শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

জ্ঞানের বাতিঘর সৈয়দপুরের মুর্তজা ইনস্টিটিউট পাঠাগার

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

১৮৭৫ সালে সৈয়দপুরে চালু করা হয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে কারখানা। এর কয়েক বছর পরে ১৮৮২ সালে সৈয়দপুরের সাহেব পাড়ায় রেলওয়ের ব্রিটিস কর্মকতাদের বিনোদন কেন্দ্র মুর্তজা ইন্সটিটিউট। সেবছরেই সেখানে গড়ে তোলা হয় একটি পাঠাগার। ১৯৪৭ সালের আগে এই বিনোদন কেন্দ্র এবং পাঠাগারে প্রবেশের সুযোগ ছিলো না কোন বাঙ্গালীর। এখানে নিদ্রিষ্ট সংখ্যক রেলওয়ের ইংরেজ কর্মকতা এবং তাদের স্ত্রীদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। সেসময় বড় লাটদের পছন্দের মধ্যে একটি ছিল বই পড়া। তার বিভিন্ন বিষয়ের অনেক বই সেসময় সংগ্রহ করেছিলেন। এই সংখ্যা নেহায়েত কম নয় কয়েক হাজার। ১৯৪৫ সালের বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযদ্ধের সময় অনেক বই নষ্ট হয়। এছাড়াও বইগুরোর বয়স অনেক বছর হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান বইপুস্তক।
পাঠাগার সূত্রে জানা যায়, কয়েক ক্যাটাগরিতে বই সংরক্ষন করা হতো। এর মধ্যে রয়েছে, উপন্যাস, ছোট গল্প, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম, ধমীয় ও বিবিধ বই, ভ্রমন কাহিনী, উর্দ্দু, ইংরেজি, নাটক, কবিতা, জীবনী ও প্রবন্ধ। পাঠাগারের রেজিস্টার ঘেটে পাওয়া যায়, উপন্যাশ রয়েছে ১২৩৯ টি, ছোট গল্প ৯৫৩টি, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম ৫৮৬টি, ধনীয় ও বিবিধ বই ১৮১টি, ভ্রমন কাহিনী ২৯০টি, ইংরেজী ১১২১টি, উর্দ্দু ৩৯৪টি, নাটক ৮৬৯টি, জীবনী প্রবন্ধ ১০৩টি কবিতা ১৬২টি।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ সমূহ হচ্ছে হিন্দু ধর্মের শ্রী রামকষ্ণ বেদান্তের পরিব্রাজক স্বামী অভেদানন্দ, শ্রী রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ধর্ম্ম, স্বামী বিবেকানন্দের হিন্দু ধর্মের নব জাগরন। ইংরেজির উইলকি কলিনসের আই সে নো, ওলিবার গোল্ড স্মিথের দি পয়েম এন্ড প্লেস, ভিক্টর হুগোর দি ওর্য়াকার অব দ্য সি। উপন্যাশের শ্রী গেন্দ্র নাথ গুপ্তের ব্রজনাথের বিবাহ, দূর্গাদাস লাহিড়ীর লক্ষন সেন, শ্রী রাম কৃষ্ণের কুম্ভের ঝঙকার। জীবনী গ্রন্থ শ্রী তারানাথ রায়ের কামাল পাশা ও নব্য তুর্কি, স্বামী বিবেকানন্দের মদীয় আচার্য দেব, শ্রী শরৎ কুমার রায়ের বুদ্ধের জীবনী ও বানী। উর্দ্দু গ্রন্থ এসকে আকবর আলীর ইকবাল আস কি শাহেরী, আব্দুল মাজেদ কুরাইশির পাকিস্তান, আকবর আহাদী লালা রুকি। নাটক গ্রন্থ বনফুলের বিদ্যা সাগর, নিশি কান্তের ধর্ষিতা, শওকত ওসমানের আমলার মামলা।
মুর্তজা ইন্সটিটিউট এর সাধারন সম্পাদক ও পাঠাগারের তত্বাবধায়ক তহিদুল ইসলাম জানান, আগের মতো পাঠক নেই। গত কয়েক বছওে একজনও বই নিতে আসেনি। আমরা পাঠাগারের বইগুলোকে রক্ষা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে বই গুলো অনেক পুরানো হওয়ায় পাতাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন