শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি

পারকি সমুদ্রসৈকত

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে জাহেদুল হক | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও সেভাবে সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। সৈকত উনড়বয়নের জন্য সরকার নানা পরিকল্পনা নিলেও সেসব এখনো আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমানে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি হোটেল-রিসোর্ট পর্যটকদের খাওয়া ও বিনোদনের চাহিদা মেটাচ্ছে। তবে রাতযাপনের ব্যবস্থা না থাকায় ঝাউবন বেষ্টিত এই সৈকতে দিনে এসে দিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে পর্যটকদের। এতে পারকি সৈকতের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,১৯৮১ সালে উপক‚লীয় বন বিভাগ পারকি সৈকতে ঝাউবাগান সৃজন করে। ধীরে ধীরে ঝাউবীথি বড় হয়ে উঠলে সৈকতটি পর্যটক আকর্ষণ করতে থাকে। এভাবে পারকি সৈকত ধীরে ধীরে পরিচিতি লাভ করে। অবশ্য দেশের অনেক পর্যটকের কাছেই পারকি এখনো অজানা-অচেনা। বঙ্গোপসাগরের ফেনীল ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্য দেখার পাশাপাশি সাগরের বুকে বহির্নোঙ্গরে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজবহর। সূর্যোস্তের পর সাগরের বুকে ঝলমলে আলো মেলার এক অপরূপ দৃশ্য। নদীর মোহনায় হরেক রকম নৌযানের অবিরাম ছোটাছুটি। মাঝি-মাল্লাদের ‘বদর বদর হেঁইও’ কলরবে মাছ শিকার। সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের আগায় রঙ-বেরঙের কাঁকড়ার জলকেলি। সবুজ বন, সাগরের নির্মল বাতাস,অতিথি পাখির কলকাকলীর অপরূপ দৃশ্য প্রকৃতি প্রেমীদের মুগ্ধ করে।
পারকি সৈকতের সমস্যারাজির মধ্যে রয়েছে হোটেল-মোটেল,রিসোর্টসহ অবকাঠামো সুবিধা ও পর্যটকদের জন্য অপরিহার্য নিরাপত্তার অভাব। সৈকতে নেই পর্যাপ্ত গণশৌচাগার। রোদ-বৃষ্টি কিংবা ঝড়ে সুরক্ষার জন্য নেই ছাউনি। এতে করে পর্যটকদের বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়। সৈকতের ব্যবসায়ীরা জানান,শনি থেকে বুধবার দেড় থেকে দুই হাজার পর্যটক থাকেন পারকি সৈকতে। তবে বৃহস্পতি ও শুμবার গড়ে আট থেকে দশ হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন এখানে। এত বিপুলসংখ্যক পর্যটকের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় কেবল একটি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতে পর্যটকে গিজগিজ করছে। এদের কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে আবার অনেকে এসেছেন বিভিনড়ব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ব্যানারে। বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা একটি রিসোর্ট ছাড়া পারকি সৈকতে ভালো মানের কোনো হোটেল-রেঁস্তোরা নেই। ছোটখাটো অর্ধশত ভাসমান খাবার ও কোমল পানীয়ের দোকান এখানকার পর্যটকদের চাহিদা মেটাচ্ছে। ফটিকছড়ি থেকে বেড়াতে আসা প্রবাসী আরেফিন সিদ্দিক বলেন,পারকি সৈকতে উনড়বত মানের হোটেল বা কটেজ না থাকায় পর্যটকদের ভোগান্তি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ জানান, ১৩ দশমিক ২৬ একর জায়গায় পর্যটন কর্পোরেশন রিসোর্ট করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে পারকি সৈকতের চেহারা পাল্টে যাবে। জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গৌতম বাড়ৈ বলেন,পারকি সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে এই সৈকতের জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে।
আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন,পারকি সৈকতের উনড়বয়নের জন্য ইতোমধ্যে একনেকে একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশি-বিদেশি পর্যটক বাড়বে। বাণিজ্যিক রাজধানীর সনিড়বকট দক্ষিণে সাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা পারকি সৈকতের সৌন্দর্য দেখতে এ মৌসুমে দেড় লাখেরও বেশি পর্যটক এসেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন