত করেন ‘ছয় পয়েন্টের ম্যাচ’ হিসেবে। বার্সেলোনা জিতলেই এগিয়ে যাবে ৬ পয়েন্টে, হারলে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে ব্যবধান কমে দাঁড়াবে ১। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লিওনেল মেসির একটি স্পষ্ট গোল দেননি রেফারি। ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ম্যাচটিও ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।
ম্যাচের বয়স তখন ৩০ মিনিট। ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণে ত্রাস ছড়াচ্ছেন মেসি-ইনিয়েস্তা-সুয়ারেজরা। কিন্তু কোনভাবেই প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারছেন না। এমন সময় দুর থেকে আচমকা শট নেন মেসি। অপ্রস্তুত গোলরক্ষক নেতোর গøাভস ও দুই পায়ের ফাঁক গলে বল বেরিয়ে যায়। ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে লাফিয়ে বল ক্লিয়ান করেন ডান হাতের থাবায়। কিন্তু বল ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে গোল লাইন। মেসিরাও শুরু করেন উযাপন। কিন্তু ডি বক্সের কাছেই থাকা রেফারি ও লাইন্সম্যান কারোর চোখেই এটি গোল বলে মনে হয়নি। উল্টো খেলা চালিয়ে যেতে বলেন মাঠের রেফারি। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদে ফসতে থাকা বার্সার বেশ কিছু খেলোয়াড় এগিয়ে আসেন রেফারির দিকে। এই তালিকায় ছিলেন মেসিও। ওদিকে ভ্যালেন্সিয়া যে পাল্টা আক্রমণে সেদিকে তাদের খেয়ালই নেই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সে যাত্রায় বেঁচে যায় কাতালানরা। দুর্ভাগ্য মেসিরও । চার ম্যাচ পর গোলের দেখা পেয়েও পেলেন না। সব প্রতিযোগিতা মিলে টানা পাঁচ ম্যাচ গোল পাননি আর্জেন্টাইন তারকা। সর্বশেষ ২০১০ সালে টানা ছয় ম্যাচ গোলবঞ্চিত ছিলেন ৫ বারের বিশ্বসেরা।
রেফারির ভুলের এই রেশ পুরো ম্যাচেই কাটিয়ে উঠতে পারেনি আর্নেস্তো ভালভার্দের দল। সেই সুযোগে দ্বিতীয়ার্ধে ভয়ঙ্কর রুপে ফেরে ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের গোল অভিমুখে একটি শটও নেয়ার সুযোগ পায়নি যে দল সেই দলই গোলের দেখা পেয়ে যায় ৬০তম মিনিটে। স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়ে গোল করেন রড্রিগো। এতে অবশ্য ইভান রাকিটিচ ও ভারমেলনের ভুলও কম নয়।
নির্ধারিত সময়ের ৮ মিনিট আগে মেসির অসাধারন ভাসমান পাসে আরো অসাধারণ ভলিতে এক পয়েন্ট রক্ষা করেন ভ্যালেন্সিয়ারই সাবেক খেলোয়াড় জর্ডি আলবা। পরবর্তি সময়টুকু ম্যাচ ডুবে থাকে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের উত্তাপে। কিন্তু জালের দেখা আর মেলেনি। ফলে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে বার্সার ব্যবধান চার-ই রয়ে গেল বটে, কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা মাদ্রিদের দুই দলের সঙ্গে শীর্ষ স্থানধারীদের ব্যবধান কমে এসেছে আটে।
রেফারির এমন অন্যায্য বিচার যে ম্যাচ জুড়েই বার্সাকে ভুগিয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া গেল শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে। এসময় রেফারির সঙ্গে বাকবিতন্ডে জড়িয়ে পড়েন মেসি-ইনিয়েস্তারা। এজন্য না আবার মেসিকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয়। এমনিতেই শান্ত স্বভাবের মেসি মুখ বুজে অনেক কিছুই সয়ে নেন। কিন্তু যখন রেগে যান তখন তাকে সামলানো দ্বায় হয়ে পড়ে। গেল জানুয়ারীতেও রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে এমন ঘটনার বলি হয়েছিল বার্সা। এমন পরিস্থিতিতে তো যে কারোরই মেজাজ ঠিক রাথা দ্বায়।
ভালভার্দেও বলেন, ‘প্রথমার্ধ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আমাদের একটি গোল বাতিল করা হয়। যা পরবর্তিতে আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। এটা সহকারি রেফারির ভুল সিদ্ধান্তু ছিল।’ এটাকে ‘জঘন্ন’ আখ্যায়িত করে আলবা বলেন, ‘সবাই বাতিল করা গোলটি দেখেছি। এর আগে বেটিসের বিপক্ষেও এমনটা ঘটেছে। বাতিল করা গোলটি ছিল পরিষ্কার। ভিডিও প্রযুক্তি প্রয়োজন।’
সাবেক বার্সা স্ট্রাইকার ও ইংলিশ ফুটবল গ্রে লিনেকার লা লিগায় গোল লাইন প্রযুক্তি না থাকার সমালোচনা করে বলেন, ‘লা লিগায় গোললাইন প্রযুক্তি না থাকাটা পাগলামো। আশা করি মেসির স্পষ্ট গোলটা বাতিল করার পর তারা বিষয়টা নিয়ে আবার আলোচনা করবে।’ বিশিষ্ঠ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যান্ডি ওয়েস্ট বলেন, ‘বুঝিনা কেন মানুষ ভিডিও রেফারির বিপক্ষে কথা বলে। এমন ঘটনা ঘটার পরও আপনি কেন ভুল শুধরাতে চাইবেন না?’
একনজরে ফল
ভ্যালেন্সিয়া ১ : ১ বার্সেলোনা
দিপোর্তিভো ২ : ২ অ্যাথ. বিলবাও
সোসিয়াদাদ ২ : ২ লাস পালমাস
ভিয়ারিয়াল ২ : ৩ সেভিয়া

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন