সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নতুন চেয়ারম্যান ও সচিবের হস্তক্ষেপে শৃংখলা ফিরলেও কমেনি দুর্নীতি

দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড

মাহফুজুল হক আনার দিনাজপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুরে নতুন চেয়ারম্যান ও সচিব যোগদানের পর অফিসের শৃংখলা ফিরলেও দুর্নীতি কমেনি। ইতিপূর্বে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবসহ পেষনে থাকা কর্মকর্তাদের ইন্ধনে হাতে গোনা চার থেকে পাঁচ জন কর্মকর্তা কর্মচারী’র লাগামহীন দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকেরা। প্রকাশ্যে টাকা লেন-দেনসহ শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে দুর্নীতি’র বিষয়টি বোর্ডের নীতিবান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে। কিন্তু গাছের গোড়া পচা হলে ডাল-পালাতেও পচন ধরবে এটাই স্বাভাবিক। যা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ঘটে চলেছে। দেখতে দেখতে শুন্য পকেটের এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন কোটিপতিতে পরিণত হয়েছে। বোর্ডের দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়সহ উচ্চ পর্যায়ে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে বলে অতিষ্ঠ সেবাগ্রহনকারীরা ইনকিলাব প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। ওপেন সিক্রেট দুর্নীতি বদৌলতে হাতে গোনা কর্মকর্তাদের দিনাজপুর শহর ও গ্রামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রয়ের বিষয়টি সকলেরই জানা। কিন্তু শায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতি ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। দেশে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে লাখ লাখ শিক্ষক ও অভিভাবক।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সাম্প্রতিককালে বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে ড. আবু বকর সিদ্দিক ও সচিব হিসাবে আমিনুল ইসলাম যোগদান করার পর-পরই বোর্ডে বিশৃংখল অবস্থার উন্নতিকল্পে কাজ শুরু করেন। নিজে মিষ্টি খাওয়ার পর অপরকে খাওয়ার অনুমতি দেয়ার প্রবাদের মতই নিদিষ্ট সময়ে অফিসে উপস্থিত হয়ে অন্যান্যদের সঠিক সময়ে অফিস করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর ফলে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসাব শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সেবা নিতে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এর পর অসমাপ্ত থাকলেও দিনাজপুর শহরের উত্তর উপকন্ঠে নির্মিত নিজস্ব ভবনে বোর্ডের কার্যক্রম শুরু করেন। এতে বোর্ডের প্রতিমাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়। বিশাল পরিসরে নিজস্ব অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশাপাশি সেবাগ্রহনকারীকারীদেরও নাজেহাল হতে হচ্ছে না। কারন ইতিপূর্বে শহরের বালুবাড়ী ও উপশহরে দু’জায়গায় দৌড়ঝাপ করতে হতো সকল পক্ষকেই। কিন্তু লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে শৃংখলা ফিরলেও দুর্নীতি কমেনি। রেজিষ্ট্রেশন, পাবলিক পরীক্ষার ফরম ফিলাপ, কমিটি গঠন, নাম পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কাজের জন্য নগদ অর্থ গুনতে হচ্ছে। টাকা না দিলে কাজ হয় না। সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি হচ্ছে বিদ্যালয় শাখায়। বিদ্যালয় শাখায় অবস্থান করলেই অর্থ লেনদেনের বিষগুলি চোখে পড়বে। ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রমে দুর্নীতি বিষয়টি পানির মত পরিস্কার। ইতিপূর্বে বোর্ড এর চেয়ারম্যান ও সচিবের সরাসরি হস্তক্ষেপেই দুর্নীতি কার্যক্রম চলে এসেছে। তত্বাবধানকারী বোর্ডের সদ্য প্রমোশনপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা’র সরাসরি মন্তব্য উপর থেকে যা বলে আমরা তাই করি। গত তিন বছরে ক্রয় সংক্রান্ত খাতে প্রায় অন্তত ১০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বিষয়টি এমন যে, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড যেন টাকা বানানোর প্রতিষ্ঠান। তদন্ত হলে অথবা সম্মতির হিসাব নিলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা মত প্রকাশ করেছেন। অবশ্য দুর্নীতি বিষয়গুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ কাজ শুরু করেছে বলে নাম না প্রকাশ শর্তে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছে। বিগত দুই বছরে বোর্ডের সর্বোচ্চ দুর্নীতি হয়েছে পরীক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ ক্রয়ে সাবেক চেয়ারম্যানের সময়ে। যা আগামী এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দায়িত্বশীল মহল থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান, সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সকলেই জানিয়েছেন। বোর্ডে দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুর্নীতি সাথে যেই জড়িত হোক বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন