ফেনীর মহিপালে আটকে পড়া গাড়ির চাপ আর দুটি সেতুতে টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে টানা তৃতীয় দিনের মত আজও বুধবার যানজটে স্থবির হয়ে আছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। সোমবার রাত থেকে মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার কাঠেরপুল থেকে গোমতী সেতু পার হয়ে মেঘনা সেতুর পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পর্যন্ত আজ বুধবার ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার যাত্রীবাহী গাড়ি, রোগীবাহী অ্যাম্বুল্যান্স, জ্বালানী তেলবাহী গাড়ী, চাল বোঝাই ট্রাক ও বিদেশগামী যাত্রী আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কের মহিপাল অংশে গত দু-তিন দিনে যানজটে আটকা পড়া গাড়িগুলো একসঙ্গে ঢাকা অভিমুখে ছুটে আসছে। কিন্তু গোমতী ও মেঘনা সেতু পারাপারের টোল আদায়ে ধীরগতি এবং সেতু দিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচলের কারণে প্রথমে যানজটের সৃষ্টি হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গোমতী ও মেঘনা সেতুতে মালবোঝাই দুটি ট্রাক বিকল হয়ে পড়লে উভয় দিকে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে যানজট আরো দীর্ঘ হয়। গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ও টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের রেকার দিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় বিকল গাড়ি দুটি সরিয়ে নিলে ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল শুরু করে। কিন্তু যানবাহনগুলো দুটি সেতুর ওপর দিয়ে দুই লেন হয়ে ধীরগতিতে চলাচল করায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে মহাসড়কে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এতে কর্মস্থল অভিমুখী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। অনেককে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়। কুমিল্লাগামী তিসা পরিবহনের যাত্রী আজগর আলী ও জাকির খান জানান, কাঁচপুর সেতু থেকে মেঘনা সেতু পার হতেই তাঁদের পাঁচ ঘণ্টা বাসে বসে থাকতে হয়েছে। নোয়াখালীর যাত্রী সামীমা খান ও জয়া আক্তার জানান, তীব্র যানজট ও গরমে তাঁদের সঙ্গে থাকা বিশেষত শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম পরিবহনের যাত্রী সুমি আক্তার ও নাজমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত পুলিশ মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করার পরও কেন এমন ভয়াবহ যানজট বুঝতে পারছি না। চট্টগ্রামগামী দেশ ট্রাভেলস পরিবহনের বাসচালক হামিদ আলী জানান, কাঁচপুর সেতু থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত আসতে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হচ্ছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম সরদার জানান, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও রাস্তায় সংস্কারকাজ চলায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশের প্রাণান্ত চেষ্টায় দুপুরের দিকে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণে গত রাত থেকে হাইওয়ে পুলিশের সব সদস্য ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছে।
দাউদকান্দি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মহিদুল ইসলাম বলেন, দুই সেতু দিয়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলো পারাপারে ধীরগতিই যানজট সৃষ্টির মূল কারণ। আশা করা হচ্ছে, রাতের মধ্যে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন