শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রাজশাহীর উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে -মেয়র বুলবুল

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ‘রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজের জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের সাথে চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকালে নগর ভবন সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচিতি সম্পর্কিত বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ও রাসিকের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার, প্রকল্প সম্পর্কে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ৩০টি ওয়ার্ডের চিত্র উপস্থাপন করেন রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজনীতিতে ভীন্নমত থাকলেও রাজশাহীর উন্নয়নে আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি, আগামীতেও করব। সকল প্রকার রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে রাজশাহীর উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়াও তিনি রাজশাহীর উন্নয়নে একনেকে তদবির করবেন। রাজশাহীতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জন্য প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প পাস হলে গোদাগাড়িতে প্ল্যান্ট স্থাপন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে পদ্মা নদী থেকে পানি নিয়ে এসে রাজশাহীর সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য এলাকায় পানি সরবরাহ করা হবে। ভ‚গর্ভ থেকে কোনো পানি উত্তোলন করা হবে না বলে তিনি জানান। এ ছাড়াও মানুষের হার্টের সমস্যা দূর করার জন্য রাজশাহীতে আধুনিক হার্ট ফাউন্ডেশন স্থাপন করা হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ বলে তিনি জানান। সেই সাথে রাজাশাহীকে আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের সিটির ন্যায় সুন্দর করে গড়ে তুলতে মেয়রকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সকল প্রকার কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, নগরীর উন্নয়নের বিষয়ে এক থাকতে হবে। আরডিএ’র পরিকল্পনা অনুযায়ী সিটিকে সাজাতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামীতে আরো সাত থেকে আটটি ৬০ থেকে ৮০ ফিট প্রসস্থ মাস্টার রোড নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ রাজশাহীকে পরিকল্পিত নগরী করতে আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মজবুত ও টেকসই অবকাঠামো এবং রাস্তাঘাট নির্মাণে কঠোর নীতি অবলম্বন করছেন বলে উল্লেখ করে তিনি। মেয়র আরো বলেন, লয়েস্ট সিডিউল কোনো মূখ্য বিষয় নয়; অভিজ্ঞ ও নামকরা ঠিকাদারকে দিয়ে মানসম্মত কাজ করাবেন বলে মেয়র দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকরা হচ্ছেন জাতীর বিবেক। তাদের মতামত এবং খবর প্রকাশের উপর দেশের ভালোমন্দ অনেক বিষয় নির্ভর করে। সেই জন্য পত্রিকায় খবর প্রকাশ করার সময় সব কিছু জেনে বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান তিনি। বিন্দুর মোড় থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণের জন্য ১৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের এবং ১৯টি পুকুর সংস্কার করার জন্য প্রধান অতিথিকে তদবির করা জন্য অনুরোধ করেন মেয়র। এ ছাড়াও খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত মাঠ স্থাপন করা এবং সংস্কারকৃত পুকুরগুলোতে দেশি মাছ ছাড়া হবে বলে তিনি জানান। সিটি করপোরেশন এলাকার জনগণের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখতে পুরো শহরকে জিরো সয়েলের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সবুজে মোড়ানো হবে গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি ও এডুকেশন সিটি খ্যাত এই রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে। ইতোমধ্যে এর কাজ শুরু হয়েছে। সেইসাথে আধুনিক ফুটপাথ নির্মাণ, সাইকেল লেন নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে এবং বিউটি ফিকেশন প্রকল্পের আওতায় রাতের অন্ধকারকে দিনের আলোয় পরিণত করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড় এলাকায় এলইডি বাল্ব স্থাপন অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। রাজশাহীতে খেলাধুলার মান উন্নয়ন ও বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করার জন্য প্রধান অতিথিকে সংসদে কথা বলার আহ্বান জানান মেয়র। সেইসাথে প্রায় ৬০ কোটি টাকার প্রকল্প দু’টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের সাথে চুক্তি সম্পাদন হয়।
উল্লেখ্য, প্রথম প্যাকেজে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডসহ মোট ১৬টি ওয়ার্ডে ৮৫টি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। যথাক্রমে- নিউ রোড ১৪.১৭২ কিলোমিটার, ওভারলে রোড ১১.০৭ কিলোমিটার, ওয়াইডনিং রোড ২.৭০৭৯ কিলোমিটার এবং আরসিসি ড্রেন ১০.৮১৫৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় প্যাকেজে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডসহ মোট ১৪টি ওয়ার্ডে ১০৬টি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। যথাক্রমে- নিউ রোড ১৪.১৭৩ কিলোমিটার, ওভারলে রোড ৭.৭০৬ কিলোমিটার, ওয়াইডনিং রোড ৪.২৭৩ কিলোমিটার এবং আরসিসি ড্রেন ১০.৫৮০ কিলোমিটার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ, রাসিকের কাউন্সিলর মো. বেলাল আহম্মেদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মোমিন, মীর আখতার লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ রাশেদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে প্যানেল মেয়র-১ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আনোয়ারুল আমিন আযব, প্যানেল মেয়র-২ ও কাউন্সিলর মো. নূরুজ্জামান টিটো ও প্যানেল মেয়র-৩ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর মোসা. নূরুন্নাহার বেগমসহ সকল কাউন্সিলর এবং রাসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন