শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি, জমাভাগ, খাজনা আদায়, জমির ফর্সা তুলা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজে সরকারী নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিক ভাবে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। চুক্তির টাকা ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। টাকা না দিলে নির্ধারিত সময়ে কোন কাজ আদায় য়ায় না। বছরের পর বছর এসব কাজ ফাইলবন্দি থাকে। ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অগোচরে মাঠ পর্যায়ের পদুয়া ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে জমির কাজে আসা ভুক্তভোগীরা দাবী করেছেন।
পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আসা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, তহসীলদার চট্টগ্রাম থেকে পদুয়া অফিস করেন। অনেক সময় তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার সুবাদে অফিস সহায়ক মোহাম্মদ ফারুক ভূমি কাজে আসা গ্রাহকদের কাজ সম্পাদন বিষয়ে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেন। সেবা প্রাপ্তি ৮০ শতাংশ লোকই চরম হয়রানির শিকার হতে হয় আজ না-কাল সময়ক্ষেপন করে। সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত হারে দাবীকৃত উৎকোচ না দিলে সেবা গ্রহীতারা পান না তাদের কাঙ্খিত সেবা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের শিলক খালের বালু মহাল নির্ধারিত এলাকা ব্যতিত অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বালু দস্যুদের অবৈধ সুযোগ করে দেয়ায় বছরে সরকার এ খাত থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে শিলক খালের বিভিন্ন স্থান ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।
পদুয়া গ্রামের জমির কাজে আসা মোহাম্মদ করিম জানান, ভগ্নিপতি বিদেশে থাকায় বোনের একটি জমি নামজারী বিষয়ে এসেছি। দীর্ঘদিন হয়ে গেলো নামজারী ও জমা ভাগের একটি আবেদন দেয়া হয়। সরকারি ফি ও অফিস কর্তা ব্যক্তিদের দাবিমত অতিরিক্ত টাকাও জমা দেয়া হয়েছে। এ যাবত একাধিকবার ফেরত গেছি কিন্তু কাজটি হয়নি বলে বার বার ঘুরাচ্ছেন ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দূর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোন নামজারি হয় না। নামজারির জন্য ১০ হাজার থেকে মোটা অংক আদায় করা হয় উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেয়ার কথা বলে।
পদুয়া ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, অফিস খরচের জন্য ভূমির কাজে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে সামান্য কিছু অর্থ নেয়া হয়। ভূমি কর্মকর্তাদের খুশি না করলে কাজের ফাইল আটকে থাকবে। বাড়তি কিছু অর্থ নিলে দোষের কিছুই নেই। বাড়তি অর্থ নেয়ার বিষয়টি সবাই জানে। এ বিষয়ে অফিস সহায়ক পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি তহসীলদার এর সাথে এ প্রতিবেদককে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান।
একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পদুয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তহসীলদার মো. আব্দুল মালেককে অফিসে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পূর্বিতা চাকমা বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন